একনেকে জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়ক প্রশস্তকরণে ১২৮ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম

আজিজুর রহমান ডল॥
জামালপুর জেলার উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় এবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেকের সভায় জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য ১২৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শেরে বাংলানগরে একনেকের সভার সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

জানা গেছে, জামালপুর জেলার বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর গুরুত্বও বাড়ছে। এ কারণে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের প্রচষ্টায় জামালপুর জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ইতিমধ্যে তিনটি বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো চলমান রয়েছে। এর মধ্যে জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বিগত অর্থবছরে জামালপুর শহরের মির্জা আজম চত্বর থেকে মাদারগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ ২৮ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেন। এই সড়কে তিনটি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ ভেঙ্গে নতুন করে তিনটি সেতু নির্মাণ কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের আওতাধীন এই সড়ক নির্মাণের জন্য ৫৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এই সড়কের পাশেই ভাবকিতে শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মহিরামকুলে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, শিহাটায় ফ্যাশন ডিজাইন ইনস্টিটিউট এবং মাদারগঞ্জে শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপনের কাজও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। একদিকে জেলার সংযোগ সড়ক, অন্যদিকে এসব প্রতিষ্ঠান স্থাপনের কারণে সড়ক প্রশস্তকরণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এর প্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি টাকা।

জামালপুর সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মাইদুল ইসলাম জানান, ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়কটি ছিল ৩.৬ মিটার প্রশস্ত। ১৮ সেপ্টেম্বর একনেকে পাশ হওয়া প্রকল্প অনুযায়ী এখন সড়কটিকে ৭.৫ মিটার প্রশস্ত করা হবে। খুব শিগগির এই কাজ শুরু করা হবে। তিনি আরও জানান, সড়কটি প্রশস্ত করা হলে যাত্রী ও পণ্যবাহী যেকোনো যানবাহন নিরাপদে চলাচল করতে পারবে।

একনেকের সভায় জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য ১২৮ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেছেন, জেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক হিসেবে জামালপুর-মাদারগঞ্জ সড়কটি যেমন অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। পাশাপাশি পাশের বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলা হয়ে যমুনা নদীর নৌপথে এপারে মাদারগঞ্জ উপজেলায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও দৈনন্দিন কাজে হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে মাদারগঞ্জ-সারিয়াকান্দি নৌপথে ফেরিসার্ভিস চালুকরণ এবং পর্যায়ক্রমে যমুনা নদীতে সেতু নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সেই দিক বিবেচনায় এবং এই সড়কের পাশে বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার কারণে সড়কটি একটি ব্যস্ততম সড়কে পরিণত হতে চলেছে। এ কারণে সর্বাগ্রে সড়কটি প্রশস্তকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে। একনেকের সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে নতুন আশা জাগলো। তিনি আরো বলেন, একসময় মাদারগঞ্জের মানুষদের হেঁটে জামালপুরে যাতায়াত করতে হতো। খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হতো। একদিনে কাজ সেরে জামালপুর থেকে ফিরতে পারতো না। বর্তমান সরকারের আমলে মানুষ এই সড়কটির সুফল ভোগ করছে। এর প্রশস্তকরণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আগের চেয়ে অনেক কম সময়ে যাতায়াত করা যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টিতে জামালপুর জেলাকে একটি উন্নত জেলার মর্যাদায় নিয়ে যেতে এই সড়কটিও বেশ ভালো প্রভাব রাখবে।

উল্লেখ্য, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়ে ৬৪টি জেলার মধ্যে ১০টি উন্নত জেলার তালিকায় জামালপুর জেলাকে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সাথে জামালপুর জেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লী, শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শিহাটায় ফ্যাশন ডিজাইন ইনস্টিটিউট, শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপনের কাজও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, দুটি ইপিজেড, তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণ, কামালপুর স্থলবন্দরের আধুনিকায়ন, তিনটি বাইপাস সড়ক নির্মাণ, আটটি পৌরসভার ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নপ্রকল্পসহ সারা জেলায় প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে অনেক প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কোনো কোনো প্রকল্প কাজ চলমান রয়েছে। প্রতিমাসেই যুক্ত হচ্ছে আরও নতুন নতুন উন্নয়ন প্রকল্প।