আলহাজ জুট মিলে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ১৫, সড়ক অবরোধ

টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ। ছবি : মমিনুল ইসলাম কিসমত

মমিনুল ইসলাম কিসমত, সরিষাবাড়ী ॥
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় আলহাজ্ব জুট মিলের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে ১৬ আগস্ট সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তারা সরিষাবাড়ী-জামালপুর-তারাকান্দি মহাসড়কে অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তাদের সাথে শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। পরে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতারা জরুরী সভা করে বকেয়া পরিশোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয় ও ১৯ আগস্ট পর্যন্ত অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।

আলহাজ জুট মিল শ্রমিকরা জানায়, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই প্রায় ৭০ লাখ বকেয়া রেখে গত ২১ জুলাই কর্তৃপক্ষ মিলটি বন্ধ করে দেয়। মিল চালু ও বকেয়া পরিশোধে শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবির প্রতি কর্তৃপক্ষ কোনো সাড়া না দেওয়ায় ১৬ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে মিলের সহস্রাধিক শ্রমিক মিলগেটে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মোড়ে টায়ারে অগ্নিসংযোগ এবং জামালপুর-সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি প্রধান সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত অবরোধ চলাকালে জেলার সাথে একমাত্র যোগাযোগের এ রাস্তায় সব ধরনের যানবাহন ও যমুনা সার কারখানার পরিবহন বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী থানা ও জামালপুরের রিজার্ভ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে। এ সময় পুলিশের সাথে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ বাধে।

গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

জুট মিল সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান অভিযোগ করেন, পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। গুরুতর আহতরা হলেন- সিবিএ’র কোষাধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন, শ্রমিক আবুল, লাইলি, জাহানারা, মালেকা, জরিনা ও শান্তি।

এদিকে থানার ওসি (তদন্ত) মহব্বত কবীর জানান, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ইট-পাটকেলের আঘাতে কনস্টেবল তাসলিমাসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।

আহত এক নারী শ্রমিককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

দুপুর আড়াইটায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের শান্ত করেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মাঠে তারা এক সভা করেন। সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান, সহসভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, আলহাজ জুট মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান প্রমুখ। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, ওসি মাজেদুর রহমান, ওসি (তদন্ত) মহব্বত কবীর উপস্থিত ছিলেন। নেতৃবৃন্দ আগামী ১৯ আগস্ট মালিক পক্ষের সাথে ঢাকায় বসে বকেয়া পরিশোধে ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বাংলার চিঠি ডটকমকে বলেন, আপাতত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।