৮ ডিসেম্বর মেলান্দহ হানাদার মুক্ত দিবস

মুত্তাছিম বিল্লাহ, মেলান্দহ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: ৮ ডিসেম্বর জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১’র এই দিন বিকেলে আলম কোম্পানির টু আইসি (পরবর্তীতে সেঙ্গাপাড়া কোম্পানি) কমান্ডার আব্দুল করিম মেলান্দহ উমির উদ্দিন হাই স্কুল মাঠে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মেলান্দহকে শত্রু মুক্ত ঘোষণা করেন।

এদিন মেলান্দহ থানার তৎকালীন ওসি জোনাব আলী তার সঙ্গীয় ফোর্সসহ নুরুর রহমান সরকার, গিয়াস উদ্দিন, শহিদুল্লাহ, আব্দুল্লাহ, আব্দুল হক আকন্দ, আব্দুল গেনা, আব্দুল লতিফ, মোহাম্মদ আলী, শমসের আলী, করিম ভেদা, হাশেমসহ মোট ৪৬ জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে।

জানা যায়, তৎকালীন মেলান্দহ সদরের একটি নিচু ঝুপড়ি এলাকা (বর্তমান মেলান্দহ উপজেলা পরিষদ চত্বরে) শাহজাতপুরের আব্দুল বারেক, দিঘলবাড়ির বাচ্চু মিয়া, বারই পাড়ার গৌর গোপাল, আদিপৈতের গোপাল ডাক্তার, কাজির পাড়ার লুৎফর রহমান লেবুসহ নাম নাজানা অনেক মুক্তিকামী জনতাকে ধরে এনে নির্মম নির্যাতন শেষে হত্যা করে পাকবাহিনীরা। এ স্থানটিকে বর্তমানে বদ্ধভূমি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

মেলান্দহ সদর ও মাহমুদপুর পয়লা ব্রিজ এলাকায় পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে তেঘরিয়া-সিরিঘাট এলাকার রমিজ, নাম নাজানা আরও একজন মুক্তিসেনাসহ ৮/১০ জন বেসামরিক লোকের প্রাণহানি ঘটে। এসময় আদিপৈত গ্রামের শহিদ সমর উদ্দিন পাকসেনার হাতে বন্দি হন। তাঁকে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। অপর দিকে আব্দুল করিমের সহযোদ্ধা কলাবাধা হাই স্কুলের ছাত্র আব্দুল কদ্দুস পাকবাহিনীর হাতে আটক হন। পাকবাহিনীরা কদ্দুসকে ইসলামপুরে নিয়ে জুতোর মালা পরিয়ে পাকিস্তান জিন্দাবাদ শ্লোগান দিতে বাধ্য করে ও পরে জামালপুর কালিঘাটে নিয়ে হত্যা করে। এ যুদ্ধে আব্দুল করিমের সহযোদ্ধা ইউসুফ আলীর ব্রাশ ফায়ারে ১২ জন পাক সেনা নিহত হয়।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, দিবসটি উপলক্ষে মেলান্দহ উপজেলা প্রশাসন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বিভিন্ন সংগঠন শোভাযাত্রা, আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।