বিক্ষোভ দমনে চীনের উদ্যোগ, বিক্ষোভস্থল থেকে লোকজনকে আটক

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ দমনে কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেয়া শুরু করেছে। চীনের নিরাপত্তা বাহিনী ২৮ নভেম্বর বিক্ষোভস্থল থেকে লোকজনকে আটক করেছে। তারা দেশটির শূন্য কোভিড নীতির প্রতিবাদে ব্যতিক্রমী এ বিক্ষোভে অংশ নেয়।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ২৮ নভেম্বর সাংহাইয়ের বিক্ষোভস্থল থেকে পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন ওই এলাকার ছবি কিংবা ভিডিও করতে পথচারীদের বাধা দিয়েছে।

সাংহাইয়ে বিক্ষোভের খবর সংগ্রহের সময় পুলিশ বিবিসি’র সাংবাদিকদের গ্রেফতার ও প্রহার করে বলে দাবি করেছে বিবিসি।

চীনের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় জিনজিয়াং এর রাজধানী উরুমকিতে ২৪ নভেম্বর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ১০ জন প্রাণ হারায়। কঠোর লকডাউনের কারণে সেখানে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হয়েছে বলে জনগণ অভিযোগ করে।

তবে কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনমনে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয় এবং তারা বিক্ষোভ শুরু করে।

চলমান এই বিক্ষোভকালে ২৭ নভেম্বরও কিছু লোককে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ঠিক কতো লোককে আটক করা হয়েছে সে সম্পর্কে সাংহাই পুলিশ কিছু জানায়নি।

এদিকে এর আগে দেশটির বৃহত্তম এ শহরটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উলুমুকি সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টাকালে উভয়পক্ষে এ সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

উল্লেখ্য, চীনের রাজধানী বেইজিংসহ বড় বড় বিভিন্ন শহরে শত শত লোক রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে।

চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ নভেম্বর রাতভর বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্রাউডসোর্স করা তালিকায় দেখা গেছে, ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়। তারা আরো স্বাধীনতা চায়। এমনকি তারা তার পদত্যাগও দাবি করে।

চীনে প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং এবং ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কিংবা শ্লোগান দেয়ার ঘটনা বলতে গেলে বিরল। দেশটির আইন অনুযায়ী সরকার ও প্রেসিডেন্টকে নিয়ে সমালোচনাকারীদের কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।

করোনা সংক্রমণ কমাতে চীনা কর্তৃপক্ষের নেয়া কঠোর নীতি জনগণের মনে হতাশা তৈরি করেছে। তারা লকডাউন, কোয়ারেন্টিন ও গণহারে করোনা পরীক্ষা নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।

করোনা নীতি নিয়ে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ সত্ত্বেও শি জিন পিং সম্প্রতি শূন্য করোনা নীতি থেকে সরে না আসার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

এদিকে দেশটিতে ২৮ নভেম্বর রেকর্ড পরিমাণ ৪০ হাজার ৫২ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।