জামালপুরে হিজড়াদের আত্মকর্মসংস্থান রন্ধন ও পরিবেশনা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ সমাপ্ত

জামালপুরে হিজড়াদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য রন্ধন ও পরিবেশনা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সুইডেন নাগরিক আর্নল্ড।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: বিএসআরএম এর আর্থিক সহায়তায় উন্নয়ন সংঘের বাস্তবায়নাধীন সমাজের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী হিজড়াদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে চাহিদার ভিত্তিতে পাঁচদিনব্যাপী রন্ধন ও পরিবেশনা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ১১ এপ্রিল সমাপ্ত হয়েছে। প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে সুইডেনের নাগরিক স্বেচ্ছাসেবক আর্নল্ড বিশেষ বক্তব্য রাখেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লা। এতে আলোচনায় অংশ নেন সংস্থার মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম, পরিচালক অর্থ ও প্রশাসন জিয়াউর রহমান, সহকারী পরিচালক কর্মসূচি মুর্শেদ ইকবাল, প্রকল্প ব্যবস্থাপক লিটন সরকার, প্রকল্প কর্মকর্তা আরজু আহম্মেদ প্রমুখ। প্রশিক্ষণে সহায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জামালপুরের অন্যতম হোটেল জেএফসির রন্ধনশিল্পী নাজমুল হক এবং আনজু হিজড়া।

উন্নয়ন সংঘের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ডিটিআরসির হলরুমে প্রশিক্ষণে ২০ জন হিজড়া অংশ নেন। প্রশিক্ষণে হাতে কলমে নুডুলস, কাচ্চি বিরিয়ানী, চিকেন ফ্রাই, বার্গার, জর্দা, পোলাও, বিভিন্ন ধরনের কারী, সালাদ ইত্যাদি তৈরি করা হয়। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীগণ নিজেদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য নিজেরাই প্রশিক্ষণ থেকে অর্জিত জ্ঞান ও শিক্ষায় ব্যবসা শুরু করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

জামালপুরে হিজড়াদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য রন্ধন ও পরিবেশনা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের হাতে কলমে শিক্ষা দেন রন্ধনশিল্পী নাজমুল হক।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ স্টিল কোম্পানী বিএসআরএম গ্রুপের অর্থায়নে এবং উন্নয়ন সংঘের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় চলতি প্রান্তিকে স্কিনপ্রিন্ট, গরু মোটাতাজাকরণ, ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং পেশাদার বাবুর্চি কাজের উপর ১০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে স্ব স্ব কাজের উপর সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা হবে। কাজগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উন্নয়ন সংঘের পক্ষ থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হবে।

জানা যায় হিজড়াদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জামালপুরে প্রাথমিকভাবে ২৫০জন হিজড়াদের প্রকল্পের উপকারভোগী হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৪জন কর্মী নিয়োগ ছাড়াও ফোকাল পারসন ও হিসাব রক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ হিজড়াদের চলমান আয়ের উৎস এবং কর্মসংস্থানের জন্য বিদ্যমান সুযোগগুলো চিহ্নিত করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানান। এ প্রকল্পের আওতায় তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে চাহিদা নিরুপন নিশ্চিত করে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হবে। তাদের মাঝে সহজশর্তে ঋণ বিতরণসহ শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরী ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের চিন্তা করা হবে। সরকারিভাবে আবাসন সুবিধা, পরিবারে তাদেরকে সংযুক্তি করা, সরকারি ভাতা নিশ্চিত করা, বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংষ্কৃতিক কর্মকান্ডে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করাসহ উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে তাদের সম্মান ও মানবাধিকার সুরক্ষা করা হবে।