জামালপুরে হিজড়াদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গরু মোটাতাজাকরণ প্রশিক্ষণ শুরু

হিজড়াদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য গরু মোটাতাজাকরণ প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করা হয়। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: বিএসআরএম এর আর্থিক সহায়তায় উন্নয়ন সংঘের বাস্তবায়নাধীন সমাজের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী হিজড়াদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে চাহিদার ভিত্তিতে প্রথম পর্যায়ে শুরু হয়েছে গাভী পালন ও গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের উপর দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ। ২৭ মার্চ পাঁচদিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম। প্রশিক্ষণে সহায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জামালপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষক ফিরোজ আহম্মেদ।

উন্নয়ন সংঘের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ডিটিআরসির হলরুমে প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন উন্নয়ন সংঘের সহকারী পরিচালক কর্মসূচি মুর্শেদ ইকবাল, প্রকল্প কর্মকর্তা আরজু আহম্মেদ, হিজড়াদের গুরু মা দেলোয়ার হিজড়া প্রমুখ।

প্রশিক্ষণে ৩০ জন হিজড়া প্রশিক্ষণে অংশ নেন। প্রশিক্ষণে গরুর উন্নত জাত নির্বাচন, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা, প্রসবকালিন পরিচর্যা, গরু মোটাতাজাকরণের লক্ষ্য, আধুনিক প্রযুক্তি ও পদ্ধতি ব্যবহার, গরু, ছাগলের রোগসমূহ এবং চিকিৎসা, বিজ্ঞানসম্মত বাসস্থান, সংক্রমণ রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার, কৃমি নিয়ন্ত্রণের উপায়সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিশ্লেষণমুখী আলোচনা করা হচ্ছে। জানা যায় প্রশিক্ষণ শেষে হিজড়াদের মাঝে গরু কিনে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ স্টিল কোম্পানি বিএসআরএম গ্রুপের অর্থায়নে এবং উন্নয়ন সংঘের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় চলতি প্রান্তিকে গরু মোটাতাজাকরণ, ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং পেশাদার বাবুর্চি কাজের উপর ১০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে স্ব স্ব কাজের ওপর সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হবে। কাজগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উন্নয়ন সংঘের পক্ষ থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হবে।

জানা যায়, হিজড়াদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জামালপুরে প্রাথমিকভাবে ২৫০ জন হিজড়াদের প্রকল্পের উপকারভোগী হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৪ জন কর্মী নিয়োগ ছাড়াও ফোকাল পারসন ও হিসাব রক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ হিজড়াদের চলমান আয়ের উৎস এবং কর্মসংস্থানের জন্য বিদ্যমান সুযোগগুলো চিহ্নিত করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানান। এ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে চাহিদা নিরুপণ নিশ্চিত করে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হবে। তাদের মাঝে সহজশর্তে ঋণ বিতরণসহ শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের চিন্তা করা হবে। সরকারিভাবে আবাসন সুবিধা, পরিবারে তাদেরকে সংযুক্তি করা, সরকারি ভাতা নিশ্চিত করা, বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংষ্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করাসহ উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় হিজড়াদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে তাদের সম্মান ও মানবাধিকার সুরক্ষা করা হবে।