ক্ষুধায় ক্রন্দনরত বৃদ্ধাকে খাবার কিনে দিয়ে বাড়ি পৌঁছার ব্যবস্থা করলেন ইউএনও

সড়কের পাশে বসে ক্ষুধায় ক্রন্দনরত বৃদ্ধা সমলা বেগমকে খাদ্যসামগ্রী কিনে দেন ইউএনও ফারুক আল মাসুদ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

সড়কের পাশে বসে ক্ষুধায় ক্রন্দনরত সমলা বেগম (৮০) নামে এক বৃদ্ধাকে খাদ্যসামগ্রী কিনে দিয়ে রিকশায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন শেরপুরের ঝিনাইগাতীর ইউএনও ফারুক আল মাসুদ। ৭ আগস্ট দুুপুরে ঝিনাইগাতী-শেরপুর সড়কের খৈলকুড়া এলাকার সড়কের পাশে বসে স্বামী হারা ওই বৃদ্ধা কাঁদছিলেন।

সমলা বেগম উপজেলার খৈলকুড়া গ্রামের মৃত সোবহানের স্ত্রী।

সূত্র জানায়, ৭ আগস্ট ঝিনাইগাতীর হাতিবান্দা ইউপির করোনা প্রতিরোধের গণটিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করে ফিরছিলেন ইউএনও ফারুক আল মাসুদ। এ সময় সড়কের পাশে বসে ক্রন্দনরত অবস্থায় এক বৃদ্ধাকে দেখতে পান। এর পরপরই চালককে বলেন গাড়ি থামাতে। পরে গাড়ি থেকে নেমে বৃদ্ধার কাছে গিয়ে কেন কাঁদছেন এর কারণ জানতে চান ইউএনও। পরে বিধবা সমলা বেগম দু’চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, ঘরে খাবার নাই। খুব কষ্টের মধ্যে আছি। একটু সাহায্য পাওয়ার আশায় সড়কে বসে আছি।

বৃদ্ধার এমন আর্তনাদ শুনে ইউএনও তাকে গাড়িতে তোলে শহরে নিয়ে যান। পরে নানা রকম খাদ্যসামগ্রী কিনে বৃদ্ধার হাতে তুলে দেন। খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল দশ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, এক কেজি পেঁয়াজ, দুই কেজি আলু, এক লিটার তেল, এক কেজি লবণ ও একটি সাবান। পরে বাড়ি যাওয়ার জন্য ভাড়া করা রিকশায় তুলে দেন।

বৃদ্ধা সমলা বেগম বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পরে মানুষের বাড়িতে আর ধানের মিলে কাজ করে সন্তানদের খুব কষ্টে বড় করেছি। কিন্তু এখন ওদেরও অভাব। তাই তারা আমাকে আলাদা করে দিয়েছে। এখন বয়সের ভারে আর কাজ করতে পারি না।

তিনি আরও বলেন, কয়দিন ধরে ঘরে খাবার নাই। কী খাব। তাই সাহায্য পাওয়ার আশায় সড়কে বসে ছিলাম। ইউএনও স্যার দেখে আমারে খাবার দিছেন। দোয়া করি আল্লাহ তার ভালো করুক।

মানুষ হিসেবে একজন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, সহযোগিতা করেছি জানিয়ে ইউএনও ফারুক আল মাসুদ বলেন, এটা আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমি দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কোন ব্যক্তি খাদ্য সঙ্কটে থাকেন তাহলে ‘৩৩৩’ নম্বরে ফোন করলে তার বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে।