প্রধানমন্ত্রীর বিরাট কূটনৈতিক সফলতা হলো করোনার টিকা : মির্জা আজম

করোনার টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি করোনার টিকার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে করোনার টিকাদানের ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনার টিকা আনা প্রধানমন্ত্রীর বিরাট কূটনৈতিক সফলতা। করোনা মহামারীতে প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি নাগরিককে সাহস যুগিয়েছেন।

জামালপুর জেলায় করোনার টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনে স্থাপিত টিকাদান বুথে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি এসব কথা বলেন।

মির্জা আজম এমপি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাহস আর কূটনৈতিক সফলতার কারণেই আজকে করোনা মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ বিনামূল্যে করোনার টিকা পাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি মানুষকে বিনামূল্যে এই করোনার টিকা প্রয়োগ করা হবে। করোনার টিকাদান কার্যক্রমের পাশাপাশি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং করোনার টিকা নিয়ে কোন প্রকার গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন ও সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পরে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বুথে জামালপুর সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স বৃষ্টি নাগের দেহে প্রথম করোনার টিকা প্রয়োগের মধ্য দিয়ে জামালপুরে প্রথম ধাপে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষকে করোনার টিকাদানের কার্যক্রম শুরু করা হয়।

প্রথম টিকা নেন নার্স বৃষ্টি নাগ। ছবি : আলী আকবর

জামালপুর সদর হাসপাতালের আওতাধীন টিকাদানের জন্য নির্ধারিত স্থান শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের একাডেমিক ভবনে আটটি বুথ চালু করার কথা থাকলেও নিবন্ধিত আগ্রহীর সংখ্যা কম থাকায় প্রথম দিনে দুটি বুথ চালু করা হয়েছে। এই বুথে টিকা নিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস, ডেপুটি সিভিল সার্জন চিকিৎসক কে এম শফিকুজ্জামানসহ আরো কয়েকজন। এই বুথে সবচেয়ে বেশি করোনার টিকা নিয়েছেন বিজিবি সদস্য, চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা।

একই দিনে জামালপুর পুলিশ হাসপাতাল ও সদরের বাইরে বাকি ছয়টি উপজেলায় উপজেলা হাসপাতালের বুথে করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু করা হয়েছে। টিকা নেওয়ার পর জেলার কোথাও থেকে কোন প্রকার অসুস্থ হয়ে পড়া বা বড় ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন জামালপুরের সিভিল সার্জন।

শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের বুথে টিকা নেওয়া বেশ কয়েকজন ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে টিকা নেওয়ার পর তাদের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। বুথে টিকা নিতে আসা অনেকেই যুব রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকদের কাজের প্রসংশা করেছেন। প্রথম টিকা নেয়া নার্স বৃষ্টি নাগ বলেন, ‘টিকা নেওয়ার পর আমি বেশ ভালোই আছি আগের মতোই। আমার কোন সমস্যা হচ্ছে না।’ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের (৭৩) বলেন, ‘টিকা নেয়ার পর আমার কিছুই হয় নাই। আমি একদম ইজি আছি। ভয়ের কোন কারণ নেই। সবারই টিকা নেওয়া দরকার।’

টিকা নিতে আসা ব্যক্তিদের নানান কাজে সহযোগিতা করেন যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, জামালপুর জেলায় নিবন্ধিত ২ হাজার ২০৪ জনের মধ্যে প্রথম দিনে ৩০৫ জনের দেহে করোনার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। এরমধ্যে বকশীগঞ্জ উপজেলায় ১০ জন, দেওয়ানগঞ্জে ২০ জন, ইসলামপুরে ২০ জন, মাদারগঞ্জে ৩ জন, মেলান্দহে ২০ জন, সরিষাবাড়ীতে ৫৭ জন এবং জামালপুর সদর উপজেলায় ১৭৫ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে।

সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, উদ্বোধনী দিনে একটু কম হলেও দুয়েকদিনের মধ্যে নিবন্ধনের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকবে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত প্রতিটি হাসপাতালের নির্ধারিত বুথে টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সম্পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। উদ্বোধনী দিনে টিকা নেয়ার পর জেলার কোথাও থেকে কারো অসুস্থতা বা বড় ধরনের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া যায়নি।