জামালপুরে করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়নি, সংক্রমণ ঠেকাতে চলছে প্রচেষ্টা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে জামালপুর জেলায় এখন পর্যন্ত বিদেশফেরত বা স্থানীয় কোনো মানুষ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশসহ সরকারি-বেসরকারি সংস্থা মাঠ পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

জানা গেছে, জামালপুরে করোনাভাইরাস ঠেকাতে প্রথম ধাপেই জোর দেওয়া হয়েছে। বিদেশফেরত ব্যক্তিদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হয়। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেব মতে, জামালপুর জেলায় এক হাজার ১৯১ জন বিদেশফেরত ব্যক্তিদের তালিকা ধরে কাজ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে ২৭ মার্চ পর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলায় ৫১১ জন বিদেশফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হয়। ইতিমধ্যে তাদের মধ্যে ৩০৮ জনের হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের তালিকা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, জেলায় এখনো ৬৮০ জন বিদেশফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি সরকার টানা দশদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে জামালপুরের বাড়িতে ফিরে আসা হাজার হাজার মানুষকেও হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা দরকার বলে মনে করা হচ্ছে।

জামালপুরে এখন পর্যন্ত কেউ আক্রান্ত না হলেও জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ করোনাভাইরাস প্রতিরোধের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ৫০ শয্যা করে একটি কোয়ারেন্টিন সেন্টার ও একটি আইসোলেশন হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ দুটি ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে শহরের মনিরাজপুরে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ প্রকল্প এলাকার দুটি পৃথক ভবনে।

শহীদ হারুন সড়ক। ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা। করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সরকারি আদেশে বন্ধ রয়েছে সব দোকানপাট। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের হোম কোয়রেন্টিন নিশ্চিত করা, আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পূর্ব প্রস্তুতির পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা পরিষদ, সকল উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, সকল থানা পুলিশ, সকল পৌরসভা, সকল উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, উদীচী, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপ গোল্ডেন জামালপুরসহ অন্যান্য গ্রুপ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন যার যার অবস্থান থেকে জনসাধারণকে সচেতন করতে নানামুখী প্রচারণা ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে জনসাধারণের মাঝে বিনামূল্যে তরল হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রস্তুত ও বিতরণ করছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জামালপুর ছাত্র কল্যাণ সংসদ।

জামালপুরের সিভিল সার্জন চিকিৎসক গৌতম রায় এ প্রতিবেদককে বলেন, জেলায় এখনো কেউ আক্রান্ত না হলেও সবাই আমরা করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছি। এ ভাইরাস মোকাবেলায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পূর্ব প্রস্তুতি রয়েছে। চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সরবারাহ করা হচ্ছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া এ ভাইরাস মোকাবেলা করা খুবই কঠিন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।