শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যানিটাইজার তৈরি

মো. মুত্তাছিম বিল্লাহ্, মেলান্দহ (জামালপুর) সংবাদদাতা
বাংলারচিঠিডটকম

দেশ যখন করোনাভাইরাসে আতঙ্কগ্রস্থ ঠিক তখনই নিজস্ব অর্থায়নে জীবাণুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করলেন ফিশারিজ বিজ্ঞানী ড. মাহমুদুল হাছানের গবেষক দল। জামালপুর জেলার মেলান্দহের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হাছানের নেতৃত্বে আরো সাতজন শিক্ষার্থী এ কাজে যুক্ত ছিলেন।

টানা সাতদিন গবেষণা ও পরিশ্রমের পর তিনি শতভাগ সফল হন। ২৫ মার্চ বেশকিছু স্যানিটাইজার বোতলজাত করে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিতরণ করেন। প্রথম অবস্থাতেই এটি এলাকায় সাড়া ফেলেছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

গবেষক ড. মাহমুদুল হাছান জানান, ‘দেশে করোনাভাইরাস উপসর্গ দেখার পর থেকেই আমি ভাবতে থাকি কী করা যায়। স্যানিটাইজার ব্যবহারে প্রাথমিকভাবে জীবাণু প্রতিরোধ সম্ভব হলেও বর্তমানে বাজারে স্যানিটাইজার দুষ্প্রাপ্য ও দাম অধিক থাকায় তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে হওয়ায় সরকারের পাশাপাশি সবাইকে দেশের জন্য কাজ করার তাগিদ অনুভব করি। এই ধারণা থেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করে স্যানিটাইজার তৈরির কাজ শুরু করি। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিতে ফিশারিজ বিভাগের সাতজন শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে টানা সাতদিন পরিশ্রম করে সফল হই। প্রথমে ৪০ বোতল স্যানিটাইজার তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও এলাকাবাসীর মধ্যে বিতরণ করা হয়।

ড. হাছান আরো জানান, স্যানিটাইজার তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ইথানল, অ্যালোভেরা জেল ও এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করা হয়। এর কাঁচামাল সংগ্রহ ও আর্থিক যোগান তিনি নিজেই দেন। প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে এটি বৃহৎ পরিসরে করা হবে বলেও জানান।

স্যানিটাইজার প্রস্তুতকারী দলের অন্য সদস্যরা হলেন- দিদারুল হক খান অভি, জাহিদ হাসান অনিক, সৈয়দা মার্জিয়া ইসলাম তৃপ্তি, ফারজানা হায়দার স্মৃতি, বিল্লাল হাসান, শর্মিলা দে এবং তুষার রয়। তারা সকলেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থী দিদারুল হক খান অভি জানান, দেশের চলমান সঙ্কটময় মুহূর্তে দায়িত্বানুভূতির জায়গা থেকেই আমরা মাহমুদুল হাসান স্যারের নেতৃত্বে হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রস্তুত করি ও সেগুলো বিতরণ করি। দেশের জন্য কিছু করতে পেরে আমরা গর্বিত। এ কাজটি চলমান রাখতে সংশ্লিষ্টদের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা করতে হবে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।

এ ব্যাপারে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ড. মাহমুদুল হাছানের গবেষণা কাজ প্রশংসাযোগ্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি ভালো একটি উদ্যোগ। আশা করছি এর ব্যাপ্তি-বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের উপকারে আসবে।

মেলান্দহের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তামিম আল ইয়ামিন বলেন, ‘উদ্যোগটির কথা শুনে তাকে অফিসে আমন্ত্রণ করেছিলাম। সহযোগিতার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।’