ঢাকা ০৬:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ : প্রেস সচিব বাংলাদেশকে বিপদে ফেলার মত ভারতের অবস্থা নেই : ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বিপিএলের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ ৪০-এর পর প্রথম গোল : রোনালদো পরবর্তী যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুব বাজেভাবে হেরে যাবে : ইলন মাস্ক ইউএসএআইডি’র কর্মীদের ছুটিতে পাঠানোর ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত স্থগিত গাজার ধ্বংসস্তূপের নীচে ১২ হাজার লাশ বৃহত্তর স্বার্থে মুসলমানদের কুরআন ও সুন্নাহর ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : ধর্ম উপদেষ্টা ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে চলবে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নকলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে এক নারীর মরদেহ

মেলান্দহে কৃষি ব্যাংকের গ্রাহকের হিসাব থেকে ৭০ লাখ টাকা চুরি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মেলান্দহ বাজার শাখা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের গ্রাহকের হিসাব থেকে অনলাইনে প্রায় ৭০ লাখ টাকা চুরি হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত ওই শাখার দ্বিতীয় কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাকে মেলান্দহ থানায় সোপর্দ করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা চুরির এ ঘটনায় মেলান্দহে চলছে তোলপাড়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মেলান্দহ বাজার শাখা কৃষি ব্যাংকের গ্রাহক দুবাই প্রবাসী প্রবীণ মো. রফিকুল ইসলামের হিসাবে জমা ছিল ২১ লাখ টাকা। ২৪ নভেম্বর ব্যাংকে গিয়ে দেখেন তার হিসাবে কোনো টাকা জমা নেই। ব্যাংকের হিসাব শূন্য দেখে রফিকুল ইসলাম বেশ ঘাবড়ে গেছেন। টাকা ফেরৎ পেতে তিনি ব্যাংকে অবস্থান করছেন। এর জের ধরেই বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তারা ব্যাংকের দ্বিতীয় কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানকে সন্দেহ হলে তাকে আটক করে বিষয়টি ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে অবহিত করেন। একই সাথে ২৪ নভেম্বর থেকে ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম ওই দ্বিতীয় কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানের কাছ থেকে টাকা চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে চেষ্টা চালান তাকে দিয়েই টাকাগুলো গ্রাহকদের হিসাবে ফেরৎ আনতে। মাসুদুর রহমান কথাও দিয়েছিলেন ২৫ নভেম্বর দুপুরের মধ্যে সব টাকা গ্রাহকদের হিসাবে জমা হয়ে যাবে।

এরই মধ্যে ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলামও তার সাথে শামিল হন। তার চক্করে পড়ে ব্যাংকের গ্রাহক স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. রোকনুজ্জামান চৌধুরীর কাছ থেকে ২৪ নভেম্বর রাতেই ১৮ লাখ টাকার একটি চেক ধার নেন। চেকটি লিখে দেওয়া হয় ওই দ্বিতীয় কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানের নামে। এই ১৮ লাখ টাকাও ২৫ নভেম্বর দুপুরের মধ্যে ফেরৎ দেওয়ার কথা ছিল। ঘটনার মূলহোতা মাসুদুর রহমান ব্যাংকে আটক অবস্থায় ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো গ্রাহকের হিসাবে টাকা জমা করতে পারেননি।

গ্রাহক মো. রোকনুজ্জামানা চৌধুরী ২৫ নভেম্বর বিকেলে তার ১৮ লাখ টাকা ফেরৎ আনতে গেলে ব্যবস্থাপক পড়েন আরেক বিপদে। শেষ পর্যন্ত বিকেল পর্যন্ত টাকাগুলো ফেরৎ পাননি ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান চৌধুরী। কিন্তু চেকের মাধ্যমে ধার দেওয়া ১৮ লাখ টাকা ফেরৎ না পেয়ে ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান চৌধুরীও ব্যাংকে অবস্থান নিয়েছেন। খবর পেয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক মো. দিদারুল ইসলাম মজুমদারসহ চারজন কর্মকর্তা ২৫ নভেম্বর বিকেলে কৃষি ব্যাংকের মেলান্দহ শাখায় গিয়ে বেশ কয়েকজন গ্রাহকের হিসাব থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা চুরির বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পান।

কৃষি ব্যাংকের ময়মনসিংহ বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক দিদারুল ইসলাম মজুমদার এ প্রসঙ্গে বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদুর রহমান ব্যাংকের গ্রাহকদের হিসাব থেকে অন্তত ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা অনলাইনে সরিয়ে আত্মসাত করেছেন বলে ধারণা পাওয়া গেছে। টাকার পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। আপাতত এ ঘটনায় মেলান্দহ থানায় একটি মামলা দায়ের করে দ্বিতীয় কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ২৬ নভেম্বর ঢাকার প্রধান কার্যালয় থেকে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত ও অডিট টিম এ শাখায় এসে তদন্ত শুরু করবেন। তদন্ত শেষে জানা যাবে কতজন গ্রাহকের হিসাব থেকে মোট কত টাকা কোথায় সরানো হয়েছে।’ গ্রাহকরা যাতে তাদের টাকা ফেরৎ পান সেই ব্যবস্থাও করা হবে বলে তিনি জানান।

জামালপুরেরসহ গুরুত্বপূর্ণ সব খবর ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পাতায় লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ : প্রেস সচিব

মেলান্দহে কৃষি ব্যাংকের গ্রাহকের হিসাব থেকে ৭০ লাখ টাকা চুরি

আপডেট সময় ১০:০৬:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মেলান্দহ বাজার শাখা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের গ্রাহকের হিসাব থেকে অনলাইনে প্রায় ৭০ লাখ টাকা চুরি হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত ওই শাখার দ্বিতীয় কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাকে মেলান্দহ থানায় সোপর্দ করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা চুরির এ ঘটনায় মেলান্দহে চলছে তোলপাড়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মেলান্দহ বাজার শাখা কৃষি ব্যাংকের গ্রাহক দুবাই প্রবাসী প্রবীণ মো. রফিকুল ইসলামের হিসাবে জমা ছিল ২১ লাখ টাকা। ২৪ নভেম্বর ব্যাংকে গিয়ে দেখেন তার হিসাবে কোনো টাকা জমা নেই। ব্যাংকের হিসাব শূন্য দেখে রফিকুল ইসলাম বেশ ঘাবড়ে গেছেন। টাকা ফেরৎ পেতে তিনি ব্যাংকে অবস্থান করছেন। এর জের ধরেই বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তারা ব্যাংকের দ্বিতীয় কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানকে সন্দেহ হলে তাকে আটক করে বিষয়টি ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে অবহিত করেন। একই সাথে ২৪ নভেম্বর থেকে ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম ওই দ্বিতীয় কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানের কাছ থেকে টাকা চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে চেষ্টা চালান তাকে দিয়েই টাকাগুলো গ্রাহকদের হিসাবে ফেরৎ আনতে। মাসুদুর রহমান কথাও দিয়েছিলেন ২৫ নভেম্বর দুপুরের মধ্যে সব টাকা গ্রাহকদের হিসাবে জমা হয়ে যাবে।

এরই মধ্যে ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলামও তার সাথে শামিল হন। তার চক্করে পড়ে ব্যাংকের গ্রাহক স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. রোকনুজ্জামান চৌধুরীর কাছ থেকে ২৪ নভেম্বর রাতেই ১৮ লাখ টাকার একটি চেক ধার নেন। চেকটি লিখে দেওয়া হয় ওই দ্বিতীয় কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানের নামে। এই ১৮ লাখ টাকাও ২৫ নভেম্বর দুপুরের মধ্যে ফেরৎ দেওয়ার কথা ছিল। ঘটনার মূলহোতা মাসুদুর রহমান ব্যাংকে আটক অবস্থায় ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো গ্রাহকের হিসাবে টাকা জমা করতে পারেননি।

গ্রাহক মো. রোকনুজ্জামানা চৌধুরী ২৫ নভেম্বর বিকেলে তার ১৮ লাখ টাকা ফেরৎ আনতে গেলে ব্যবস্থাপক পড়েন আরেক বিপদে। শেষ পর্যন্ত বিকেল পর্যন্ত টাকাগুলো ফেরৎ পাননি ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান চৌধুরী। কিন্তু চেকের মাধ্যমে ধার দেওয়া ১৮ লাখ টাকা ফেরৎ না পেয়ে ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান চৌধুরীও ব্যাংকে অবস্থান নিয়েছেন। খবর পেয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক মো. দিদারুল ইসলাম মজুমদারসহ চারজন কর্মকর্তা ২৫ নভেম্বর বিকেলে কৃষি ব্যাংকের মেলান্দহ শাখায় গিয়ে বেশ কয়েকজন গ্রাহকের হিসাব থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা চুরির বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পান।

কৃষি ব্যাংকের ময়মনসিংহ বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক দিদারুল ইসলাম মজুমদার এ প্রসঙ্গে বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদুর রহমান ব্যাংকের গ্রাহকদের হিসাব থেকে অন্তত ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা অনলাইনে সরিয়ে আত্মসাত করেছেন বলে ধারণা পাওয়া গেছে। টাকার পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। আপাতত এ ঘটনায় মেলান্দহ থানায় একটি মামলা দায়ের করে দ্বিতীয় কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ২৬ নভেম্বর ঢাকার প্রধান কার্যালয় থেকে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত ও অডিট টিম এ শাখায় এসে তদন্ত শুরু করবেন। তদন্ত শেষে জানা যাবে কতজন গ্রাহকের হিসাব থেকে মোট কত টাকা কোথায় সরানো হয়েছে।’ গ্রাহকরা যাতে তাদের টাকা ফেরৎ পান সেই ব্যবস্থাও করা হবে বলে তিনি জানান।

জামালপুরেরসহ গুরুত্বপূর্ণ সব খবর ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পাতায় লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।