মেলান্দহের ইউপি সদস্য শফিক জেলহাজতে

পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মেলান্দহ উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

গর্ভবতী মায়েদের যত্ন মাতৃসেবার পুষ্টি কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২৪ অক্টোবর রাতে তার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৫ অক্টোবর তাকে আদালতের মাধ্যমে জামালপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ প্রকল্প যত্ন মাতৃসেবা প্রকল্পের আওতায় হতদরিদ্র গর্ভবতী মা ও শূন্য থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের পুষ্টি কার্ড দেওয়া হবে। ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এলজিইডি এবং বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাঠপর্যায়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে এই প্রকল্পের জন্য এক হাজার ৩৫১ জন উপকারভোগী গর্ভবতী মা ও শিশুর তালিকা তৈরির নির্দেশনা রয়েছে।

সরকারি এই যত্ন মাতৃসেবা প্রকল্পের পুষ্টি কার্ডের জন্য উপকারভোগীদের তালিকা তৈরি করতে টাকা নেয়ার কোনো নিয়ম নেই। কিন্তু মেলান্দহ উপজেলার চরবানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম সেই তালিকা তৈরি করতে গিয়ে হতদরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের কাছ থেকে অবৈধভাবে পাঁচ হাজার থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠে।

পুষ্টি কার্ডের জন্য টাকা দেওয়ার নিয়ম না থাকার বিষয়টি জানতে পেরে একই ইউনিয়নের ভাবকি গ্রামের প্রতিবন্ধী নরসুন্দর আব্দুল মান্নানের স্ত্রী রোকেয়া বেগম ২৪ অক্টোবর রাতে ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মেলান্দহ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মেলান্দহ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। ওই রাতেই ভাবকি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৫ অক্টোবর তাকে আদালতে হাজির করে জামালপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

চরবানিপাকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাদাত হোসেন প্রকল্পটি প্রসঙ্গে বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের যত্ন মাতৃসেবা প্রকল্পটি নিয়ে জামালপুর এলজিইডিতে একটি বৈঠক করেছি। এখনো উপকারভোগী গর্ভবতী মায়েদের তালিকা তৈরির কার্যক্রম মাঠপর্যায়ে শুরু করিনি। আমরা ফরম পাইনি। ফরম হাতে পেলে ইউনিয়নের এক হাজার ৩৫১ জন উপকারভোগীর তালিকা তৈরি করার জন্য এলাকায় মাইকিং করা হবে। আমি শুনেছি যে ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম তালিকায় নাম উঠানোর জন্য কারো কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। যদি নিয়ে থাকেন তিনি কাজটি ঠিক করেননি।’

মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল ইসলাম খান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘এটি একটি সরকারি প্রকল্প। তাই ভুক্তভোগী রোকেয়া বেগমের অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে ইউপি সদস্য মো. শফিকুল ইসলামকে ২৪ অক্টোবর রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ২৫ অক্টোবর আদালতের মাধ্যমে জামালপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’