বকশীগঞ্জে বাঁধ ভেঙে আরো ৫ গ্রাম প্লাবিত, ২০টি বিদ্যালয় বন্ধ

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অস্বাভাবিকভাবে বন্যার বৃদ্ধির ফলে গ্রামীণ জনপদ লন্ডভন্ড হচ্ছে। বন্যায় চারটি ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে বানভাসি মানুষ। এদিকে সাধুরপাড়া ইউনিয়নে গাজীরপাড়া থেকে আলীরপাড়া রাস্তা কাম বাঁধ ভেঙে নতুন করে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
জানা গেছে, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ এবং দশানী নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার চারটি ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের গাজীর পাড়া-আলীরপাড়া গ্রামের বাঁধ ১৫ জুলাই রাতে ভেঙে গেছে। বাঁধ ভেঙে আচ্চা কান্দি , গাজীর পাড়া, দাস পাড়া , মাঝের পাড়া, নীলেরচর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একই সাথে আচ্চা কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠায় বিদ্যালয়টির পাঠদান সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। একই ইউনিয়নের বিলেরপাড় থেকে কামালের বার্তী রাস্তাটি বন্যায় ভেঙে গেছে। বন্যার কবলে পড়ে সাধুরপাড়া, মেরুরচর, বগারচর ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তাঘাট লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। অনেক রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

এদিকে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন ছাড়াও মেরুরচর, বগারচর ও নিলক্ষিয়া ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় রাস্তাঘাট গুলো ডুবে যাওয়ায় বিভিন্ন গ্রামের সাথে উপজেলা শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এদিকে ৪০টি গ্রামে বন্যায় প্লাবিত ও ২৫ হাজার মানুষ পানি বন্দি হলেও এখন পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। জেলা প্রশাসন থেকে বকশীগঞ্জের বন্যার্তদের জন্য ১০ মেট্রিক টন চাল গত চার দিন আগে বরাদ্দ করা হলেও এখন পর্যন্ত সেই চাল বিতরণ করা হয়নি। পরিস্থিতি বুঝে এসব ত্রাণের চাল বিতরণ করবে উপজেলা প্রশাসন। তবে ১৬ জুলাই দুপুরে মেরুরচর ইউনিয়নের ভাটি কলকিহারা গ্রামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৬০টি পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

বন্যায় পানিবন্দি হওয়ার ফলে সহজেই ঘর থেকে বের হতে পারছে না বানভাসিরা। এ কারণে অনেক পরিবার তাদের ছেলে মেয়ে নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু বলেন, তার ইউনিয়নের ১৮টি গ্রামের মধ্যে ১৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অথচ মাত্র ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যে পরিমাণ চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এ কারণে তিনি আরো বরাদ্দ দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
বন্যার্তদের পযাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মেরুরচর, বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাসান মাহবুব খান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনো খাবার বিতরণ শুরু করা হয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকায়ত্রাণ বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে ত্রাণের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।