ঢাকা ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা মাদারগঞ্জে একমণ ধানের দামেও মিলছে না একজন ধানকাটা শ্রমিক বকশীগঞ্জে আগুনে পোড়া এক নারীর মরদেহ উদ্ধার ছাত্রদলনেতা সাম্য হত্যার বিচার চায় সরিষাবাড়ীর ছাত্রদল মেলান্দহে আগুনে পুড়ে আশি বছরের বৃদ্ধার মৃত্যু ছাত্রদলনেতা সাম্য হত্যার বিচার চায় বকশীগঞ্জের ছাত্রদল বকশীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অটোচালকের মৃত্যু আওয়ামী লীগ নেত্রী ময়ুরীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ, মাদারগঞ্জে মানববন্ধন জামালপুরে শিশুদের কল্যাণে উপদেষ্টা কমিটি গঠিত বকশীগঞ্জে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস চেয়ে আবেদন

মাদারগঞ্জে গাছে বেঁধে গৃহবধূ নির্যাতন, স্বামী-শ্বশুরসহ আটক ৪

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় যৌতুকের জন্য স্ত্রী ইয়াছমিনকে (২৩) গাছে বেঁধে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে পাষন্ড স্বামী মাজেদ ফকিরসহ একই পরিবারের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২৬ জুন দিবাগত গভীর রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ব্যাপারে ওই গৃহবধূ ইয়াছমিন বাদী হয়ে মাদারগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ২৫ জুন সকালে এই অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ ইয়াছমিন মাদারগঞ্জ পৌরসভার চরবওলা গ্রামের দরিদ্র কৃষক দুদু প্রামাণিকের মেয়ে।

অভিযোগে জানা গেছে, মাদারগঞ্জ পৌরসভার বালিজুড়ী পশ্চিমপাড়া গ্রামের মাজেদ ফকির বিয়ের পর থেকেই তিন লাখ টাকার যৌতুকের জন্য স্ত্রী ইয়াছমিনকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগসহ নির্যাতন করে আসছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি বিরাজ করছিল। পাঁচ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে মেঘলা নামের চার বছরের এক কন্যা রয়েছে।

২৫ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যৌতুকের টাকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রী দু’জনের মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে মাজেদ ফকির ও তার পরিবারের সদস্যরা ইয়াছমিনকে প্রথমে মারধর করে। এরপর বাড়ির আঙিনায় গাছে বেঁধে তাকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটায়। এতে ইয়াছমিন গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওইদিনই মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা খুবই সঙ্কটাপন্ন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

নির্যাতিতা ওই গৃহবধূর বাবা দুদু প্রামাণিক বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘আমার মেয়ের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনরা বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতো এবং মারপিট করতো। একই কারণে ঘটনার দিন তাকে মারপিট করার পর বাড়ির আঙিনায় গাছে বেঁধে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পিটুনি দেয়। এতে লোহার রডের আঘাতে আমার মেয়ের মাথা, পীঠ ও পায়ের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়েছে। আমার মেয়েকে এইরকম নির্যাতনকারীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’

এ ঘটনার বিচার চেয়ে নির্যাতিতা গৃহবধূ ইয়াছমিন বাদী হয়ে ২৬ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ) ও ৩০ ধারায় দায়ের করা ওই মামলায় নির্যাতনকারী ওই গৃহবধূর স্বামী মাজেদ ফকির ও শ্বশুর টগরু ফকিরসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য দু’জন আসামি হলেন গৃহবধূর দেবর মো. শাহজাহান ও শাহজাহানের স্ত্রী ছানোয়ারা বেগম।

মামলা দায়েরের পর মাদারগঞ্জ মডেল থানার উপপদির্শক (এসআই) সুমন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ মাদারগঞ্জ পৌরসভার বালিজুড়ী পশ্চিমপাড়া এলাকায় নির্যাতনকারী মাজেদ ফকিরের বাড়িতে অভিযান চালান। রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ মামলাটির চারজন আসামি মাজেদ ফকির, টগরু ফকির, মো. শাহজাহান ও ছানোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেন। ২৭ জুন সকালে গ্রেপ্তার চার আসামিকে জামালপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মাদারগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন চক্রবর্তী বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘যৌতুকের জন্য অমানবিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ইয়াছমিনের অভিযোগ পেয়েই আমরা মামলা নিয়েছি। ২৬ জুন রাতেই তার স্বামী ও শ্বশুরসহ চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’

আপলোডকারীর তথ্য

ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা

মাদারগঞ্জে গাছে বেঁধে গৃহবধূ নির্যাতন, স্বামী-শ্বশুরসহ আটক ৪

আপডেট সময় ০৯:২৮:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০১৯

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় যৌতুকের জন্য স্ত্রী ইয়াছমিনকে (২৩) গাছে বেঁধে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে পাষন্ড স্বামী মাজেদ ফকিরসহ একই পরিবারের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২৬ জুন দিবাগত গভীর রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ব্যাপারে ওই গৃহবধূ ইয়াছমিন বাদী হয়ে মাদারগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ২৫ জুন সকালে এই অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ ইয়াছমিন মাদারগঞ্জ পৌরসভার চরবওলা গ্রামের দরিদ্র কৃষক দুদু প্রামাণিকের মেয়ে।

অভিযোগে জানা গেছে, মাদারগঞ্জ পৌরসভার বালিজুড়ী পশ্চিমপাড়া গ্রামের মাজেদ ফকির বিয়ের পর থেকেই তিন লাখ টাকার যৌতুকের জন্য স্ত্রী ইয়াছমিনকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগসহ নির্যাতন করে আসছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি বিরাজ করছিল। পাঁচ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে মেঘলা নামের চার বছরের এক কন্যা রয়েছে।

২৫ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যৌতুকের টাকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রী দু’জনের মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে মাজেদ ফকির ও তার পরিবারের সদস্যরা ইয়াছমিনকে প্রথমে মারধর করে। এরপর বাড়ির আঙিনায় গাছে বেঁধে তাকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটায়। এতে ইয়াছমিন গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওইদিনই মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা খুবই সঙ্কটাপন্ন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

নির্যাতিতা ওই গৃহবধূর বাবা দুদু প্রামাণিক বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘আমার মেয়ের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনরা বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতো এবং মারপিট করতো। একই কারণে ঘটনার দিন তাকে মারপিট করার পর বাড়ির আঙিনায় গাছে বেঁধে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পিটুনি দেয়। এতে লোহার রডের আঘাতে আমার মেয়ের মাথা, পীঠ ও পায়ের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়েছে। আমার মেয়েকে এইরকম নির্যাতনকারীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’

এ ঘটনার বিচার চেয়ে নির্যাতিতা গৃহবধূ ইয়াছমিন বাদী হয়ে ২৬ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ) ও ৩০ ধারায় দায়ের করা ওই মামলায় নির্যাতনকারী ওই গৃহবধূর স্বামী মাজেদ ফকির ও শ্বশুর টগরু ফকিরসহ চারজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য দু’জন আসামি হলেন গৃহবধূর দেবর মো. শাহজাহান ও শাহজাহানের স্ত্রী ছানোয়ারা বেগম।

মামলা দায়েরের পর মাদারগঞ্জ মডেল থানার উপপদির্শক (এসআই) সুমন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ মাদারগঞ্জ পৌরসভার বালিজুড়ী পশ্চিমপাড়া এলাকায় নির্যাতনকারী মাজেদ ফকিরের বাড়িতে অভিযান চালান। রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ মামলাটির চারজন আসামি মাজেদ ফকির, টগরু ফকির, মো. শাহজাহান ও ছানোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেন। ২৭ জুন সকালে গ্রেপ্তার চার আসামিকে জামালপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মাদারগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন চক্রবর্তী বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘যৌতুকের জন্য অমানবিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ইয়াছমিনের অভিযোগ পেয়েই আমরা মামলা নিয়েছি। ২৬ জুন রাতেই তার স্বামী ও শ্বশুরসহ চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’