শফিউল আলম লাভলু
নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠি ডটকম
‘ঘরের ইঁদুর মাঠের ইঁদুর ধ্বংস করে অন্ন, সবাই মিলে ইঁদুর মারি ফসল রক্ষার জন্য’ এই প্রতিপাদ্যে দেশব্যাপী চলেছে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান। অভিযানের অংশ হিসেবে শেরপুরের নকলা উপজেলায়ও চলছে ইঁদুর নিধন কার্যক্রম।
উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের ভূরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার সব কৃষক সদস্যরা প্রতিদিনই ইঁদুর নিধনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গত বছর এক কৃষক সংগঠনকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ইঁদুর মেরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক পুরস্কৃত হওয়া দেখে তারা উদ্বুদ্ধ হন। পরবর্তীতে তাদের সাপ্তাহিক সভায় তারাও ইঁদুর নিধনের জন্য সর্বসম্মতীক্রমে সিদ্ধান্ত নেন। এরপর থেকেই শুরু হয় তাদের ইঁদুর নিধন কার্যক্রম। ইঁদুর নিধনে তারা নকলায় রেকর্ড গড়তে চায়।
সংস্থার রেজিস্ট্রারের তথ্য মতে, ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে ভূরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার সদস্যরা ইঁদুর নিধন শুরু করে চলতি বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১৬ হাজার ৬৫৪ টি ইঁদুর মেরে এলাকার কৃষকসহ সবার মনে আলোচনার ঝড় তুলেছেন।
সংস্থাটির সদস্যরা জানান, তাদের ইঁদুর নিধন কার্যক্রম দেখে সর্বসাধারণ নিজে থেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে ইঁদুর নিধনে অংশ নিয়েছেন। তারা আরও জানান, ইঁদুর নিধন করায় তাদের ফসলের উৎপাদন অনেক বেড়েছে।
সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন জানান, ইঁদুর মারার পরে সংস্থার রেজিস্ট্রারে দিন তারিখ উল্লেখ করে ইঁদুরের সংখ্যা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে রাখেন। তাদের সাপ্তাহিক সভায় এক সপ্তাহে যে কৃষক সদস্য সর্বোচ্চ সংখ্যক ইঁদুর মারেন তাকে সংস্থার পক্ষ থেকে সাধ্যানুযায়ী পুরস্কৃত করা হয়। তাছাড়া ইঁদুর মারার বিষয়টি তথা নিধনকৃত ইঁদুরের সংখ্যা নিয়মিত উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরে জানান তারা।
উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আতিকুর রহমানকে জানিয়ে মৃত ইঁদুরগুলো মাটিতে পুতে রাখেন বলে জানান ওই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মো. ছাইদুল হক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, ভূরদী খন্দকারপাড়া কৃষিপণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার বছরব্যাপী ইঁদুর নিধন অভিযানের উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। তাদের দেখাদেখি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত কৃষক সংগঠনের সদস্যরাও ইঁদুর নিধনের কাজ হাতে নিয়েছেন বলে জানান মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাগণ।