জামালপুরে শিশুদের হাতে মোবাইল আর ফেসবুক নয় শীর্ষক উন্নয়ন সংঘের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষে পুরস্কার বিতরণ করেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর ॥
মোবাইল ফোন আর ফেসবুকের অপব্যবহারে শিশুরা চরম ঝুঁকি এবং নিরাপত্তাহীনতার শিকার হচ্ছে। অভিভাবকের অসচেতনতার ফলে শিশুদের হাতে স্মার্টফোনের মাধ্যমে ফেসবুকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এতে করে পড়ালেখা, খেলাধুলা, অন্যান্য বিনোদন, সুস্থ আড্ডাসহ অনেক ঐতিহ্য হুমকির মুখে পড়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে উন্নয়ন সংঘ বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।

এরই অংশ হিসেবে ১৪ আগস্ট সংস্থার আইনের সংস্পর্শে ও সংঘাতে আসা শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা (আইআইআরসিসিএল) উন্নয়ন সংঘের প্রকল্পের আওতায় জামালপুর হযরত শাহজামাল (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সের শিশুদের মোবাইল ফোন ও ফেসবুক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা উচিৎ’ শীর্ষক এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় হযরত শাহজামাল (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয় ও জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়।

প্রতিযোগিতায় তার্কিকদের প্রাণবন্ত তথ্য ও যুক্তি সমৃদ্ধ বক্তব্য শেষে হযরত শাহজামাল (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয় বিজয়ী হয়। শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে পুরস্কার লাভ করে জামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী জাসিয়া।

হযরত শাহজামাল (রহ.) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন জামালপুর সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. তরিকুল ইসলাম, উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লা প্রমুখ। বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম, আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মিনারা পারভীন, বিশিষ্ট সংস্কৃতিকর্মী সাযযাদ আনসারী। সহায়ক ভূমিকা পালন করেন উন্নয়ন সংঘের সমাজকর্মী আরজু মিয়া, চাইল্ডসিটির পরিদর্শক সাব্বির হোসেন রিয়াদ, স্বেচ্ছাসেবক শান্ত, আসমাউল আসিফ প্রমুখ।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। ছবি : বাংলার চিঠি ডটকম

আলোচনা শেষে বিজয়ী ও রানার আপ দলকে পুরস্কৃত করা হয়।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় অপরাজেয় বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়ন সংঘ আইআইআরসিসিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে আসছে।

এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো শিশুরা যাতে ভুল পথে জড়িয়ে না পড়ে এবং বিপথে চলে আসা শিশুদের আইনের জটিলতা থেকে সহজে মুক্ত করে যাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। পাশাপাশি পরিবারের সাথে থেকে তাদের স্বাভাবিক বিকাশকে তরান্বিত করা।

প্রকল্পটির লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে পাঁচজন আইনজীবী, তিনজন কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবক, চারজন যুব উকিল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শিশু আইন, শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়নে পুলিশ কর্মকর্তা, প্রবেশন কর্মকর্তা, সাংবাদিক, আইনজীবী, স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের সাথে সভা, কর্মশালা, প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়ে থাকে।