ঢাকা ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নকলায় পানির নিচে কৃষকের স্বপ্ন : নষ্ট হয়েছে প্রায় ৭২০০ হেক্টর ধান ও সবজি

বন্যার পানিতে তলিয়েছে শেরপুরের নকলা উপজেলার ফসলের মাঠ। ছবিটি নকলা পৌরসভাধীন পাইস্কা বাইপাস থেকে তোলা। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

দেড় সপ্তাহ আগেও পুরো উপজেলার ফসলি মাঠগুলোতে ছিল সবুজের সমারোহ। বাতাসে দোল খেত সবুজ ধানের পাতা। সেই সঙ্গে দোল খেত কৃষকের স্বপ্ন। ফসলের নিবিড় চর্চায় কৃষক যখন স্বপ্নবোনা শুরু করেন, ঠিক তখনই অসময়ের বন্যা তাদের সব স্বপ্ন পানিতে তলিয়ে দেয়। ধান ক্ষেতের জায়গায় এখন শুধু পানি আর পানি। কমপক্ষে ৭ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান ও ২০০ হেক্টর জমির মৌসুমি শাক-সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কৃষক।

শেরপুরের নকলা উপজেলায় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় আমন ফসল তলিয়ে যায়। এতে সৃষ্টি হয় বন্যার। ৯ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নকলা উপজেলা। এর মধে গনপদ্দি, নকলা, উরফা, গৌরদ্বার ইউনিয়ন ও পৌরসভার বেশ কিছু অংশ বন্যায় প্লাবিত হয়। এতে মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাছাড়া কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সবজির ক্ষেত।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার গণপদ্দী ইউনিয়নের খারজান, আদমপুর, বারইকান্দি, বিহারীরপাড়, মেদীরপাড়, পিপড়ীকান্দি ও বরইতার, নকলা ইউনিয়নের ধনাকুশা, ডাকাতিয়াকান্দা ও ধনাকুশা নদীর পাড়, উরফা ইউনিয়নের বারমাইশা, উরফা, লয়খা, তারাকান্দা, হাসনখিলা ও রাণীশিমুল এবং গৌড়দ্বর ইউনিয়নের দড়িতেঘড়ি গ্রাম এবং পৌরসভার লাভা ও দড়িপাড়া মহল্লার নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পৌরসভাসহ ৫ ইউনিয়নের অন্তত ১৮টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় ১ হাজার শ্রমজীবী মানুষ।

উপজেলর উরফা ইউনিয়নের বারমাইসা প্রামের কৃষক মর্তুজ আলী জানান, তার ৩ একর জমির পুরো ফসলই পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বারাইসা গ্রামের কৃষক আবুল হাসেম ও আবুল কালাম জানান, তাদের এলাকায় রোপিত বেশিরভাগ আমন ফসল ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদী জানান, বন্যার পানিতে উপজেলায় ৪ হাজার ৩৩৮ হেক্টর জমির আমন ফসল সম্পূর্ণ নিমজ্জিত ও ২ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমির আমন ফসল আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। তাছাড়া ৯৫ হেক্টর জমির মৌসুমি শাক-সবজির আবাদ সম্পূর্ণ নিমজ্জিত ও ৮০ হেক্টর জমির আবাদ আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরি করে প্রণোদনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সরকারিভাবে যদি প্রণোদনার বরাদ্দ আসে তাহলে হয়তো কৃষক তাদের এই ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নকলায় পানির নিচে কৃষকের স্বপ্ন : নষ্ট হয়েছে প্রায় ৭২০০ হেক্টর ধান ও সবজি

আপডেট সময় ০৩:২৯:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

দেড় সপ্তাহ আগেও পুরো উপজেলার ফসলি মাঠগুলোতে ছিল সবুজের সমারোহ। বাতাসে দোল খেত সবুজ ধানের পাতা। সেই সঙ্গে দোল খেত কৃষকের স্বপ্ন। ফসলের নিবিড় চর্চায় কৃষক যখন স্বপ্নবোনা শুরু করেন, ঠিক তখনই অসময়ের বন্যা তাদের সব স্বপ্ন পানিতে তলিয়ে দেয়। ধান ক্ষেতের জায়গায় এখন শুধু পানি আর পানি। কমপক্ষে ৭ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান ও ২০০ হেক্টর জমির মৌসুমি শাক-সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কৃষক।

শেরপুরের নকলা উপজেলায় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় আমন ফসল তলিয়ে যায়। এতে সৃষ্টি হয় বন্যার। ৯ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নকলা উপজেলা। এর মধে গনপদ্দি, নকলা, উরফা, গৌরদ্বার ইউনিয়ন ও পৌরসভার বেশ কিছু অংশ বন্যায় প্লাবিত হয়। এতে মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাছাড়া কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সবজির ক্ষেত।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার গণপদ্দী ইউনিয়নের খারজান, আদমপুর, বারইকান্দি, বিহারীরপাড়, মেদীরপাড়, পিপড়ীকান্দি ও বরইতার, নকলা ইউনিয়নের ধনাকুশা, ডাকাতিয়াকান্দা ও ধনাকুশা নদীর পাড়, উরফা ইউনিয়নের বারমাইশা, উরফা, লয়খা, তারাকান্দা, হাসনখিলা ও রাণীশিমুল এবং গৌড়দ্বর ইউনিয়নের দড়িতেঘড়ি গ্রাম এবং পৌরসভার লাভা ও দড়িপাড়া মহল্লার নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পৌরসভাসহ ৫ ইউনিয়নের অন্তত ১৮টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় ১ হাজার শ্রমজীবী মানুষ।

উপজেলর উরফা ইউনিয়নের বারমাইসা প্রামের কৃষক মর্তুজ আলী জানান, তার ৩ একর জমির পুরো ফসলই পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বারাইসা গ্রামের কৃষক আবুল হাসেম ও আবুল কালাম জানান, তাদের এলাকায় রোপিত বেশিরভাগ আমন ফসল ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহরিয়ার মোরসালিন মেহেদী জানান, বন্যার পানিতে উপজেলায় ৪ হাজার ৩৩৮ হেক্টর জমির আমন ফসল সম্পূর্ণ নিমজ্জিত ও ২ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমির আমন ফসল আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। তাছাড়া ৯৫ হেক্টর জমির মৌসুমি শাক-সবজির আবাদ সম্পূর্ণ নিমজ্জিত ও ৮০ হেক্টর জমির আবাদ আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরি করে প্রণোদনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সরকারিভাবে যদি প্রণোদনার বরাদ্দ আসে তাহলে হয়তো কৃষক তাদের এই ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবে।