বকশীগঞ্জে সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ

বকশীগঞ্জের গাজীরপাড়া-বাঙ্গালপাড়া খালের ওপর সেতু নির্মাণ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে রয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু
নিজস্ব প্রতিবেদক, বকশীগঞ্জ, বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের বকশীগঞ্জে বন্যায় বিধ্বস্ত হওয়ার পাঁচ বছর পরও নির্মিত হয়নি গাজীরপাড়া-বাঙ্গালপাড়া খালের ওপর সেতু। পাঁচ বছর আগে বন্যায় বিধ্বস্ত হয়ে যায় সেতুটি। তখন থেকেই ১০টি গ্রামের মানুষের কপালে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি লেগেই রয়েছে।

বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও সেতুর নির্মাণের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে গাজীরপাড়া-বাঙ্গালপাড়াসহ ১০টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে প্রায়শই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের গাজীরপাড়া থেকে বাঙ্গালপাড়া গ্রামের ছমির আলীর বাড়ির পাশে খালের ওপর একটি সরু সেতু ২০১৯ সালের ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত হয়ে যায়। সে বছরের বন্যায় সেতুটি বন্যার পানির প্রবল স্রোতে ভেসে গেলে সেতুর জায়গাটি ভেঙে আরও বিস্তৃত হয়ে পড়ে। এই সেতুর পূর্বে রয়েছে গাজীরপাড়া বাজার নামে একটি বড় বাজার, কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। পশ্চিমে রয়েছে বাঙ্গালপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান।

এই সেতুটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে অসহনীয় দুর্ভোগে দিন পার করছেন এই এলাকার মানুষ। দীর্ঘ পাঁচ বছরেও নতুন করে আরেকটি সেতু নির্মাণ না হওয়ায় গাজীরপাড়া, ডেরুরবিল, বাঙ্গালপাড়া, চর গাজীরপাড়া, আচ্চাকান্দি, বিলের পাড়, কতুবেরচর, নিলেরচর, দপর পাড়া, কলাকান্দা গ্রামের বৃদ্ধ, শিশু, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, যানবাহন মালিক, জমির মালিকসহ সকল শ্রেণির মানুষ যাতায়াত নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।

বিশেষ করে কৃষকরা তাদের জমির ফসল বাড়িতে নিয়ে আসতে বা বাজারজাত করতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

বর্ষাকালে বা বন্যার সময় শিক্ষার্থীদের স্কুল, কলেজ যেতে হলে বা প্রয়োজনের তাগিদে শহরে যেতে হলে বাড়তি ৬ কিলোমিটার ঘুরে তাদের সেখানে যেতে হয়। এছাড়াও কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্স আসতেও ৬ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়। ফলে সকল কাজের জন্য বাড়তি সময় ও বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

গাজীরপাড়া-বাঙ্গালপাড়া রাস্তার ওপর ওই সেতুটি নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

গাজীরপাড়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসক নজরুল ইসলাম হিটলার বলেন, এই খালের ওপর সেতু না থাকায় আমরা খুবই কষ্টে আছি। যেখানে ১০ মিনিট সময় লাগার কথা সেখানে সেতু না থাকায় সেখানে এক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। বন্যা ও বর্ষাকালে অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগ করতে হয় আমাদের। বারবার স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করেও কোন কাজ হচ্ছে না। অবিলম্বে এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জানান, মানবিক কারণে হলেও এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা উচিত। আমিও একাধিকবার সেতু চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে অবগত করেছি। তাই এলাকাবাসীর জনদুর্ভোগ কমাতে নতুন একটি সেতু নির্মাণ করা হোক।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. শামছুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, গাজীরপাড়া বাজারের পর পশ্চিম পাশে অবস্থিত খালের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এলজিইডির প্রকল্প পরিচালক এটি পরিদর্শন করেছেন। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে।