জামালপুরে রুই মাছের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচিত

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিঙ্গান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামরুল আলম খান। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

বিশ্বে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের যমুনা নদীর রুই মাছের পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য (জিনোম সিকোয়েন্সিং) সম্পন্ন করেছে জামালপুরের মেলান্দহের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিঙ্গান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।

২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানান গবেষক দলের প্রধান ড. মাহমুদুল হাছান। এসময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিঙ্গান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামরুল আলম খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ ফারুক হোসেন, যশোর জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন ম্যানেজার মো. মোজাম্মেল হোসেন ও গবেষক দলের সদস্যরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও গবেষণা সেলের প্রধান ড. মাহমুদুল হাছানের নেতৃত্বে একটি গবেষণা দল রুইয়ের জীবন রহস্য আবিষ্কার করেন।

গবেষক দলের ড. মাহমুদুল হাছান জানান, ২০২২ সাল থেকে দুই বছর গবেষণার পর এ সাফল্য পেয়েছেন তারা। প্রথমে দেশের যমুনা নদী থেকে রুই মাছ সংগ্রহ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি, জাপান এবং ভারতের সুপার কম্পিটারে গবেষণাটি হয়। এর মধ্য দিয়ে রুইয়ের ডিএনএ বা কৌলিক বৈশিষ্ট্যের সব তথ্য জানতে পারেন তারা।

তিনি বলেন, জিনোম হচ্ছে কোনো জীবের পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। জীবের অঙ্গসংস্থান, জন্ম, বৃদ্ধি, প্রজনন এবং পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াসহ সব জৈবিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় এর জিনোমে সংরক্ষিত নির্দেশনা থেকে। পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিং হচ্ছে কোনো জীবের জিনোমে সব নিউক্লিওটাইডসমূহ (জৈবঅনু) কীভাবে বিন্যস্ত রয়েছে তা নিরূপণ করা। একটি জীবের জিনোমে সর্বমোট জিনের সংখ্যা, বৈশিষ্ট্য এবং তাদের কাজ পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স থেকেই জানা যায়।

এই সফলতা রুই মাছের জাত উন্নয়ন সংরক্ষণ ও উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। একই সঙ্গে তা রুই মাছের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতেও সহায়ক হবে। জীবনরহস্য উন্মোচনের এই সফলতা রুই মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও মান বাড়াতে কাজে লাগাবে। সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করলে রুই মাছ বাংলাদেশের মৎস উৎপাদনে উদাহরণ সৃষ্টি করবে।