আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘুন ধরে গেছে : বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

বাংলাদেশ প্রেসকাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম বলেছেন, আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘুন ধরে গেছে। সেই ঘুন থেকে বের হতে গেলে। ঘুনকে সরাতে গেলে। একদিনেই সম্ভব নয়। যদি নিয়মিত প্রচেষ্টা থাকে। একদিন না একদিন আমরা নিশ্চয় সফলকামী হবো।

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের আয়োজনে ‘গণমাধ্যমে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা’ শীর্ষক সেমিনার ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকতা পেশার মানোন্নয়নে সাংবাদিকদের জন্যই সারাদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আপনাদের কথা শুনছি। অনেক কিছুই আপনারা আশা করতেছেন। ক্ষমতা আমার নাই। তাও জানছেন। আর যে ক্ষমতা আছে আমি কিন্তু ব্যর্থ হচ্ছি। তাও বলছেন। এটি আমার প্রাণে খুব আবেগ তৈরি করে। আপনাদের বক্তব্যের সারাংশ হলো আপনাদেরই মালিক-সম্পাদক তাদের সম্পর্কে। তারা কিন্তু সাংবাদিক শ্রেণির লোক। বাইরের কেউ নন।

তিনি বলেন, প্রেস কাউন্সিল তৈরি হয় একজন চেয়ারম্যান আর চৌদ্দ জন সদস্য নিয়ে। চৌদ্দ জনের মধ্যে নয়জনই সাংবাদিক। তাদের মধ্যে তিনজন সাংবাদিক, তিনজন সম্পাদক ও তিনজন মালিক। তারা সবাই সাংবাদিক। আর পাঁচজন সদস্য থাকেন বুদ্ধিজীবী শ্রেণির। তাদের মধ্যে বার কাউন্সিলের সদস্য একজন, পার্লামেন্ট মেম্বার দু’জন, ইউজিসি প্রতিনিধি একজন আর বাংলা একাডেমির প্রতিনিধি একজন থাকেন। এতো ক্ষমতাবান বোর্ড বাংলাদেশে আর কোনো অফিসে নেই।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যখন এই প্রেস কাউন্সিল তৈরি করেন। তখনই চিন্তা করা হয়েছিল যে, সাংবাদিকদের মানোন্নয়নের জন্য চেষ্টা করবে এই কাউন্সিল। সাংবাদিকদের দুঃখ কষ্টের কথা ভাববেন তারা। প্রেস কাউন্সিল জন্ম থেকে যথেষ্ট কাজ করছে। সামনের দিনগুলোতেও করে যাবে।

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, সারাদেশের সাংবাদিকদের ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে। এটি চলতেই থাকবে। যাদের আবেদন বাতিল হয়েছে তারা সংশোধন করে আবার আবেদন করতে পারবেন। নীতিমালা অনুযায়ী সব সাংবাদিকদের ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি সাংবাদিকতার নীতিমালা মেনে সাংবাদিকদের কাজ করার আহ্বান জানান। সাংবাদিকতার মানোন্নয়নে  সাংবাদিকদেরকেরও চেষ্টা করে যেতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার। বাংলাদেশে প্রেস কাউন্সিলের তত্ত্বাবধায়ক মো. সাখাওয়াত হোসেনের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান বিপিএম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সুমী আক্তার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আনোয়ার প্রমুখ। এর আগে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জামালপুরের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন।

সাংবাদিকদের মধ্য থেকে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের সাংবাদিক হাফিজ রায়হান সাদা, দৈনিক কালের কণ্ঠের  সাংবাদিক মোস্তফা মনজু, দৈনিক সমকালের সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন মিন্টু, দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের সাংবাদিক মো. মনজুরুল হক, দৈনিক যায় যায় দিনের সাংবাদিক আইনজীবী মো. ইউছুফ আলী, বাংলাদেশ বেতারের সাংবাদিক ফজলে এলাহী মাকাম, দীপ্ত টিভির সাংবাদিক তানভীর আহমেদ হীরা, এনটিভির সাংবাদিক আসমাউল আসিফ প্রমুখ।