বিদেশি কূটনীতিকরা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায় : সিইসি

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক :

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ দেখতে চায় বিদেশি কূটনীতিকরা।

৪ জানুয়ারি বিকেলে রাজধানীতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান সিইসি।

তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে বিদেশি যারা বাংলাদেশে এসেছেন তাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কারণ কূটনীতিকরা বিভিন্ন সময় আমাদের দেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। তারা বিভিন্ন সময় নির্বাচন কমিশনের অফিসে এসেছেন, মতবিনিময় করেছেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, তারা যে মতবিনিময় করেছে তার মধ্যে সকলেরই একটা প্রত্যাশা ও চাওয়া ছিল, সেটা হল তারা আগামী নির্বাচনটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ দেখতে চায়। এটাকে তারা খুব গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।

তিনি বলেন, আজকের মতবিনিময় সভায়, নির্বাচন কমিশন থেকে খুব সংক্ষিপ্ত একটা স্টেটমেন্ট প্রদান করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা কোন অবস্থানে আছি সেটা তারা শুনেছেন, পরে টিবিসির মাধ্যমে কিছু তথ্যচিত্র বাংলায় তুলে ধরা হয়েছে। ছবি দেখে তারা বুঝেছেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, তারা জানতে চেয়েছেন অভিযোগ কি রকম পাচ্ছি? আমরা তাদেরকে জানিয়েছি যে, এপর্যন্ত আমরা প্রায় ৬০০ অভিযোগ পেয়েছি এবং প্রায় ৪০০ অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

অভিযোগ ছাড়াও রাষ্ট্রদূতরা ভোটের ফলাফল প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন উল্লেখ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরা তাদের জানিয়েছি, রেজাল্টের ব্যাপারে আমরা একটা অ্যাপ করেছি। স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজম্যান্ট অ্যাপ। আমরা তাদের অবহিত করেছি, প্রতিটি কেন্দ্রে পোলিং চলাকালে দুই ঘণ্টা পরপর যে তথ্য আমাদের প্রতিটি ইলেকশন সেন্টার থেকে পাওয়া যাবে, তা আপলোড করা হবে। আপলোড করা হলে যে কোনো নাগরিক পৃথিবীর যে কোনো স্থান বা বিদেশ থেকে এক্সেস নিয়ে জানতে পারবে ভোটের সংখ্যা কীভাবে কি হচ্ছে।

সিইসি বলেন, অ্যাপটা পরিচিত করার উদ্দেশ্য হলো, ক্রেডিবিলিটি বা স্বচ্ছতার অবস্থানটা আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করা। যেন তারা আশ্বস্ত হতে পারেন। যাতে কোটেশান দেখে সেন্টারে কোনো রকম অনিয়ম, কারচুপি বা অতিদ্রুত জাম্প হয়ে গেল কি না বা অবিশ্বাস্য কোনো কিছু ঘটেছে কি না, সেটা তারা জানতে পারেন।

ভোটের সময় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা নিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, আট লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী তারা পোলিং কালেকশানের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবেন। আরও এক লাখ স্ট্যান্ডবাই থাকবে। নয় লাখ প্রস্তুত আছে। আনসার, বিজিবি, পুলিশ, র্যা ব, আর্মি, নেভি ও কোস্টগার্ড সব মিলিয়ে আরও আট লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মাঠে আছে।

নির্বাচনে সহিংসতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, সহিংসতা আছে। তবে খুব কম।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন’, আরেকটা প্রশ্ন তারা করেছিলেন, ‘সরকার বা নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটারদেরকে ভোট দিতে যেতে কোন প্রকার চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে কিনা। আমরা বলেছি, চাপ সৃষ্টির কোন কারণই নাই। তবে আমাদের দায়িত্বের অংশ যখনই নির্বাচন করি তখনই ভোটার সাধারণের কাছে একটা আবেদন রাখি যেটা আমাদের দায়িত্বের অংশ। তা হল আপনারা ভোট কেন্দ্রে এসে অবাধে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এটা কোন চাপ নয় এটা সচেতনতা সৃষ্টি করা।’

একটি দল নির্বাচন বর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্জনটা যদি বর্জনের জায়গায় থাকে তবে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু ওখান থেকে পরে যদি তারা ভোটারদের এক প্রকার ভীতি দেখিয়ে বলে আপনারা যাবেনই না। তাহলে বরং একটা চাপ সৃষ্টি হতে পারে,এটা আমরা তাদেরকে জানিয়েছি। এছাড়া নির্বাচন সম্পর্কিত মৌলিক কিছু তথ্য তাদেরকে জানানো হয়েছে।

বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, মিশন প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান এবং বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধিসহ নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।সূত্র:বাসস।