শেরপুরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় বড়দিন পালিত

শেরপুরে বড়দিন উপলক্ষে কেক কাটেন খ্রিস্টধর্মানুসারীরা। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন
নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম:

শেরপুরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন পালিত হয়েছে। উৎসব ঘিরে জেলার সীমান্ত ঘেঁষা শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার গীর্জাগুলো রঙ্গিন কাগজ, ফুল এবং রঙবেরঙের আলোয় সাজানো হয়েছে। ক্রিসমাস ট্রি থেকে ঝুলছে আলোর মালা। বানানো হয়েছে খিস্টের জন্মের ঘটনার প্রতীকী গোশালা।

ঝিনাইগাতীর ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নবেশ খকশী বলেন, ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন হলেও আগের রাত থেকেই উৎসবে মেতে উঠেন তারা আর তাদের বাড়ি বাড়ি চলে উৎসবের আমেজ। মোট ৪৪টি স্থানে একই সময়ে প্রার্থনা, আলোচনা সভা ও কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, খ্রিস্টধর্ম অনুযায়ী, এই দিনে খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশুখিস্ট বেথলহেমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তারা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতে প্রভু যিশুর এই ধরায় আগমন ঘটেছিল।

তাই অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্টধর্মানুসারীরাও যথাযথ মর্যাদায় এই দিনে উৎসবটি উদযাপন করেন তারা।

সকাল সাড়ে ৭টা এবং সকাল সাড়ে ৯ টায় জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার মরিয়ম নগর সাধু জর্জের গীর্জায় শুরু হয় পবিত্র খ্রিস্টযাগ বিশেষ প্রার্থনা। বড়দিনের প্রার্থনায় অংশ নেয় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর হাজারও নারী-পুরুষ সহ শিশুরাও। খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন প্রধান পুরোহিত ফাদার বিপুল ডেভিড দাস সিএসসি।

স্থানীয় রত্না চাম্বুগং বলেন, বড়দিনের উৎসবকে ঘিরে বর্ণিল করে সাজানো হয়েছে গীর্জাগুলি। এতে ক্রিসমাস ট্রি আর আলোকসজ্জা ছিল নজরকাড়ার মতো।

এছাড়া গীর্জা ও এর আশপাশে রঙ্গীন বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা ও জরি লাগিয়ে গীর্জার ভেতর সুসজ্জিত করা হয়। ভেতরে সাজানো হয় ক্রিসমাস ট্রি গোশালা।

স্থানীয় অনিল ম্রং বলেন, বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান পরিবারে কেক তৈরিসহ বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয়। এছাড়া প্রতিটি বাড়িতে ধর্মীয় কীর্তনের পাশাপাশি বসে গানের আসর।

এদিন বড়দিন উপলক্ষে আয়োজিত মেলার দোকানগুলোতে ইংরেজি নতুন বছরের কার্ড, নানা রঙের মোমবাতি, সান্তা ক্লজের টুপি, জপমালা, ক্রিসমাস ট্রি, যিশু-মরিয়ম-যোসেফের মূর্তিসহ নানা জিনিস বিক্রি হতে দেখা যায়।

বড় দিন নির্বিঘ্নে পালনে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।