ইনশাল্লাহ নির্বাচন যথা সময়েই হবে : ইসি আলমগীর

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের তৎপরতা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, বিদেশিরা আমাদের ওপর কোনো চাপ দেন নাই। চাপ দেওয়ার অধিকারও নেই তাদের। আমরা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। বিদেশিরা জানতে চায়, আমাদের নির্বাচন সুন্দর, সুষ্ঠু, অবাধ করার জন্য আমরা কী কী ব্যবস্থা নিয়েছি। কার্যক্রমগুলো জানতে চায়। ওই কার্যক্রমের মাধ্যমেই তারা বুঝতে চায় আসলে একটি ভালো নির্বাচন করার জন্য যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন সেগুলো আমরা নিয়েছি কিনা। আমরা তো নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা দেখছি না। ইনশাল্লাহ নির্বাচন যথা সময়েই হবে।

৬ ডিসেম্বর সকালে জামালপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় সভা করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। সভায় সভাপতিত্ব করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান। মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।

নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নে তিনি বলেন, যদি ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে আমরা করতে পারি। ভোটাররা যাতে অবাধে ভোট দিতে পারে। প্রার্থীরা এবং সমর্থকরা ভোটের নির্বাচনের প্রচার করতে পারে, নিজের ইচ্ছে মতো ভোট দিতে পারেন। নিজের ইচ্ছে, তার মানে এই না যে একজনের ভোট আরেক জনে দিবে, সেটা না। সুষ্ঠু স্বাধীনভাবে ভোটাররা যাতে ভোট দিতে পারে, এই বিষয়গুলোই নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা সকল কর্মকর্তাদের পরামর্শ দিয়েছি। এগুলো হলেই দেখা যাবে ভোটার উপস্থিতি ভালো হবে। একটি সুন্দর সুষ্ঠু ভোট হলে, সেখানে যদি ভোটার উপস্থিতি ভালো হয়। অবশ্যই সেটা দেশে বিদেশে গ্রহণযোগ্য হবে।

নির্বাচনি আচরণ বিধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি নামকরা ব্যক্তিরাও আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ফেলেছেন। তাদেরকে শোকজ করা হলে তখন তারা বলেন, আমি তো কখনো রাজনীতি করি নাই। বিধি ভঙ্গ হচ্ছে তা জানতাম না। আমি ক্ষমা চাচ্ছি। কিন্তু এমন যদি হয় যে একই অপরাধ বার বার করে যাচ্ছেন। অথবা অপরাধের মাত্রাটা এমন যে অন্যের ক্ষতি হয়ে গেছে। তখন তো তাকে শোকজ করেই ছেড়ে দেওয়া হবে না। তখন তাকে আর ক্ষমা করা হবে না।

বিএনপির নির্বাচনে না আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে না আসতে চেষ্টা করে। সেটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। সে না আসতেই পারে। সে বিষয়ে কারো হস্তক্ষেপের কোনো অধিকার নাই। নির্বাচন কমিশনের তো নাইই। নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে আইনশৃংখলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। ভোটের দিনও থাকবে। নির্বাচনের বিপক্ষে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে যারা, বিষয়টি আইন শৃংখলা বাহিনী দেখবে। যারা অন্যায় কাজ করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা রয়েছে।

ভোট কেন্দ্রে সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ভোটকেন্দ্রে তথ্য সংগ্রহে কড়াকড়ি করলে সাংবাদিকরাই তো বিরক্ত হোন। আমরা এবার কড়াকড়ি করি নাই। বরঞ্চ সাংবাদিকদের জন্য আরও শিথিল করে দিয়েছি। যারা প্রকৃত সাংবাদিক তারাই শুধু পর্যবেক্ষক কার্ড পাবেন। প্রকৃত সাংবাদিকরাই মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারবেন। সেই মোটরসাইকেলের লাইসেন্স ও ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে অনুমতি নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। কেন্দ্র থেকে লাইভ প্রচার করতে চান। রেকর্ড করতে চান। কারো সাক্ষাতকার নিতে চান। পাবেন। কিন্তু ভোট কক্ষের ভেতরে এসব করা যাবে না। কক্ষের ভেতরে ছবি তুলতে পারবেন। কিন্তু লাইভ প্রচার করতে পারবেন না। কক্ষের ভেতরে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করা যাবে না। এতে ভোট প্রদানের গতি কমে যায়।