সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনায় ২২ জনের মামলা, প্রধান আসামিসহ আটক ১০
জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু, বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুরের বকশীগঞ্জে বাংলা নিউজ ২৪ ডটকম এর জেলা প্রতিনিধি ও বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার ঘটনায় ২২ জনের নামে ও অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহত সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ১৭ জুন দুপুরে বকশীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ।
ওই মামলায় সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু ও তার ছেলে ফাহিম ফয়সাল রিফাতসহ অনেককেই আসামি করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে নাদিম হত্যার প্রধান অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ১৭ জুন সকালে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী চর তিস্তাপাড় এলাকা থেকে আটক করেন বলে জানিয়েছেন জামালপুর জেলা পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ।
অপরদিকে নাদিম হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনায় আটককৃত ৯ জনকে ১৭ জুন দুপুরে জামালপুর আদালতে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ।
সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যার ঘটনায় খুনিদের বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে বকশীগঞ্জ উপজেলাসহ সারাদেশ।
হত্যার ঘটনায় পুরো সাংবাদিক সমাজসহ স্থানীয় এলাকাবাসী দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন।
সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সাংবাদিক নাদিমের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। খুনিদের ফাঁসির দাবি করেছেন নাদিমের পরিবারসহ পুরো এলাকার মানুষ।
১৭ জুন দুপুর ১২টায় বকশীগঞ্জের কর্মরত সাংবাদিকরা নাদিমের খুনিদের ফাঁসির দাবিতে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। একই দিন বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আরেকটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষুব্ধরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির দাবি জানান।
নিহত সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামীর হত্যাকারীরা যেন পার না পায়। খুনি মাহমুদুল আলম বাবু ও তার ছেলে রিফাতসহ সকলের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান তিনি।
বকশীগঞ্জ থানার ওসি মো. সোহেল রানা জানান, সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিসহ ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে থানা পুলিশের হাতে ৯ জনকে জামালপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে পৌর শহরের কাচারীপাড়ায় নিজ বাসায় ফেরার পথে ১৪ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে টেনে হিচড়ে নামিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয় সাংবাদিক নাদিমকে। এক পর্যায়ে তাকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত অবস্থায় ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর উপস্থিতিতে তার ছেলেসহ কয়েক জন ইট দিয়ে আঘাত করে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে মারাত্মকভাবে আহত করে। ১৫ জুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নাম উঠে আসে।