
বিল্লাল হোসেন মন্ডল, দেওয়ানগঞ্জ প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় পতিত জমিতে পানিফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। পানিফলের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।
দেশে প্রথম পানিফল চাষ শুরু হয় দেওয়ানগঞ্জে। অল্প সময় ও কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় পানিফল চাষে অনেক আগ্রহী হয়ে উঠেছে চাষিরা।
উপজেলায় পানিফল উৎপাদনে সফলতা পাওয়ায় অন্যান্য উপজেলার চাষিরা অনুপ্রাণিত হয়ে চাষাবাদ পদ্ধতি শিখে তাদের পতিত জমিতে পানিফল চাষ শুরু করেছে।
বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ পানিফলের গাছ ৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পানির নীচে মাটিতে শিকড় থাকে পানির উপর পাতাগুলি ভাসতে থাকে। বিভিন্ন পতিত ডোবা, খাল, পুকুরের অল্পপানিতেই পানিফল চাষ করা যায়।
২৯ অক্টোবর দুপুরের পৌরসভার বাদেশাশারিয়া এলাকার পানিফল চাষি আসলাম হোসেন বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পানিফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ১৬ মণ হয়েছে। বিঘা প্রতি তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ করে মণ প্রতি হাজার বারোশ টাকা বিক্রি করে বিঘায় ১৫ হাজার টাকা লাভ পাইছি।
ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি ২ বিঘা জমিতে পানিফল চাষ করে ৩০ মণ ফল পেয়েছি। এতে প্রায় ৩২ হাজার টাকা হাতে পেয়েছি। খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। অল্পপুঁজি ব্যয় করে লাভ বেশি। খেতেও সুস্বাদু।
আবু হানিফ বলেন, আমরা পতিত জমিতে পানিফলের চাষকরে আসছি। লাভবান হলেও সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা তো দূরের কথা কৃষি অফিসের কোনো অফিসার খোঁজও নেয় না। এবার পানিফল চাষের খরচ হয়েছে বিঘা প্রতি ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। আশা করি এবার প্রতি বিঘাতে ফল বিক্রি করতে পারবো ১৬ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকা। এই ফল চাষে বর্তমানে আমাদের আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলেছে। অঞ্চলে বদ্ধ জলাশয়ে পানিফল চাষ করে সাবলম্বী হয়ে উঠছে অনেক হতদরিদ্র পরিবার।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস জানান, এবছর উপজেলায় ১০৫ হেক্টর জমিতে পানি ফলের চাষ হয়েছে। পানিফল কৃষিতে নতুন এক সম্ভাবনাময় ফসল। আমাদের কৃষি বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে পানিফল চাষের বিস্তার ঘটাতে। যেকোন পতিত খাল, পুকুর, ডোবা অথবা জলাশয়ে চাষ করা সম্ভব। তুলনামূলক এর উৎপাদন খরচ কম। এবার বন্যার প্রবলতা কম থাকায় পানিফল চাষের আগ্রহ পাচ্ছেন এই উপজেলার চাষিরা। বিঘাপ্রতি ৩৫-৪০ মণ এবং চলিত বছরে প্রায় ৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা বিনিয়োগ হতে পারে।