তালাক গোপন রেখে শারীরিক সম্পর্ক, সাবেক স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম: শেরপুরে তালাক দেওয়ার পর বিষয়টি গোপন রেখে সাবেক স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক রাখার অভিযোগে ধর্ষণ মামলায় সাবেক স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। একইসাথে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। ২৩ নভেম্বর দুপুরে একমাত্র আসামির অনুপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন বিচারক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।

দণ্ডপ্রাপ্তর নাম শাহ আলী। তার বাড়ি জেলার শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আবু বকরের ছেলে।

ট্রাইব্যুনালের মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার মধ্যবয়ড়া গ্রামে এক কৃষক পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করেন শাহ আলী। দাম্পত্য জীবনের এক পর্যায়ে স্বামী শাহ আলীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন স্ত্রী। ওই মামলায় ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে শাহ আলী ২০১২ সালের ১৩ মে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন মর্মে কাগজপত্র উপস্থাপন করেন।

পরে সেই তালাকের বিষয়টি গোপন রেখে প্রায় আড়াই বছর সাবেক স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক বহাল রাখায় ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি শাহ আলী এবং তার মা-বাবাসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও সহায়তার অভিযোগে থানায় মামলা করেন প্রতারণার শিকার সেই গৃহবধূ।

ট্রাইব্যুনালের পিপি আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, ঘটনার তদন্ত শেষে একই বছরের ৮ জুন চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন শ্রীবরদী থানার তৎকালীন এসআই আবুল কালাম। পরে পলাতক থাকা শাহ আলীর বিরুদ্ধে ওই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এক পর্যায়ে তিনজনকে অব্যাহতি দেয় ট্রাইব্যুনাল।

আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া বুলু আরও জানান, বিচারিক পর্যায়ে বাদী-ভিকটিম, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় শাহ আলীকে ওই সাজা দেওয়া হয়।