জামালপুরের ইউনাইটেড হাসপাতাল বন্ধের আদেশ

জরিমানায় দণ্ডিত ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. সাঈদ আহমেদ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

মেয়াদোত্তীর্ণ সনদ এবং নানা অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে ক্লিনিক পরিচালনার দায়ে জামালপুর শহরের স্টেশন বাজার এলাকায় ইউনাইটেড হাসপাতাল নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ক্লিনিকটি বন্ধ রাখার আদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম ও জামালপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম মাজহারুল ইসলাম ৪ নভেম্বর রাতে এ রায় দেন।

জানা গেছে, জামালপুর শহরের পশ্চিম ফুলবাড়িয়া এলাকার সেনাসদস্য মো. রকিবুল ইসলাম তার ১৩ বছরের শিশু ছেলে সাজ্জাদ হোসেন স্বাধীনের ডান পায়ের ব্যথার চিকিৎসা করাতে ৩ নভেম্বর স্টেশন বাজার এলাকায় ইউনাইটেড হাসপাতালে যান। শিশুটির ডান পায়ে এক্স-রে করা হলেও হাড়ভাঙা ধরা পড়েনি। কিন্তু ক্লিনিকের চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম (৭০) শিশুটির পা প্লাস্টার করে দেন এবং অনেকগুলো ওষুধ লিখে দেন। হাড় না ভাঙলেও কেন প্লাস্টার করা হলো এ নিয়ে চিন্তিত শিশুটির বাবা মো. রকিবুল ইসলাম ৪ নভেম্বর ফের ওই ক্লিনিকে যান এবং প্লাস্টার খোলান। এ ধরনের ভুল চিকিৎসার ঘটনাটি জানাজানি হলে ওই ক্লিনিকে অনেক লোক ভিড় করেন।

খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম এস এম মাজহারুল ইসলাম রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই ক্লিনিকে যান। তিনি ক্লিনিকটি ঘুরে দেখেন এবং নানা অব্যবস্থাপনার প্রমাণ পান। পরে ২০০৯ সালের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৩৯ ধারায় ক্লিনিকটির ব্যবস্থাপক মো. সাঈদ আহমেদকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে সনদ নবায়ন না করা পর্যন্ত ক্লিনিকের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার আদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এছাড়া ভুল চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগে চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলামের ডাক্তারি সনদপত্র দেখাতে বললে তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তবে তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেছেন এবং সর্বশেষ ২০০৭ সালে চট্টগ্রামের বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (অর্থো) পদ থেকে অবসর নেন। তার বাড়ি জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলায়।

আদালতের বিচারক এস এম মাজহারুল ইসলাম ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে জরিমানা এবং ক্লিনিকটি বন্ধ রাখার আদেশটি নিশ্চিত করে বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ‘ভুল চিকিৎসা দেওয়া ওই ডাক্তারের বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।