পাঁচ দফা দাবিতে জামালপুরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিকদের ডাকে ২ নভেম্বর, রবিবার ভোর ৬টা থেকে দুপর ২টা পর্যন্ত লাগাতার ধর্মঘট পালন করা হয়। এ সময় সবধরনের অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকে। এতে স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী লোকজনসহ সাধারণ মানুষ গন্তব্যে পৌঁছতে চরম দুর্ভোগের শিকার হন।

অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার্থীদের জন্য বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা ফ্রি মোটরবাইক সার্ভিসের ব্যবস্থা করেন। এতে নেতৃত্ব দেন আঁখি। এছাড়াও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ শাখার নেতা-কর্মীরাও মোটরসাইকেলে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেন।
ধর্মঘট শেষে সহস্রাধিক অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনকারী দলের প্রতিনিধিরা তার কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় জামালপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক মৌসুমী খানম, মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম, জামালপুর সদর থানরা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুস সাকিব, ইসলামী আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার সভাপতিসহ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও পৌরসভার কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আন্দোলকারীদের পক্ষে কথা বলেন শাহ্ ফতে উল্লাহ হামেদী, চান মিয়া, শেখ মেহের, খায়রুল প্রমুখ।

বৈঠকে পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লাল সবুজের রং ব্যবহার বাধ্যতামূলক, সাতদিনই প্রতিটি অটোরিকশা শহরে চলাচল করবে। জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যতীত গাড়ি নিবন্ধন হবে না। একজন ব্যক্তি একটাই লাইসেন্স পাবেন, পৌরসভার বাইরে কোন অটোরিকশা চলবে না, পৌরসভার বাইরে থেকেও কোন গাড়ি ঢুকতে পারবে না, পৌরসভা ব্যতীত কোন মহাসড়কে অটোরিকশা চলবে না বলে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
এছাড়াও লাইসেন্স নবায়ন ফি অটোরিকশা তিন হাজার টাকা, মিশুক অটোরিকশা দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। প্রতিটি অটোরিকশার ডান পাশে বেরিয়ার দিতে হবে। লাইসেন্সবিহীন ও রংবিহীন গাড়ি ধরা পড়লে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও রোগী বহনকারী অটোরিকশা শহরে বা শহর থেকে বাইরে চলাচল করতে পারবে এবং লাইসেন্স হস্তান্তর যোগ্য নয় বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।।
সমঝোতার পর সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বিস্তারিত সিদ্ধান্তগুলো উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক মৌসুমী খানম। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমঝোতার শর্তাবলী পাঠ করে শোনান মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম।

প্রসঙ্গত, ধর্মঘট আহ্বানের আগে জামালপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করেন আন্দোলনকারী অটোরিশা মালিক ও শ্রমিকেরা। তাদের দাবিগুলো ছিল- ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছর থেকে লাইসেন্স কার্যকর করতে হবে। লাইসেন্স নবায়ন ফি অটোরিকশা সাড়ে তিন হাজার টাকা থেকে কমিয়ে দুই হাজার ৫০০ টাকা এবং মিশুকঅটোরিকশা দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে দুই হাজার টাকা ধার্য করতে হবে। অটোরিকশার কোন আলাদা আলাদা রং থাকবে না ও এক লাইসেন্সের বিপরীতে সাত কর্ম দিবস অটোরিকশা চালানোর সুযোগ করে দিতে হবে। অন্য কোন জেলার অটোরিকশা জামালপুর জেলায় প্রবেশ করতে পারবে না। জামালপুর জেলার সাত উপজেলাতেই অটোরিকশার প্রবেশাধিকারের দাবিও তারা করেছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলারচিঠিডটকম 


















