জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় দিনব্যাপী পুষ্টি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) দেওয়ানগঞ্জ চিকাজানী ইউনিয়নের রামপুরে এ মেলার আয়োজন করে “জেন্ডার ইনক্লুসিভ মার্কেট সিস্টেমস ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন -GESMIN প্রকল্প।
মেলা উদ্বোধন ও প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতাউর রহমান। উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি সময়োপযোগী এমন একটি আয়োজন করার জন্যে ওয়ার্ল্ড ভিশন ও উন্নয়ন সংঘ কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, অপুষ্টির হাত থেকে সন্তানকে রক্ষা করতে হলে পুষ্টি সচেতনতার বিকল্প নেই।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সম্পর্কে নানা তথ্য ও বার্তা তুলে ধরা হয়। পুষ্টি মেলায় প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল- খাদ্য নিরাপত্তা, অনিরাপদ খাদ্যের কারণ, খাদ্য নির্বাচন ও ক্রয়, সংরক্ষণ, নিরাপদভাবে রান্না এবং পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস। এছাড়া কিভাবে পরিবেশবান্ধব উপায়ে পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে তোলা যায় এবং আয়ের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন সম্ভব, তাও তুলে ধরা হয়।
মেলায় ছয়টি থিমভিত্তিক সচেতনতামূলক স্টল স্থাপন করা হয়। এগুলো হলো- পরিবেশবান্ধব পারিবারিক পুষ্টি বাগান, পারিবারিক পুষ্টি ও সুষম খাবার, নিরাপদ খাদ্য কর্নার, কিশোরী পুষ্টি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নারী-পুরুষের সমতায় পুষ্টির প্রভাব এবং পারিবারিক পুষ্টি উন্নয়নে আয়ের ভূমিকা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর আজাদ, কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার মোখলেসুর রহমান, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন জেসমিন প্রকল্পের নিউট্রিশন স্পেশালিস্ট নাহিদা ইসলাম আখি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেসমিন প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী মো. শরীফ উদ্দিন।
সভায় ফাইভ জিরো প্লাস এবং এনাফ ক্যাম্পেইন”-এর অন্তর্ভুক্ত গ্লোবাল মে মোমেন্ট ২০২৫ ‘পুষ্টি থেকে সমৃদ্ধ হও’ প্রতিপাদ্যের উপর বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয়।
আলোচনায় বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি চ্যালেঞ্জসমূহ উঠে আসে। অপুষ্টির ফলে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবার করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। এনাফ ক্যাম্পেইনের মত উদ্যোগগুলো এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন। আয়োজনে অংশগ্রহণকারী সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন।

জামালপুর : বাউল শিল্পীরা পুষ্টি বিষয়ক বাউল সংগীত পরিবেশন করেন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম
আলোচনার পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পর্বে জামালপুরের খাজা বাবা সত্য বাউল সংঘ নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ে লোকসংগীত পরিবেশন করে মুগ্ধতা ছড়ান। মেলায় অংশ নেন করেন স্থানীয় কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, মা ও শিশু, কিশোর-কিশোরীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ান সরকারের সহায়তায় পরিচালিত অস্ট্রেলিয়ান এনজিও কো-অপারেশন প্রোগ্রামের (ANCP) আওতায় ‘নিউট্রিশন সেনসিটিভ ভ্যালু চেইন’ (NSVC) প্রকল্প ২০১৮-২০২৩ পর্যন্ত জামালপুর জেলায় বাস্তবায়িত হয়। তারই বর্ধিত অংশ হিসেবে ২০২৩ সাল থেকে সদর, মেলান্দহ, ইসলামপুর এবং দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় GESMIN প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।