জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় সাংবাদিককে থানায় প্রবেশে বাধা ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার চর গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহাবুব আলম রতনের বিরুদ্ধে। ২৩ এপ্রিল বুধবার দুপুরে মাদারগঞ্জ মডেল থানার প্রধান ফটকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে জামায়াত নেতা ও আল আকাবা বহুমুখী সমবায় সমিতির পরিচালক মাহবুবুর রহমানকে আটক করে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে সমিতির আমানতকারীরা। এটা জানাজানি হলে ২৩ এপ্রিল বুধবার সকালে ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা মাদারগঞ্জ মডেল থানার প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও যুগান্তরের প্রতিনিধি মির্জা হুমায়ুন কবীর এবং প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আমার দেশের উপজেলা প্রতিনিধি খাদেমুল ইসলাম তথ্য সংগ্রহের জন্য সেখানে যান।
তারা প্রায় দেড় ঘণ্টা থানার প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে ফোন করে ভেতরে যাওয়ার ব্যাপারে জানার চেষ্টা করা হলেও ওসি হাসান আল মামুন কোন সাড়া দেননি। পরে থানার প্রধান ফটক খোলার পর তথ্য সংগ্রহের জন্য থানায় প্রবেশের চেষ্টা করলে সমবায় সমিতির টাকা উদ্ধার কমিটির সদস্য ও চর গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহাবুব আলম রতন সাংবাদিক খাদেমুল ইসলামকে ভেতরে প্রবেশে বাধা দেয় ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক মাহাবুব আলম রতনকে ২৩ এপ্রিল উপজেলার আমরিতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাব ক্লাস্টার প্রশিক্ষণের অংশ নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি প্রশিক্ষণে হাজির না থেকে থানার সামনে সমবায় সমিতির আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চর গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিরিনা আক্তার এ প্রতিবেদককে বলেন, মাহাবুব আলম রতন আমার সাথে প্রশিক্ষণ করছেন। উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা দুলাল মিয়াও জানান মাহাবুব আলম সকাল থেকে প্রশিক্ষণে আছে।
কিন্তু প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। শিক্ষক মাহাবুব আলম রতন প্রশিক্ষণে উপস্থিত নেই। কিন্তু প্রশিক্ষণার্থীদের হাজিরার খাতায় মাহাবুব আলম রতনের সাক্ষর রয়েছে। এসময় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা দুলাল মিয়াকে প্রশিক্ষণ করাতে দেখা যায়। মাহাবুব আলম রতনের অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, আপনি লিখিত অভিযোগ দেন তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রশিক্ষণ ফেলে আন্দোলনে অংশ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক মাহাবুব আলম ফোনে বলেন, তোমার যা ক্ষমতা আছে, তুমি করো। এ বিষয়ে কিছু বলব না।
মাদারগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মির্জা হুমায়ুন কবির এ প্রতিবেদককে বলেন, থানায় প্রবেশ করতে শিক্ষক কেন সাংবাদিককে বাধা দিবে। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সাংবাদিককে থানায় প্রবেশে বাধা প্রদানের বিষয়ে জানার জন্য মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুনকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি সাড়া দেননি।