চলতি বছর বৈশাখী মেলা শুরু না হলেও জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে তিনদিনব্যাপী শুরু হয়েছে বৈশাখী লোকনাট্য উৎসব। ২০ এপ্রিল রবিবার শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইফতেখার ইউনুছ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফাহিম মালেক ইভান, জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার সাদিয়া বিনতে আফজল।

লোকনাট্য উৎসবে উদ্বোধনী দিনে ঐতিহ্যবাহী ধুয়া গান পরিবেশন করেন জাবেদ আলী ও তার দল। সত্তরোর্ধ দলনেতাসহ ১০ সদস্য বিশিষ্ট অন্যান্য শিল্পীরা হলেন ইউনুছ আলী, শাহাজ উদ্দিন, বাদশা মিয়া, দেলোয়ার হোসেন, আবু বকর, শাহা আলী, মোস্তফা, মোহাম্মদ রফিক ও হোসেন আলি। সকল শিল্পীর বয়স ষাটোর্ধ হলেও দলীয় পরিবেশনা এবং গানের আসরে উপস্থিত দুইশতাধিক দর্শক শ্রোতা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেন।
আয়োজক সংস্থা জানান তিনদিনব্যাপী লোকনাট্য উৎসবে অন্যান্য আয়োজনে থাকবে পালা নাটক, পুতুল নাচ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইফতেখার ইউনুছ বলেন, আমাদের হারিয়ে যাওয়ার পথে হাজার বছরের লালিত সংস্কৃতি পুনরুদ্ধারে শিল্পকলা একাডেমির এ ধরনের উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি সবাইকে উৎসবে আসার আহ্বান জানান।

ধুয়া গানের সাথে নগরবাসীর পরিচিতি এই প্রথম বলে জানান উৎসবে আসা একাধিক দর্শক শ্রোতা মত ব্যক্ত করেন। অনেকেই বলে এ ধরনের গান আমাদের শেকড়ের সন্ধান দেয়। এসব গানে বাঙালির শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে প্রেরণা দিবে বলেও সবাই মত ব্যক্ত করেন।
ধুয়া গানের দলনেতা জাবেদ আলী আক্ষেপ করে বলেন, এ ধরনের মাটি, মানুষের গান এখন কেউ আর শিখতেও চায় না, শুনতেও চায় না। তিনি বলেন, আমি আমার বাবা শমসের বয়াতির কাছে শিখে তার সাথে পালা করেছি। সময়ের ব্যবধানে আমার সন্তান, নাতিরা এসব শিখতে চায় না। জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া পলাশতলায় ধুয়া গানের একটি মাত্র দলের অস্থিত্ব আছে। অনেক সদস্যই মারা গেছেন। উদ্বোধনী দিনে একটানা সাতটি গান পরিবেশন করে জাবেদ আলী বয়াতীর দল।