জামালপুরের সরিষাবাড়ী থানা পুলিশের প্রচেষ্টায় নিখোঁজ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোর ছাব্বির হোসেনকে (১৫) ফিরে পেয়ে খুশি তার মা ও পরিবারের স্বজনেরা। ১৮ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে তাকে তার মা মালেহা বেগমের কাছে বুঝিয়ে দেন সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া।ছাব্বির হোসেন চাপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চামা গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে।
পুলিশ ও ছাব্বিরের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোর ছাব্বির হোসেন।এরপর তার পরিবারের আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজে না পেয়ে স্থানীয় থানায় বিষয়টি জানিয়ে রাখেন। এরপর ১৬ এপ্রিল বুধবার সকালে উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের বারইপটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর সময় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোর ছাব্বির হোসেনকে খুঁজে যায় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমদাদুল হক।
পরে তাকে সরিষাবাড়ী থানায় নিয়ে যান ওই শিক্ষক। পুলিশ শিশুটির পরিবারকে খুঁজে পেতে শিশুটির ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন থানার ওসি চাঁদ মিয়া। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ায় একদিনের মধ্যে থানায় গিয়ে কিশোর সাব্বিরের খোঁজ পান বৃদ্ধা মা মালেহা বেগম। এ সময় হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে ফিরে পেয়ে খুশিতে কান্নায় ভেঙে পড়ে মা মালেহা বেগম।

ছাব্বির হোসেনের মা মালেহা বেগম এ প্রতিবেদককে বলেন, ১০ এপ্রিল তার ছেলে ছাব্বির বাড়ি থেকে হারিয়ে যায়। এরপর প্রতিবেশীদের কাছে জানতে পারের ছেলে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে রয়েছে। তারপর থানার ওসি সাহেবের সঙ্গে ফোনে কথা বলে নিশ্চিত হই। এরপর থানায় গেলে ছেলেকে বুঝিয়ে দেন পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সন্তানসহ দুই সন্তান রেখে স্বামী তাকে রেখে নিরুদ্দেশ হন। এরপর সন্তান দুটিকে নিয়ে বহুকষ্টে জীবনযাপন করছেন তারা। ছেলের খোঁজ পেয়েও গাড়ি ভাড়ার টাকা পয়সা না থাকায় থানায় আসতে পারছিল না। থানার ওসি গাড়িভাড়ার খরচ দেওয়ার আশ্বাস দিলে ছেলেকে নিতে বাড়ি থেকে থানার দিকে রওনা দেন বলে জানান তিনি।
প্রধান শিক্ষক ইমদাদুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে ঘোরাঘুরি করছিল বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাব্বির হোসেন। কথা না বলতে পারায় সরিষাবাড়ী থানায় জানাই। পরে থানার ওসি ছাব্বির হোসেনের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করলে পরিবারের লোকজন তার সন্ধান পান। ১৮ এপ্রিল দুপুরে শিশুটির মা মালেহা বেগমের কাছে বুঝিয়ে দেন থানার ওসি।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার ওসি চাঁদ মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, পিংনা ইউনিয়নের বারইপটল এলাকায় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছাব্বির হোসেনকে ঘুরতে দেখে থানায় ফোন দেন ওই স্থানীয় বারইপটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমদাদুল হক। পরে ছাব্বির হোসেনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তার সন্ধান পান তার মা। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে ১৮ এপ্রিল দুপুরে ছাব্বির হোসেনকে তার মা মালেহা বেগমের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।