বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলাম বলেন, তরুণ ছাত্রসমাজের জন্যই আজ আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এই ছাত্ররা চায় একটি ‘ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ’ গড়তে, এর জন্য আমাদের সকলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। তাহলেই ন্যায়ভিত্তিক একটি সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
২০ মার্চ বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও উলামায়ে কেরামদের সম্মানে শেরপুর পৌর শহরের জি কে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে শেরপুর শহর ও সদর জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাফেজ রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করেছে। এই ক্রান্তিকালে আমরা আপনাদের সাথে অনেক কিছুই শেয়ার করতে পারিনি এটা সত্য, কিন্তু আমরা নানাবিধভাবে আপনাদের আশেপাশেই ছিলাম। এ সময়ে জুলুম নির্যাতনের জন্যই আমাদের এ পথ বেছে নিতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের ছাত্র আন্দোলনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের শত শত ভাইকে আমরা হারিয়েছি, অসংখ্য বোন এ দেশ থেকে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশান্তর হয়েছেন। অনেক ভাই-বোন পঙ্গুত্ববরণ করেছেন।

আমরা এই জুলুম-নির্যাতনের প্রান্ত সীমায় দাঁড়িয়ে বলব, তরুণ ছাত্রসমাজের মাধ্যমে যারা আমাদের একটা বিজয় এনে দিয়েছে তারা বলছেন, তারা একটি ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ গড়তে চায়। আমি বলব, আমরা যারা ইসলাম চর্চা করি তাদের জন্য কিন্তু এ বক্তব্যটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমি মনে করি, একটি ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ তৈরি করা শিক্ষিত সমাজের দ্বারাই সম্ভব। আজকের এই ইফতার মাহফিলে উপস্থিত রয়েছেন জাতির বিবেক শিক্ষক এবং সম্মানিত আলেমগণ, এ উভয়পক্ষ যদি আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি তাহলে সমন্বিতভাবে এই বাংলাদেশকে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশে পরিণত করা জাস্ট সময়ের ব্যাপার মাত্র ইনশাআল্লাহ। আর আমাদের এ সুযোগটা করে দিয়েছে আমাদের সূর্য সন্তান ছাত্ররাই।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে আমাদের শুধু রাজনৈতিক না, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে আমরা নাজুক অবস্থায় রয়েছি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে।
রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমাদের এ সমাজে রোজা পালনের ক্ষেত্রে মানুষের যে আগ্রহ ও আকাঙ্ক্ষা রয়েছে এটা যদি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সকল ইবাদতের ক্ষেত্রে থাকতো তাহলে আমরা কতই না মর্যাদাপূর্ণ হয়ে যেতাম।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শেরপুর শহর ও সদর উপজেলা শাখা আয়োজিত এ ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন জেলা আমীর মাওলানা হাফিজুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সাবেক জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল বাতেন, কর্মপরিষদ সদস্য ডা. আনোয়ার হোসাইন, মাওলানা আব্দুল আওয়াল, শহর আমীর মাওলানা নুরুল আমিন, সদর উপজেলা আমীর মাওলানা আতাউর রহমান, সদর নায়েবে আমীর মাওলানা নূর-ই আলম সিদ্দিকী, সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুস সোবহান, শহর সেক্রেটারি ডা. হাসানুজ্জামান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শহর শাখার সহ-সেক্রেটারি প্রভাষক মো. জাহিদ আনোয়ার।
ইফতার মাহফিলে প্রায় এক হাজার শিক্ষক ও উলামায়ে কেরাম অংশগ্রহণ করেন।