জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় যমুনার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে নতুন পলি মাটিতে লাল সোনা খ্যাত মরিচের চাষ হয়েছে। এখন চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ক্ষেত রাঙাচ্ছে লাল মরিচ। এই মৌসুমে চরাঞ্চলে মরিচের অধিক ফলন হয়েছে। তবে কাঁচা মরিচের কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় হতাশ মরিচ চাষীরা। গেলো বছর মরিচ চাষে লাভের মুখ দেখলেও চলতি বছর লোকসানের শঙ্কায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তপ্ত রৌদে মরিচ শুকাচ্ছেন চাষীরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইসলামপুর উপজেলার যমুনা, ব্রহ্মপুত্র নদীবেষ্টিত কুলকান্দি, সাপধরী, চিনাডুলী, বেলগাছা, গোয়ালেরচর, চরগোয়ালিনী, চরপুটিমারি, গাইবান্ধা ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে মরিচের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের ফলনও হয়েছে অধিক। চলতি বছর মরিচের ফলন ভাল হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। চলতি মওসুমে কাঁচা মরিচের বাজার দর কম থাকায় লাভের মুখ দেখা তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠানো নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা।
যমুনার বিস্তীর্ণ চরে উৎপাদিত কাঁচা মরিচ ও শুকনো মরিচ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কিনতে আসেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি সপ্তাহে ইসলামপুরের উলিয়া ও গুঠাইল বাজারে বসে মরিচের হাট। এই হাট থেকে ব্যাপারিরা মরিচ কিনে চরের তপ্ত বালুর ওপর শুকিয়ে নিয়ে যান রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে।
কৃষকেরা জানান, এবার মরিচের ফলন অনেক ভাল। তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় মরিচ গাছ মরেনি। এছাড়া এবার রোগবালাই ও পোকা মাকড়ও আক্রমণ করেনি। কৃষি দপ্তরের পরামর্শে রোগবালাই দমনের জন্য সব ধরনের পরামর্শ নেয়া হয়েছে। কিন্তু ফলন ভাল হলেও বাজারে মরিচের দাম নেই।
গুঠাইল হাটের মরিচ ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, এ বছর মরিচ চাষীদের মাথায় হাত। বাজারে মরিচের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় কম দামে তিনতে পারছি।
মরিচ চাষী সোলায়মান হোসেন বলেন, এ বছর কাঁচা মরিচ পাইকারি ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা কেজি এবং খুচরা ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা। সেই টাকা মরিচ তোলার শ্রমিকদের দিতেই শেষ হয়ে যায়। সেজন্য কাঁচা মরিচ না বেচে শুকনো মরিচ বেচতে তপ্ত বালুতে শুকাচ্ছি। লাভবান হওয়ার আশায় অনেকেই মরিচ শুকাতে তপ্ত রৌদে দিন পার করছেন।
ইসলামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এল এম রেজুয়ান এ প্রতিবেদককে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে দাম নিয়ে হতাশ কৃষকেরা। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি। আমাদের পরামর্শ নিয়ে দেশি বালিঝুড়িসহ বিভিন্ন হাইব্রিড প্রজাতির মরিচ চাষ করে অধিক ফলন পাচ্ছে চাষীরা। এ বছর ইসলামপুর উপজেলায় তিন হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।