ঢাকা ০৯:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ১৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নয়াদিল্লিতে পদদলিত হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু

১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাতে ভারতের রাজধানীর নয়াদিল্লির একটি রেলস্টেশনে হিন্দু সম্পদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ কুম্ভ মেলায় যাওয়ার জন্য ট্রেনে উঠতে গিয়ে হুড়োহুড়ির মধ্যে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। একজন মেডিকেল অফিসারের উদ্ধৃতি দিয়ে নয়াদিল্লি থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

প্রতি ১২ বছর পরপর উত্তর ভারতের প্রয়াগরাজে আয়োজিত কুম্ভ মেলায় লাখ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী অংশ নেন। অনেক মানুষের ভিড় থাকায় অতীতে এই মেলাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত মাসেও গঙ্গা, যমুনা এবং পৌরাণিক সরস্বতী নদীর পবিত্র সঙ্গমস্থলে আরেক দফা পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ৩০ জন মারা যান।

এই অনুষ্ঠানের যোগ দেয়ার জন্য ট্রেনে উঠতে গিয়ে ভিড়ের কারণে শনিবার নয়াদিল্লির রেলস্টেশনে হুড়োহুড়ির কারণে এ ঘটনা ঘটে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি এই মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

লোক নায়ক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের বিষয়ে ডেপুটি মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডা. রিতু সাক্সেনা এএফপিকে বলেন, আমরা হাসপাতালে ১৫ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। তাদের দেহে কোনো উন্মুক্ত আঘাতের চিহ্ন নেই। সম্ভবত তারা হাইপক্সিয়ায় (অক্সিজেনের অভাবে) মারা গেছেন বা কোনো ভোঁতা আঘাত পেয়েছেন, তবে ময়নাতদন্তের পরই এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনায় আহত ১১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের বেশিরভাগের হাড়ভাঙা সংক্রান্ত চোট রয়েছে এবং তারা স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন।

একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, শহরের অন্য একটি হাসপাতালের পদদলিত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনার পর শোক প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, প্রিয়জনদের হারানো সকলের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রশাসন কাজ করছে।

এ ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

রাজধানী দিল্লির গভর্নর বিনয় কুমার সাক্সেনা বলেছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীদের মোতায়েন করতে বলা হয়েছে এবং সকল হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ভক্তদের ভিড় কমাতে নয়াদিল্লি থেকে অতিরিক্ত বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে।
ছয় সপ্তাহব্যাপী কুম্ভ মেলা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য অন্যতম বৃহত্তম আয়োজন। গত এক মাসে প্রায় ৫০ কোটি ভক্ত এই মেলায় অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এর আগে, ১৯৫৪ সালের কুম্ভ মেলায় পদদলিত হয়ে ও পানিতে ডুবে একদিনে ৪ শত জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। ২০১৩ সালের আসরেও প্রয়াগরাজে এমন ঘটনায় ৩৬ জন নিহত হন।

জনপ্রিয় সংবাদ

নয়াদিল্লিতে পদদলিত হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু

আপডেট সময় ০৮:২৬:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাতে ভারতের রাজধানীর নয়াদিল্লির একটি রেলস্টেশনে হিন্দু সম্পদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ কুম্ভ মেলায় যাওয়ার জন্য ট্রেনে উঠতে গিয়ে হুড়োহুড়ির মধ্যে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। একজন মেডিকেল অফিসারের উদ্ধৃতি দিয়ে নয়াদিল্লি থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

প্রতি ১২ বছর পরপর উত্তর ভারতের প্রয়াগরাজে আয়োজিত কুম্ভ মেলায় লাখ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী অংশ নেন। অনেক মানুষের ভিড় থাকায় অতীতে এই মেলাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত মাসেও গঙ্গা, যমুনা এবং পৌরাণিক সরস্বতী নদীর পবিত্র সঙ্গমস্থলে আরেক দফা পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ৩০ জন মারা যান।

এই অনুষ্ঠানের যোগ দেয়ার জন্য ট্রেনে উঠতে গিয়ে ভিড়ের কারণে শনিবার নয়াদিল্লির রেলস্টেশনে হুড়োহুড়ির কারণে এ ঘটনা ঘটে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি এই মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

লোক নায়ক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের বিষয়ে ডেপুটি মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডা. রিতু সাক্সেনা এএফপিকে বলেন, আমরা হাসপাতালে ১৫ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। তাদের দেহে কোনো উন্মুক্ত আঘাতের চিহ্ন নেই। সম্ভবত তারা হাইপক্সিয়ায় (অক্সিজেনের অভাবে) মারা গেছেন বা কোনো ভোঁতা আঘাত পেয়েছেন, তবে ময়নাতদন্তের পরই এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনায় আহত ১১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের বেশিরভাগের হাড়ভাঙা সংক্রান্ত চোট রয়েছে এবং তারা স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন।

একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, শহরের অন্য একটি হাসপাতালের পদদলিত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনার পর শোক প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, প্রিয়জনদের হারানো সকলের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রশাসন কাজ করছে।

এ ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

রাজধানী দিল্লির গভর্নর বিনয় কুমার সাক্সেনা বলেছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীদের মোতায়েন করতে বলা হয়েছে এবং সকল হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ভক্তদের ভিড় কমাতে নয়াদিল্লি থেকে অতিরিক্ত বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে।
ছয় সপ্তাহব্যাপী কুম্ভ মেলা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য অন্যতম বৃহত্তম আয়োজন। গত এক মাসে প্রায় ৫০ কোটি ভক্ত এই মেলায় অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এর আগে, ১৯৫৪ সালের কুম্ভ মেলায় পদদলিত হয়ে ও পানিতে ডুবে একদিনে ৪ শত জনের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। ২০১৩ সালের আসরেও প্রয়াগরাজে এমন ঘটনায় ৩৬ জন নিহত হন।