ঢাকা ১১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সাংবাদিক হৃদয়ের বিরুদ্ধে শ্রমিকলীগ নেতার বানোয়াট চাঁদাবাজির মামলা নরুন্দিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হকের মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত শেখ মুজিবকে দেবতা বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল : হাবিব উন নবী খান সোহেল বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি বিশ্বব্যাংকের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত আদালত, প্রসিকিউশন, প্রশাসন ও পুলিশের সমন্বয়ে কাজ করলে জনগণ ন্যায়বিচার পাবে : আইন উপদেষ্টা অপারেশন ডেভিল হান্টে কোন দুষ্কৃতকারী যেন রেহাই না পায় : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চীনা শীর্ষ অটো প্রতিষ্ঠান বিওয়াইডি এআই ডিপসিক প্রযুক্তির গাড়ি আনছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ ভানুয়াতুর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত অঘোষিত সেমিফাইনালে ১২ ফেব্রুয়ারি মুখোমুখি পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশের শরফুদ্দৌলা

অপরাজেয়র সংযোগ প্রকল্পের জামালপুর কার্যালয়ে চিকিৎসা শিবির অনুষ্ঠিত

জামালপুর : রানীগঞ্জ যৌনপল্লীর নারীদের চিকিৎসাসেবা দেন ডা. মোবাশ্বিরা হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর শহরের রানীগঞ্জ যৌনপল্লীতে বসবাসরত নারীদের জন্য দিনব্যাপী চিকিৎসা শিবির পরিচালনা করা হয়েছে। দাতা সংস্থা ইউএন-উইমেন এর অর্থায়নে অপরাজেয় বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের উদ্যোগে যৌনপল্লী সংলগ্ন সংযোগ প্রকল্পের জেলা কার্যালয়ে ২২ জানুয়ারি বুধবার এই চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করা হয়।

জামালপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মোবাশ্বিরা হক রানীগঞ্জ যৌনপল্লীর নারী, পুরুষ ও শিশু রোগীদের বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত শোনেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসেবন ও পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন। ডা. মোবাশ্বিরা হককে সহযোগিতা করেন জামালপুর সদরের ইটাইল ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিকুঞ্জ কর্মকার। দিনব্যাপী এই চিকিৎসা শিবিরে ৬৪ জন রোগী দেখা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫৮ জন নারী, চারজন পুরুষ ও দুই কন্যাশিশু রয়েছে। চিকিৎসা শিবিরে রোগীদের রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত শুনে রক্তচাপ ও ওজন পরিমাপ করে ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিনামূল্যে কিছু ওষুধও দেওয়া হয়।

এই চিকিৎসা শিবিরের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন অপরাজেয়-বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের দু’জন মাঠ কর্মকর্তা রীনা আক্তার ও হাফিজা খাতুন।

ডা. মোবাশ্বিরা হক এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি অপরাজেয়-বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের সাথে গত বছরের নভেম্বর মাস থেকেই যুক্ত আছি। যৌনপল্লীর নারীরা আমার কাছে আসেন তাদের নানা রোগের সমস্যা নিয়ে। আমি কথা বলি। ওনাদের কি কি সমস্যা তা শুনে লিখি। ওনাদেরকে পরামর্শটা দিয়ে দেই। ওনাদেরকে তো আর এখানে সবকিছু আর একজন মেডিকেল অফিসারের পক্ষে সম্ভব না। অনেকের বড়কিছু সমস্যা থাকতে পারে। তখন তাদের কোন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে সেই পরামর্শও দিয়ে দেই।

জামালপুর : চিকিৎসাসেবা নিতে আসা একজন নারী যৌনকর্মীর ওজন মাপা হচ্ছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

তিনি আরও বলেন, অপরাজেয় বাংলাদেশ খুবই একটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কারণ এই নারীরা আসলে সবক্ষেত্রেই বঞ্চিত হয়। উনারা ডাক্তার কেন, যেকোন মানুষের কাছে যেতেই একটু কুণ্ঠাবোধ করেন। উনারা আমার কাছে এসে খুব সহজেই সবকিছু সমস্যার কথা বলতে পারেন। নিজেরও অনেক ভালো লাগে যে, উনাদের জন্য আমরা কাজ করতে পারছি। ওনাদের ব্যবহার খুবই ভালো। আজকের এই চিকিৎসা শিবির ছাড়াও প্রতিমাসে আমাদের অফিসে এই যৌনপল্লীর ২০ জন নারীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তারা যে আমাদের সাথে কথা বলতে পারতেছেন। তার রোগের পরিস্থিতিগুলো বলতে পারতেছেন। সেটাই বড় কথা। উনারা অপরাজেয় বাংলার দেওয়া স্বাস্থ্যসেবা যে নিতে পাচ্ছেন, এটা তাদের জন্য একটা বিশাল সুযোগ।

সংযোগ প্রকল্পের মাঠ কর্মকর্তা রীনা আক্তার এ প্রতিবেদককে বলেন, রানীগঞ্জ যৌনপল্লীর নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাজেয় বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ২০০ নারীকে পর্যায়ক্রমে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। জামালপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মোবাশ্বিরা হক এই নারীদের চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রতিমাসে ২০ জন করে নারীকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শের জন্য। ইতিমধ্যে গত ডিসেম্বর ও চলতি জানুয়ারি মাসে ৪০ জন নারী এই সেবা পেয়েছেন। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও জানান, সংযোগ প্রকল্পের আওতায় আমাদের কার্যালয়ে চিকিৎসা শিবিরে ডা, মোবাশ্বিরা হক এখানে এসেই রোগী দেখলেন। তার সাথে ছিলেন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিকুঞ্জ কর্মকার। আজকে মোট ৬৪ জন রোগী দেখা হয়েছে। তাদেরকে কিছু ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রীও দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে আগামীতে চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করা হলে সেখানে রোগীদের জন্য বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধেরও ব্যবস্থা রাখা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক হৃদয়ের বিরুদ্ধে শ্রমিকলীগ নেতার বানোয়াট চাঁদাবাজির মামলা

অপরাজেয়র সংযোগ প্রকল্পের জামালপুর কার্যালয়ে চিকিৎসা শিবির অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় ০৯:৫৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

জামালপুর শহরের রানীগঞ্জ যৌনপল্লীতে বসবাসরত নারীদের জন্য দিনব্যাপী চিকিৎসা শিবির পরিচালনা করা হয়েছে। দাতা সংস্থা ইউএন-উইমেন এর অর্থায়নে অপরাজেয় বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের উদ্যোগে যৌনপল্লী সংলগ্ন সংযোগ প্রকল্পের জেলা কার্যালয়ে ২২ জানুয়ারি বুধবার এই চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করা হয়।

জামালপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মোবাশ্বিরা হক রানীগঞ্জ যৌনপল্লীর নারী, পুরুষ ও শিশু রোগীদের বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত শোনেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধসেবন ও পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন। ডা. মোবাশ্বিরা হককে সহযোগিতা করেন জামালপুর সদরের ইটাইল ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিকুঞ্জ কর্মকার। দিনব্যাপী এই চিকিৎসা শিবিরে ৬৪ জন রোগী দেখা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫৮ জন নারী, চারজন পুরুষ ও দুই কন্যাশিশু রয়েছে। চিকিৎসা শিবিরে রোগীদের রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত শুনে রক্তচাপ ও ওজন পরিমাপ করে ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিনামূল্যে কিছু ওষুধও দেওয়া হয়।

এই চিকিৎসা শিবিরের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন অপরাজেয়-বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের দু’জন মাঠ কর্মকর্তা রীনা আক্তার ও হাফিজা খাতুন।

ডা. মোবাশ্বিরা হক এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি অপরাজেয়-বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের সাথে গত বছরের নভেম্বর মাস থেকেই যুক্ত আছি। যৌনপল্লীর নারীরা আমার কাছে আসেন তাদের নানা রোগের সমস্যা নিয়ে। আমি কথা বলি। ওনাদের কি কি সমস্যা তা শুনে লিখি। ওনাদেরকে পরামর্শটা দিয়ে দেই। ওনাদেরকে তো আর এখানে সবকিছু আর একজন মেডিকেল অফিসারের পক্ষে সম্ভব না। অনেকের বড়কিছু সমস্যা থাকতে পারে। তখন তাদের কোন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে সেই পরামর্শও দিয়ে দেই।

জামালপুর : চিকিৎসাসেবা নিতে আসা একজন নারী যৌনকর্মীর ওজন মাপা হচ্ছে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

তিনি আরও বলেন, অপরাজেয় বাংলাদেশ খুবই একটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কারণ এই নারীরা আসলে সবক্ষেত্রেই বঞ্চিত হয়। উনারা ডাক্তার কেন, যেকোন মানুষের কাছে যেতেই একটু কুণ্ঠাবোধ করেন। উনারা আমার কাছে এসে খুব সহজেই সবকিছু সমস্যার কথা বলতে পারেন। নিজেরও অনেক ভালো লাগে যে, উনাদের জন্য আমরা কাজ করতে পারছি। ওনাদের ব্যবহার খুবই ভালো। আজকের এই চিকিৎসা শিবির ছাড়াও প্রতিমাসে আমাদের অফিসে এই যৌনপল্লীর ২০ জন নারীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তারা যে আমাদের সাথে কথা বলতে পারতেছেন। তার রোগের পরিস্থিতিগুলো বলতে পারতেছেন। সেটাই বড় কথা। উনারা অপরাজেয় বাংলার দেওয়া স্বাস্থ্যসেবা যে নিতে পাচ্ছেন, এটা তাদের জন্য একটা বিশাল সুযোগ।

সংযোগ প্রকল্পের মাঠ কর্মকর্তা রীনা আক্তার এ প্রতিবেদককে বলেন, রানীগঞ্জ যৌনপল্লীর নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাজেয় বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ২০০ নারীকে পর্যায়ক্রমে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। জামালপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মোবাশ্বিরা হক এই নারীদের চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। প্রতিমাসে ২০ জন করে নারীকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শের জন্য। ইতিমধ্যে গত ডিসেম্বর ও চলতি জানুয়ারি মাসে ৪০ জন নারী এই সেবা পেয়েছেন। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও জানান, সংযোগ প্রকল্পের আওতায় আমাদের কার্যালয়ে চিকিৎসা শিবিরে ডা, মোবাশ্বিরা হক এখানে এসেই রোগী দেখলেন। তার সাথে ছিলেন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিকুঞ্জ কর্মকার। আজকে মোট ৬৪ জন রোগী দেখা হয়েছে। তাদেরকে কিছু ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রীও দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে আগামীতে চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করা হলে সেখানে রোগীদের জন্য বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধেরও ব্যবস্থা রাখা হবে।