ঢাকা ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলে হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম সুফি ফেস্টিভ্যাল বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জার্সি উন্মোচন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসকদের সজাগ থাকার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার দেশের স্থায়ী উন্নয়ন নিশ্চিতে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই : ফখরুল দেওয়ানগঞ্জে বিএনপির সম্মেলন ১৭ ফেব্রুয়ারি, নেতা-কর্মীরা উচ্ছ্বসিত দেওয়ানপাড়ায় বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি ইমরান ইসলামপুরে গ্রেপ্তার বাংলাদেশকে বিপজ্জনক বর্জ্যের ভাগাড় হতে দেওয়া যাবে না : রিজওয়ানা সুইডেনে তুষার ঝড়ের কারণে সৃষ্ট সড়ক দুর্ঘটনায় শতাধিক আহত নয়াদিল্লিতে পদদলিত হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু

সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপে চালের দাম কমবে : আলী ইমাম মজুমদার

২১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দরে উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। ছবি : সংগৃহীত

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, চালের দাম বাড়ার কোন সুযোগ নেই, বরং সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপে ক্রমান্বয়ে কমবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে এ বছর ৮ থেকে ৯ লাখ টন চাল আমদানি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক দেশ থেকে চাল দেশে এসেছে। কিছু-কিছু দেশ থেকে আমাদানি কার্যক্রম চলমান আছে।

২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নির্মাণাধীন সাইলোর সার্বিক কার্যক্রম অগ্রগতি এবং চট্টগ্রাম বন্দরে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য আমদানিকৃত চাল খালাস কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে খাদ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চলমান যুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এক ধরনের হুমকির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে এ বাস্তবতায় আগামী রমজানে দ্রব্যমূল্যের উপর কোন প্রভাব পড়বে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি উপজেলায় মাসে দুই টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া আছে। পাশাপাশি রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনশীল থাকবে। রমজান মাসে সারাদেশে ৫০ লাখ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য একটা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই ৫০ লাখ মানুষ ১৫ টাকা দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। এই কর্মসূচি পরপর দুই মাস চলবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ভিয়েতনামের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে, পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তি ফাইনাল পর্যায়ে আছে। আরো অন্যান্য উৎস থেকে চাল আমদানির জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। বাণিজ্যকে আমরা রাজনীতির সঙ্গে মিলাচ্ছি না। ভারত, মিয়ানমার কিংবা পাকিস্তান যেহেতু আমাদের নিকটতম প্রতিবেশি, আমদানি খরচও তুলনামূলকভাবে কম। সে জন্য রফতানি করতে আগ্রহী প্রতিবেশি দেশগুলোকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ভারত যেহেতু আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী, সেখান থেকে আমদানি খরচ তুলনামূলক কম। তুলনামূলক সস্তা দামেও পাওয়া যায়, সেটা অব্যাহত আছে। পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা দেড় লাখ টনের চুক্তি করেছি, তারা আমাদের কাছে আরো চাল বিক্রি করতে চাচ্ছে। সেটা আমরা বিচার বিবেচনা করে পরবর্তীতে দেখবো।

খোলা বাজারে দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা সরকারের কাছে ধান চাল বিক্রি করতে অনীহার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, সরকারিখাতে আমরা দামটা যখন নির্ধারণ করি তখন কৃষকের উৎপাদন খরচ এবং একটা লাভ ধরেই দাম নির্ধারণ করা হয়। সেই ক্ষেত্রে আমরা যদি দাম আরো বাড়িয়ে ধরি তাহলে হয়তো কৃষক সরকারি গুদামে ধান-চাল দিবে, কিন্তু বাজারে দাম আরও বেড়ে যাবে। তাই আমাদেরকে ওখানেও সমন্বয় করতে হয়। কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টা দেখতে হয়।

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের নানা পদক্ষেপের বিষয়ে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে বাংলাদেশ দুর্যোগ কবলিত দেশ। এবারের আমন মৌসুমে অকাল বন্যা খাদ্য উৎপাদনকে মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা মূলত অভ্যন্তরীণ ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছি। সে জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। এইবার আমনে যদি অকাল বন্যা না হতো, তাহলে আমাদের এতটা চাপের মুখে পড়তে হতো না। আমরা চেষ্টা করছি আগামী বোরো ফসল যাতে ভালো হয়।

কম সময়ে যাতে অধিক ফলনশীল ফসল ফলে তার জন্য বিভিন্ন গবেষণাগার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, গবেষণালব্ধ ফসলের বীজ মাঠে সরবরাহ করা হচ্ছে, যাতে তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে ফসল ফলানো যায় তার জন্য চেষ্টা চলছে। দেশে মানুষ বাড়ছে পাশাপাশি শিল্পায়ন ও নগরায়নের কারণে চাষের জমি কমছে। সেসব বিষয়গুলো সমন্বয় করে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এ সময় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল খালেক, সাইলো বিভাগের পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়ছার আলী, চট্টগ্রামের সাইলো অধীক্ষক রাকিবুল হাসান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীন, চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমাসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলে হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম সুফি ফেস্টিভ্যাল

সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপে চালের দাম কমবে : আলী ইমাম মজুমদার

আপডেট সময় ১০:১৩:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, চালের দাম বাড়ার কোন সুযোগ নেই, বরং সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপে ক্রমান্বয়ে কমবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে এ বছর ৮ থেকে ৯ লাখ টন চাল আমদানি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক দেশ থেকে চাল দেশে এসেছে। কিছু-কিছু দেশ থেকে আমাদানি কার্যক্রম চলমান আছে।

২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নির্মাণাধীন সাইলোর সার্বিক কার্যক্রম অগ্রগতি এবং চট্টগ্রাম বন্দরে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য আমদানিকৃত চাল খালাস কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে খাদ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চলমান যুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এক ধরনের হুমকির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে এ বাস্তবতায় আগামী রমজানে দ্রব্যমূল্যের উপর কোন প্রভাব পড়বে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি উপজেলায় মাসে দুই টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া আছে। পাশাপাশি রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনশীল থাকবে। রমজান মাসে সারাদেশে ৫০ লাখ খেটে খাওয়া মানুষের জন্য একটা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই ৫০ লাখ মানুষ ১৫ টাকা দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। এই কর্মসূচি পরপর দুই মাস চলবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ভিয়েতনামের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে, পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তি ফাইনাল পর্যায়ে আছে। আরো অন্যান্য উৎস থেকে চাল আমদানির জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। বাণিজ্যকে আমরা রাজনীতির সঙ্গে মিলাচ্ছি না। ভারত, মিয়ানমার কিংবা পাকিস্তান যেহেতু আমাদের নিকটতম প্রতিবেশি, আমদানি খরচও তুলনামূলকভাবে কম। সে জন্য রফতানি করতে আগ্রহী প্রতিবেশি দেশগুলোকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ভারত যেহেতু আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী, সেখান থেকে আমদানি খরচ তুলনামূলক কম। তুলনামূলক সস্তা দামেও পাওয়া যায়, সেটা অব্যাহত আছে। পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা দেড় লাখ টনের চুক্তি করেছি, তারা আমাদের কাছে আরো চাল বিক্রি করতে চাচ্ছে। সেটা আমরা বিচার বিবেচনা করে পরবর্তীতে দেখবো।

খোলা বাজারে দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা সরকারের কাছে ধান চাল বিক্রি করতে অনীহার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, সরকারিখাতে আমরা দামটা যখন নির্ধারণ করি তখন কৃষকের উৎপাদন খরচ এবং একটা লাভ ধরেই দাম নির্ধারণ করা হয়। সেই ক্ষেত্রে আমরা যদি দাম আরো বাড়িয়ে ধরি তাহলে হয়তো কৃষক সরকারি গুদামে ধান-চাল দিবে, কিন্তু বাজারে দাম আরও বেড়ে যাবে। তাই আমাদেরকে ওখানেও সমন্বয় করতে হয়। কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টা দেখতে হয়।

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের নানা পদক্ষেপের বিষয়ে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে বাংলাদেশ দুর্যোগ কবলিত দেশ। এবারের আমন মৌসুমে অকাল বন্যা খাদ্য উৎপাদনকে মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা মূলত অভ্যন্তরীণ ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছি। সে জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। এইবার আমনে যদি অকাল বন্যা না হতো, তাহলে আমাদের এতটা চাপের মুখে পড়তে হতো না। আমরা চেষ্টা করছি আগামী বোরো ফসল যাতে ভালো হয়।

কম সময়ে যাতে অধিক ফলনশীল ফসল ফলে তার জন্য বিভিন্ন গবেষণাগার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, গবেষণালব্ধ ফসলের বীজ মাঠে সরবরাহ করা হচ্ছে, যাতে তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে ফসল ফলানো যায় তার জন্য চেষ্টা চলছে। দেশে মানুষ বাড়ছে পাশাপাশি শিল্পায়ন ও নগরায়নের কারণে চাষের জমি কমছে। সেসব বিষয়গুলো সমন্বয় করে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এ সময় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল খালেক, সাইলো বিভাগের পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়ছার আলী, চট্টগ্রামের সাইলো অধীক্ষক রাকিবুল হাসান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুমাইয়া নাজনীন, চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমাসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।