ঢাকা ১২:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামালপুরে বেসরকারি ক্লিনিকের রোগনির্ণয় পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ

জামালপুর জেলা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সাথে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

স্বাস্থ্যসেবা গ্রহীতা এবং সুশীল সমাজের সুদীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে রোগনির্ণয় পরীক্ষার সেবামূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ৭ জানুযারি মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জামালপুর জেলা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সাথে জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের মতবিনিময় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম। সভা সঞ্চালনা এবং সভার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. ফজলুল হক।

সভায় জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম বলেন, সাধরণ ও দরিদ্র রোগীদের সুবিধার জন্য দীর্ঘদিন পরে হলেও এ মূল্যনির্ধারণ সকল মহলের কাছে আত্মসন্তুষ্টির পাশাপাশি প্রতারণামুক্ত স্বাস্থসেবা নিশ্চিত হবে। বেসরকারি হাসপতালের মালিকদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর যে কাঠামো থাকার কথা তার যেনো কোন ব্যাত্যয় না ঘটে। নিবন্ধনবিহীন কোন ক্লিনিক বা বেসরকারি হাসপতাল পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না। স্বাস্থ্যবিধি ও প্রচলিত আইন অমান্য করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের উত্থাপিত এক আপত্তির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক বলেন, আয়ের একটা অংশ ডাক্তারদেরও ভ্যাট ও ট্যাক্স দিতে হবে। এটা নাগরিক দায়িত্ব। নৈতিকতার দিক থেকেও সকল আয়মুখী কাজের সাথে যুক্ত নাগরিকদের ভ্যাট, ট্যাক্স দেওয়া উচিৎ। ডাক্তারি ফিসহ ফ্যাথলজিক্যাল সকল সকল স্বাস্ব্যসেবা করের আওতায়। এটা কেউ ফাঁকি দিলে সে শুধু রাষ্ট্রের সাথেই নয় নিজের বিবেকের সাথেও প্রতারণা করে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ, ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এ কে আবু তাহের, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক ও জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সভাপতি হারুন অর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী প্রমুখ। সভায় সাত উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাগণ, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ, জেলা বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্যগণ অংশ নেন।

সভায় মালিক সমিতির কয়েকজন সদস্য বলেন, জামালপুরসহ পার্শ্ববতী অন্যান্য জেলার চিকিৎসা নিতে আসা প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। জামালপুরে সরকারি হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ কমাতে বেসরকারি হাসপাতালগুলো ভূমিকা পালন করে আসছে। তারা আরও বলেন, হাজারো ঘটনার মধ্যে হঠাৎ এবং অনিচ্ছাকৃত দুই একটা ভুল চিকিৎসা হলে বুঝে না বুঝেই আবেগে হাসপাতাল ও ডাক্তার, নার্সদের ওপর হামলা করা হয়। নিউজ করা হয়। তারা সাংবাদিকদের সহায়তা কামনা করেন।

সভায় ১২১টি রোগনির্ণয় পরীক্ষার ওপর মূল্যনির্ধারণ করা হয়। কিছু কিছু পরীক্ষার ক্ষেত্রে মূল্য বেশী মনে হওয়ায় তা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার প্রস্তাব করা হলে সাথে সাথে তা মেনে নেয়া হয়।

সভাসূত্র জানায়, ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণার ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের রোগনির্ণয় পরীক্ষা মূল্যে যাছাই করে এবং তুলনামূলক বিচারে মূল্য কম রেখে জামালপুরে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জামালপুরের প্রতিটি বেসরকারি ক্লিনিকে এ মূল্যতালিকা টানানো থাকবে। বিষয়টি সবাইকে মেনে চলার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
ডাক্তারদের অতিমাত্রায় ফি না নেয়ার জন্যেও সভা থেকে অনুরোধ জানানো হয়। যে সকল ক্লিনিকের এখনও নিবন্ধন করা হয় নাই সেগুলোকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সরকারের কাছ থেকে নিবন্ধন করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করা না হলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালপুরে বেসরকারি ক্লিনিকের রোগনির্ণয় পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ

আপডেট সময় ১০:৪২:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

স্বাস্থ্যসেবা গ্রহীতা এবং সুশীল সমাজের সুদীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে রোগনির্ণয় পরীক্ষার সেবামূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ৭ জানুযারি মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জামালপুর জেলা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সাথে জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের মতবিনিময় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম। সভা সঞ্চালনা এবং সভার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. ফজলুল হক।

সভায় জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম বলেন, সাধরণ ও দরিদ্র রোগীদের সুবিধার জন্য দীর্ঘদিন পরে হলেও এ মূল্যনির্ধারণ সকল মহলের কাছে আত্মসন্তুষ্টির পাশাপাশি প্রতারণামুক্ত স্বাস্থসেবা নিশ্চিত হবে। বেসরকারি হাসপতালের মালিকদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর যে কাঠামো থাকার কথা তার যেনো কোন ব্যাত্যয় না ঘটে। নিবন্ধনবিহীন কোন ক্লিনিক বা বেসরকারি হাসপতাল পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না। স্বাস্থ্যবিধি ও প্রচলিত আইন অমান্য করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের উত্থাপিত এক আপত্তির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক বলেন, আয়ের একটা অংশ ডাক্তারদেরও ভ্যাট ও ট্যাক্স দিতে হবে। এটা নাগরিক দায়িত্ব। নৈতিকতার দিক থেকেও সকল আয়মুখী কাজের সাথে যুক্ত নাগরিকদের ভ্যাট, ট্যাক্স দেওয়া উচিৎ। ডাক্তারি ফিসহ ফ্যাথলজিক্যাল সকল সকল স্বাস্ব্যসেবা করের আওতায়। এটা কেউ ফাঁকি দিলে সে শুধু রাষ্ট্রের সাথেই নয় নিজের বিবেকের সাথেও প্রতারণা করে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ, ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এ কে আবু তাহের, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক ও জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সভাপতি হারুন অর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী প্রমুখ। সভায় সাত উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাগণ, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ, জেলা বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্যগণ অংশ নেন।

সভায় মালিক সমিতির কয়েকজন সদস্য বলেন, জামালপুরসহ পার্শ্ববতী অন্যান্য জেলার চিকিৎসা নিতে আসা প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। জামালপুরে সরকারি হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ কমাতে বেসরকারি হাসপাতালগুলো ভূমিকা পালন করে আসছে। তারা আরও বলেন, হাজারো ঘটনার মধ্যে হঠাৎ এবং অনিচ্ছাকৃত দুই একটা ভুল চিকিৎসা হলে বুঝে না বুঝেই আবেগে হাসপাতাল ও ডাক্তার, নার্সদের ওপর হামলা করা হয়। নিউজ করা হয়। তারা সাংবাদিকদের সহায়তা কামনা করেন।

সভায় ১২১টি রোগনির্ণয় পরীক্ষার ওপর মূল্যনির্ধারণ করা হয়। কিছু কিছু পরীক্ষার ক্ষেত্রে মূল্য বেশী মনে হওয়ায় তা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার প্রস্তাব করা হলে সাথে সাথে তা মেনে নেয়া হয়।

সভাসূত্র জানায়, ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণার ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের রোগনির্ণয় পরীক্ষা মূল্যে যাছাই করে এবং তুলনামূলক বিচারে মূল্য কম রেখে জামালপুরে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। জামালপুরের প্রতিটি বেসরকারি ক্লিনিকে এ মূল্যতালিকা টানানো থাকবে। বিষয়টি সবাইকে মেনে চলার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
ডাক্তারদের অতিমাত্রায় ফি না নেয়ার জন্যেও সভা থেকে অনুরোধ জানানো হয়। যে সকল ক্লিনিকের এখনও নিবন্ধন করা হয় নাই সেগুলোকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সরকারের কাছ থেকে নিবন্ধন করার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করা না হলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।