জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন নানা সমস্যায় জজরিত থাকা ফলে দুর্ভোগে রয়েছে রেলওয়ে স্টাফ-সহ যাত্রী সাধারণ।
তিন বছর আগে স্টেশন ভেঙে ফেলা হলে ও টিনের ছাপরায় রেলস্টেশনের কার্যক্রম চলছে। ফলে বিপাকে পড়েছে স্টেশন কর্মকর্তা কর্মচারী।
জানা গেছে, ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন দেশের অন্যতম প্রাচীন রেলস্টেশন। এটি একসময় উত্তরাঞ্চলের আটটি জেলার সঙ্গে রেলপথে সংযোগ স্থাপন করত। এই স্টেশনের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের সব রেলযাত্রী চলাচল করতেন। ২০০৭ সালে বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাট বন্ধ হওয়ার পর ২০০৮ সালে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। নতুন স্টেশন নির্মাণের জন্য ২০২১ সালে স্টেশনের মূলভবন ভেঙে ফেলা হয়। স্টেশন ভেঙে ফেলার তিন বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই। আগের যে ডিজাইনে স্টেশন নির্মাণ হওয়ার কথা ছিল সেটা পরিবর্তন করা হয়েছে। স্টেশন ভেঙে ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে গেছে। নতুন নকশা অনুমোদন হলে টেন্ডারের মাধ্যমে নির্মাণ কাজ হবে। দেওয়ানগঞ্জ থেকে আন্তঃনগর দুটি ট্রেন তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র-সহ পাঁচটি ট্রেন চলাচল করে। ট্রেন পথ নিরাপদ হিসাবে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, গাইবান্ধা ফুলছড়ি, কুড়িগ্রাম, রৌমারী ও রাজিবপুরের জনসাধারণ ট্রেন যোগে ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে থাকেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টিনের ছোট ছাপরা ঘরে স্টেশন মাস্টার, সহকারী স্টেশন মাস্টার, সংরক্ষিত অফিস ও টিকিট কাউন্টার বুকিং অফিসের সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি পড়ে অনেক মূল্যবান অফিসিয়াল জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। যাত্রীদের জন্য কোনো বিশ্রামাগার ও টয়লেট না থাকায় যাত্রীদের সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। দুটি আন্তঃনগর ট্রেনসহ কয়েকটি লোকাল ট্রেনের টিকিট বিক্রির লাখ লাখ টাকা এবং হাজার হাজার মূল্যবান টিকিট অরক্ষিত অবস্থায় সেই টিনের ঘরে রাখা হয়।
ট্রেন যাত্রী আব্দুল মজিদ বলেন, ভাই ট্রেনে যাতায়াতে নিরাপথ বলে ট্রেনে যাতায়াত করি, কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত স্টেশনে বিশ্রামগার না থাকায় প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে থেকে সময় কাটাইছি।
স্টেশন মাস্টার আব্দুল বাতেন এ প্রতিবেদককে বলেন, স্টেশনটির নতুন ভবন নির্মাণের জন্য তিন বছর আগে ভেঙে ফেলা হয়েছে। তিন বছর ধরে বহু কষ্টে স্টেশন পরিচালনা করে আসছি।
বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে ভিজে কাজ করতে হয়, শুষ্ক মৌসুমে ছাপরার টিনের তাপ পড়ে। গরমের মধ্যে কাজ করি। এভাবে তিন বছর কাজ করে আসতেছি। শুনতেছি নকশা জটিলতার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে।
রেলওয়ে জামালপুরের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, দেওয়ানগঞ্জ স্টেশন নির্মাণ কাজের আগে যে ডিজাইন করা হয়েছিল সে ডিজাইন বাতিল করে নতুন ডিজাইন করা হয়েছে। ডিজাইন পাস হলে টেন্ডারের মাধ্যমে নির্মাণ কাজ শুরু হবে।