গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষনেতা ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেছেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট পরাজিত সরকারকে বিতাড়িত করেছি। এর পর থেকেই ভারত থেকে উস্কানি দিয়ে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে। বাংলাদেশের হিন্দু মুসলমানের মধ্যে দাঙ্গা বাজাতে চাইছে।
তিনি ১ ডিসেম্বর শনিবার বিকালে জামালপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। সারাদেশব্যাপী নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, অস্থিরতা ও অস্বস্তির প্রতিবাদে জামালপুর জেলা শাখা গণতন্ত্র মঞ্চ এ গণসমাবেশের আয়োজন করে।
তিনি আরও বলেন, পরাজিত সেই শক্তি ভারতে বসে কলকাঠি নাড়ছে বলেই দেশে এক অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার বাংলাদেশকে অশান্ত করছে। বাংলাদেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। মোদী সরকারকে বলে দিতে চাই। আমরা বাংলাদেশীরা ঐক্যবদ্ধ। যতই ষড়যন্ত্র করুন না কেন, সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এই দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখবো।
বাংলাদেশের বর্তমান অনন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশ্যে রফিকুল ইসলাম বলেন, ভারতের সকল ষড়যন্ত্র আপনি শক্ত হাতে, কঠিন হাতে দমন করুন। এই দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের পাশে আছে। আমরা আপনাদেরকে সমর্থন দিয়ে যাবো। এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করে এই দেশে আমরা হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হতে দিবো না। আমরা শান্তি-শৃঙ্খলা বাজায় রাখবো। এই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। এজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় অংশ নিতে হবে।
ভোটাভুটি প্রসঙ্গে শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, স্বচ্ছ ভোটের অধিকার চাই আমরা। মানুষ যেন যাকে খুশি তাকে ভোট দিতে পারে। সেই ব্যবস্থার জন্য আমরা লড়াই করেছি। সংগ্রাম করেছি। এই গণতন্ত্রমঞ্চ আমরা গঠন করেছিলাম মানুষের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করার জন্য। রাতের ভোট দিনে হয়ে যাবে, সেটা আমরা করতে দিবো না। আমরা সেই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট সরকারকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছি। আমরা যার যার ভোট সেই সেই দিবো। যার ভোট যেখানে খুশি সেখানে দিবে। ভোট নিয়ে যেন আর কোন ছিনিমিনি খেলা না হয়। ভোট নিয়ে আমরা আর ছিনিমিনি খেলতে দিবো না।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি প্রসঙ্গে শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে আজকে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে গেছে। আমরা ঢাকায় সমাবেশ করে সরকারকে বলেছি আপনারা সিন্ডিকেটের সমূলে আঘাত করুন। এই সিন্ডিকেট বন্ধ না করতে পারলে মানুষের মধ্যে আবার হাহাকার দেখা দিবে। দ্রব্যমূল্য আপনারা যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন। সিন্ডিকেট যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পাারেন। তাহলে আপনাদের যতই জনপ্রিয়তা থাকুক, আপনাদের সেই জনপ্রিয়তা আর থাকবে না।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি মো.আমির উদ্দিনের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ভাসানী অনুসারী পরিষদ জেলা শাখার উপদেষ্টা মো. সিদ্দিকুর রহমান, আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুজ্জামান তালুকদার ও সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান খান দীপু, জেএসডি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী মো. তাজ উদ্দিন সবুজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি আশরাফ আলী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সজিব সরকার রতন প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জেএসডির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা। গণসমাবেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নিহতের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।