মোমিনুল হক ও জাকের আলির হাফ-সেঞ্চুরির পর লোয়ার-অর্ডার ব্যাটারদের দৃঢ়তায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে ফলো-অন এড়াতে পেরেছে সফরকারী বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৪৫০ রানের জবাবে তৃতীয় দিন শেষে ৯ উইকেটে ২৬৯ রান করেছে বাংলাদেশ। ১ উইকেট হাতে নিয়ে ১৮১ রানে পিছিয়ে টাইগাররা।
২ উইকেটে ৪০ রান নিয়ে এন্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের শুরুটা সাবধানে করেছিলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার মোমিনুল (৭*) ও শাহাদাত হোসেন (১০*)। প্রথম ১২ ওভারে ২৬ রান তুলেন তারা।
তবে দিনের ১৩তম ওভারে বাংলাদেশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অভিজ্ঞ পেসার কেমার রোচ। তার বলে স্লিপে কাভেম হজকে ক্যাচ দেন উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া শাহাদাত। ৭১ বলে ১টি চারে ২৫ স্ট্রাইক রেটে ১৮ রান করেন শাহাদাত। তৃতীয় উইকেটে ১২৯ বলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন মোমিনুল-শাহাদাত।
শাহাদাত ফেরার পর লিটন দাসকে নিয়ে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নেন মোমিনুল। তাদের হাফ-সেঞ্চুরির জুটিতে তিন অংকে পা দেয় বাংলাদেশ।
টেস্ট ক্যারিয়ারের ২১তম হাফ-সেঞ্চুরি পাবার পরের ডেলিভারিতেই আউট হন মোমিনুল। পেসার জেইডেন সিলেসের বলে লেগ বিফোর হন তিনি। রিভিউ নিয়েও সফল হননি এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। ৩টি চারে ১১৬ বলে ৫০ রান করেন মোমিনুল। লিটনের সাথে ৬২ রানের জুটি গড়েছিলেন মোমিনুল।
হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংস খেলার পথে বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ১০ হাজার রান পূর্ণ করেন মোমিনুল। তার আগে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করেছেন তুষার ইমরান (১৮২ ম্যাচে ১১,৯৭২ রান) ও নাঈম ইসলাম (১৭৭ ম্যাচে ১০,৮৪৭ রান)। ১৫২ ম্যাচে মোমিনুলের রান এখন ১০,০০৫।
দলীয় ১২৮ রানে মোমিনুল ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটনও। পেসার শামার জোসেফের বলে বোল্ড হন ৩টি বাউন্ডারিতে ৭৬ বলে ৪০ রান করা লিটন। ফলে ১৪৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
দলীয় ১৬৬ রানে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ আউট হলে, ফলো-অন এড়ানো নিয়ে শঙ্কা পড়ে বাংলাদেশ। আলজারি জোসেফের শর্ট বলে ডিফেন্স করার চেষ্টায় শর্ট লেগে ক্যাচ দেন ৫০তম টেস্ট খেলতে নামা মিরাজ। ৩টি চারে ৬৭ বলে ২৩ রান করেন মিরাজ।
সপ্তম উইকেটে তাইজুল ইসলামের সাথে ১১৫ বলে ৬৮ রানের জুটিতে বাংলাদেশের ফলো-অন এড়ানোর পথ তৈরি করেন জাকের আলি। দলীয় ২৩৪ রানে তাইজুল বিদায়ে ধাক্কা খেলেও, ফলো-অন এড়ানোর লক্ষ্যে জাকেরের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিলো বাংলাদেশ। ৩টি চারে তাইজুলের ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান।
কিন্তু ফলো-অন থেকে ৫ রান দূরে থাকতে দলীয় ২৪৬ রানে আউট হন জাকের। আউট হবার আগে ৮৫ বলে টেস্টে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি। ৪টি চারে ৮৯ বলে ৫৩ রান করেন জাকের।
নবম উইকেটে তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদের ১১ রানের জুটিতে ফলো-অন এড়াতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। হাসান ৮ রানে আউট হলে, শেষ উইকেটে ১২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেন তাসকিন ও শরিফুল ইসলাম। তাসকিন ১১ ও শরিফুল ৫ রানে অপরাজিত আছেন।
আলজারি ৩টি, সিলেস ও জান্টিন গ্রেভস ২টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : (টস-বাংলাদেশ)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস : ১৪৪.১ ওভারে ৪৫০/৯ ডি (গ্রেভস ১১৫*, লুইস ৯৭, আথানেজ ৯০, হাসান ৩/৮৭, তাসকিন ২/৭৬, মিরাজ ২/৯৯)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৯৮ ওভারে ২৬৯/৯ (জাকের ৫৩, মোমিনুল ৫০, লিটন ৪০, আলজারি ৩/৬৯)।