ঢাকা ০৯:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঐতিহ্যের ঢাকা কলেজের ১৮৩তম পূর্তি

ঢাকা কলেজ।-ফাইল ছবি

উপমহাদেশের বিদ্যারণ্য প্রাচীন এক বটবৃক্ষের নাম ঢাকা কলেজ। আজ ঢাকা কলেজের ১৮৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সক্রেটিসের বিখ্যাত উক্তি ‘নিজেকে জানো’ মূলমন্ত্রে ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দের ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে ঢাকা কলেজ উপমহাদেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে বিস্তর ভূমিকা রেখেছে। সেই সাথে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ও বাঙালি জাতির ক্রান্তিলগ্নে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।

১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টির পেছনে সব থেকে বড় ভূমিকা রাখে ঢাকা কলেজ। তৎকালীন কার্জন হল, শহীদুল্লাহ্ হল, জমি এবং নিজস্ব শিক্ষক-ছাত্র ইত্যাদি প্রদানের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ঢাকা কলেজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে ঢাকা কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু ছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী নিশ্চিত করার জন্য ঢাকা কলেজে উচ্চশিক্ষা বন্ধ করে ইন্টারমিডিয়েট কলেজে রূপান্তর করা হয়। পরবর্তীতে আবার অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় যে অনন্য নজির স্থাপন করেছে ঢাকা কলেজ তা ইতিহাসে বিরল।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ব্যাপক। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা আব্দুল গাফফার চৌধুরী ছিলেন ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। তিনি বাঙালি জাতির গর্ব, অহংকার। ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গকারী প্রথম দলের অন্যতম নেতৃত্ব দানকারী ঢাকা কলেজের মেধাবী ছাত্র ইকবাল আনসারী খান। পরবর্তীকালে ১৯৭১ সালে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঢাকা কলেজের আটজন ছাত্র শহীদ হয়েছিলেন। আট জন শহীদ বীর হলেন- শহীদ নজরুল ইসলাম, শহীদ আব্দুস শিকদার, শহীদ মোয়াজ্জেম হোসেন, শহীদ নিজামুদ্দিন সাজ্জাদ, শহীদ আজিজুল ইসলাম বাবুল, শহীদ এম কাইয়ুম। বীরদের স্মরণের জন্য ঢাকা কলেজের মূল ভবনের প্রবেশ দ্বারের বাম দেয়ালে লেখা আছে বীরদের অঙ্কিত স্মৃতিফলক।

বিভিন্ন অঙ্গনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের অবদান অনস্বীকার্য। আধুনিক যুগের কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে ঢাকা কলেজের কীর্তিমান শিক্ষক ও শিক্ষার্থী যারা ছিলেন- আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মুহাম্মদ মনসুর উদ্দীন, শওকত ওসমান, দীনেশচন্দ্র সেন, কাজী মোতাহের হোসেন, আবুল কালাম শামসুদ্দীন, আবুল মনসুর আহমেদ, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ আলী আহসান, সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ, শামসুর রাহমান, আলাউদ্দিন আল আজাদ, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, আবদুল গাফফার চৌধুরী, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ুন আহমেদ, রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, আব্দুল মান্নান সৈয়দসহ আরও অসংখ্য বরেণ্য ব্যক্তি সুপ্রাচীন এই বিদ্যাপীঠের ছাত্র ছিলেন। তারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছেন।

বর্তমানে ঢাকা কলেজে মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছেন। বিশেষ করে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বাংলাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার ঢাকা কলেজ। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কলেজগুলোর মধ্যেও অন্যতম এই প্রতিষ্ঠান। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১৯টি বিষয়ে শিক্ষাদান কার্যক্রম চালু রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধার জন্য রয়েছে আটটি ছাত্রাবাস। জ্ঞানপিপাসু ছাত্রদের জন্য রয়েছে গ্রন্থাগার। বর্তমান ঢাকা কলেজের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক ও স্টাফসহ রয়েছে ৫০০ জনেরও বেশি। ঢাকা কলেজের মোট আয়তনের পরিমাণ ১৮.৫৭ একর। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বের গুণাবলী, দক্ষতা ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য রয়েছে বিভিন্ন স্বনামধন্য সংগঠন।

১৮৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠ বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেও ১৮২ বছর ধরে তার ঐতিহ্য ও শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে। তবে ঢাকা কলেজের কিছু সমস্যা বিশেষভাবে লক্ষণীয়।যেমন-পর্যাপ্ত একাডেমিক ভবনের সংকট থাকায় শিক্ষার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সীমাবদ্ধতা, গ্রন্থগারে রয়েছে পর্যাপ্ত আসনের অভাব। এছাড়া ছাত্রাবাসগুলোতে রয়েছে পর্যাপ্ত সিটের অভাব যার জন্য দূর থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের বাইরে অধিক অর্থ ব্যয় করে অবস্থান করতে হয়। এই সমস্যাগুলোর পাশাপাশি সবথেকে বড় সমস্যা যেটি তা হলো, যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক ঢাকা কলেজকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়, এতে ঐতিহ্য ও গৌরব হুমকির মুখে পড়ে ও শিক্ষারমানের অবনতি হয়। অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়ে। এতে তাদের উজ্জ্বল ভবিষৎ নষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে উত্তরণ, পূর্বের গৌরব ও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে ঢাকা কলেজকে একটি স্বতন্ত্র কাঠামোয় দাঁড় করানো উচিত যাতে কোন সরকার রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতে না পারে। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের সুন্দর এক ভবিষ্যৎ নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে যেতে পারবে। এই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ হলে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ও শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

উপমহাদেশের প্রাচীন, গৌরব ও ঐতিহ্যের প্রতীক ঢাকা কলেজের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

১৮৩ বছর ঐতিহ্য নিয়ে টিকে থাকা ঢাকা কলেজ আজ ১৮৪ বছরে পা দিচ্ছে। শুভ হোক সামনের দিনগুলো।ঐতিহ্য ও গৌরব নিয়ে টিকে থাকুক যুগ যুগ ধরে।

শুভ জন্মদিন ঐতিহ্যের ঢাকা কলেজ।

লেখক : মো. রবিন ইসলাম
শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, ঢাকা কলেজ

জনপ্রিয় সংবাদ

ঐতিহ্যের ঢাকা কলেজের ১৮৩তম পূর্তি

আপডেট সময় ১২:৪১:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

উপমহাদেশের বিদ্যারণ্য প্রাচীন এক বটবৃক্ষের নাম ঢাকা কলেজ। আজ ঢাকা কলেজের ১৮৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সক্রেটিসের বিখ্যাত উক্তি ‘নিজেকে জানো’ মূলমন্ত্রে ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দের ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে ঢাকা কলেজ উপমহাদেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে বিস্তর ভূমিকা রেখেছে। সেই সাথে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ও বাঙালি জাতির ক্রান্তিলগ্নে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।

১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টির পেছনে সব থেকে বড় ভূমিকা রাখে ঢাকা কলেজ। তৎকালীন কার্জন হল, শহীদুল্লাহ্ হল, জমি এবং নিজস্ব শিক্ষক-ছাত্র ইত্যাদি প্রদানের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ঢাকা কলেজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে ঢাকা কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু ছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী নিশ্চিত করার জন্য ঢাকা কলেজে উচ্চশিক্ষা বন্ধ করে ইন্টারমিডিয়েট কলেজে রূপান্তর করা হয়। পরবর্তীতে আবার অনার্স-মাস্টার্স কোর্স চালু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় যে অনন্য নজির স্থাপন করেছে ঢাকা কলেজ তা ইতিহাসে বিরল।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ব্যাপক। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা আব্দুল গাফফার চৌধুরী ছিলেন ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। তিনি বাঙালি জাতির গর্ব, অহংকার। ২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গকারী প্রথম দলের অন্যতম নেতৃত্ব দানকারী ঢাকা কলেজের মেধাবী ছাত্র ইকবাল আনসারী খান। পরবর্তীকালে ১৯৭১ সালে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঢাকা কলেজের আটজন ছাত্র শহীদ হয়েছিলেন। আট জন শহীদ বীর হলেন- শহীদ নজরুল ইসলাম, শহীদ আব্দুস শিকদার, শহীদ মোয়াজ্জেম হোসেন, শহীদ নিজামুদ্দিন সাজ্জাদ, শহীদ আজিজুল ইসলাম বাবুল, শহীদ এম কাইয়ুম। বীরদের স্মরণের জন্য ঢাকা কলেজের মূল ভবনের প্রবেশ দ্বারের বাম দেয়ালে লেখা আছে বীরদের অঙ্কিত স্মৃতিফলক।

বিভিন্ন অঙ্গনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের অবদান অনস্বীকার্য। আধুনিক যুগের কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে ঢাকা কলেজের কীর্তিমান শিক্ষক ও শিক্ষার্থী যারা ছিলেন- আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, মুহাম্মদ মনসুর উদ্দীন, শওকত ওসমান, দীনেশচন্দ্র সেন, কাজী মোতাহের হোসেন, আবুল কালাম শামসুদ্দীন, আবুল মনসুর আহমেদ, বুদ্ধদেব বসু, সৈয়দ আলী আহসান, সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ, শামসুর রাহমান, আলাউদ্দিন আল আজাদ, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, আবদুল গাফফার চৌধুরী, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ুন আহমেদ, রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, আব্দুল মান্নান সৈয়দসহ আরও অসংখ্য বরেণ্য ব্যক্তি সুপ্রাচীন এই বিদ্যাপীঠের ছাত্র ছিলেন। তারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছেন।

বর্তমানে ঢাকা কলেজে মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছেন। বিশেষ করে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বাংলাদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার ঢাকা কলেজ। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কলেজগুলোর মধ্যেও অন্যতম এই প্রতিষ্ঠান। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১৯টি বিষয়ে শিক্ষাদান কার্যক্রম চালু রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধার জন্য রয়েছে আটটি ছাত্রাবাস। জ্ঞানপিপাসু ছাত্রদের জন্য রয়েছে গ্রন্থাগার। বর্তমান ঢাকা কলেজের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক ও স্টাফসহ রয়েছে ৫০০ জনেরও বেশি। ঢাকা কলেজের মোট আয়তনের পরিমাণ ১৮.৫৭ একর। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বের গুণাবলী, দক্ষতা ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য রয়েছে বিভিন্ন স্বনামধন্য সংগঠন।

১৮৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠ বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেও ১৮২ বছর ধরে তার ঐতিহ্য ও শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে। তবে ঢাকা কলেজের কিছু সমস্যা বিশেষভাবে লক্ষণীয়।যেমন-পর্যাপ্ত একাডেমিক ভবনের সংকট থাকায় শিক্ষার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের সীমাবদ্ধতা, গ্রন্থগারে রয়েছে পর্যাপ্ত আসনের অভাব। এছাড়া ছাত্রাবাসগুলোতে রয়েছে পর্যাপ্ত সিটের অভাব যার জন্য দূর থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের বাইরে অধিক অর্থ ব্যয় করে অবস্থান করতে হয়। এই সমস্যাগুলোর পাশাপাশি সবথেকে বড় সমস্যা যেটি তা হলো, যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক ঢাকা কলেজকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়, এতে ঐতিহ্য ও গৌরব হুমকির মুখে পড়ে ও শিক্ষারমানের অবনতি হয়। অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়ে। এতে তাদের উজ্জ্বল ভবিষৎ নষ্ট হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে উত্তরণ, পূর্বের গৌরব ও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে ঢাকা কলেজকে একটি স্বতন্ত্র কাঠামোয় দাঁড় করানো উচিত যাতে কোন সরকার রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতে না পারে। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের সুন্দর এক ভবিষ্যৎ নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে যেতে পারবে। এই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ হলে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ও শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

উপমহাদেশের প্রাচীন, গৌরব ও ঐতিহ্যের প্রতীক ঢাকা কলেজের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

১৮৩ বছর ঐতিহ্য নিয়ে টিকে থাকা ঢাকা কলেজ আজ ১৮৪ বছরে পা দিচ্ছে। শুভ হোক সামনের দিনগুলো।ঐতিহ্য ও গৌরব নিয়ে টিকে থাকুক যুগ যুগ ধরে।

শুভ জন্মদিন ঐতিহ্যের ঢাকা কলেজ।

লেখক : মো. রবিন ইসলাম
শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, ঢাকা কলেজ