জামালপুরের বকশীগঞ্জে ১১০ বছর বয়সী শ্বশুরকে পিটিয়ে আহত করেছেন তারই পুত্রবধূ। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ওই পুত্রবধূর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শ্বশুর আবদুস সালাম। ৮ নভেম্বর শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সূর্যনগর পূর্ব পাড়া গ্রামে।
জানা গেছে, সূর্যনগর পূর্বপাড়া গ্রামের আবদুস সালামের ছেলে এস এম সাইয়ুম এক বছর আগে হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। এস এম সাইয়ুম বকশীগঞ্জ পৌর শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। বৃদ্ধ আবদুস সালামকে তার ছেলে এস এম সাইয়ুম জীবদ্দশায় ভোরণ পোষণ করতেন। এর বিনিময়ে আবদুস সালাম ছোট ছেলে নেহাল উদ্দিনের ১২ শতাংশ জমি ও তার মেয়ে ছালমা বেগমের নামে ৪ শতাংশ জমি মোট ১৬ শতাংশ ছেলে এস এম সাইয়ুমকে চাষাবাদের জন্য মৌখিকভাবে প্রদান করেন।
ছেলে সাইয়ুমের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্রবধূ শিউলি বেগম বৃদ্ধ আবদুস সালামকে ভোরণ পোষণ করতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ছোট ছেলে নেহাল উদ্দিন তাঁর ভোরণ পোষণের দায়িত্ব নেন। ৮ নভেম্বর শুক্রবার বেলা ১১টায় বৃদ্ধ আবদুস সালাম তাঁর পুত্রবধূ শিউলি বেগমের নিকট ছোট ছেলের নামের জমিটি ফেরত চাইলে তিনি শ্বশুরের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
শিউলি বেগম জমি ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে উল্টো বৃদ্ধ শ্বশুর আবদুস সালামকে বেধরক লাঠি পেটা করেন শিউলি বেগম ও নাতি শারমিন আক্তার।
এসময় আবদুস সালামের আরেক পুত্রবধূ নুরজাহান বেগম শ্বশুরকে মারপিটে বাধা দিতে গেলে তাকেও মারপিট করা হয়।
লাঠি পেটা খেয়ে বৃদ্ধ আবদুস সালাম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বৃদ্ধ শ্বশুরকে মারপিটের ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এ ঘটনায় পুত্রবধূ ও নাতির বিচার চেয়ে ৯ নভেম্বর শনিবার বকশীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃদ্ধ শ্বশুর আবদুস সালাম।
এ ব্যাপারে বৃদ্ধ আবদুস সালাম বলেন, আমার ছেলে এস এম সাইয়ুমকে ১৬ শতাংশ জমি মৌখিকভাবে দেওয়ার বিনিময়ে আমার ভোরণ পোষণ করতো। ছেলের মৃত্যুর পর আমার পুত্রবধূ আমাকে দেখাশুনা না করে আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। তাই আমি জমিটি ফেরত চাইলে আমাকে মারধর করেছে। আমি এর বিচার চাই।
অভিযুক্ত পুত্রবধূ শিউলি বেগমের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।