‘দক্ষ যুব গড়বে দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্যের আলোকে জামালপুরে জাতীয় যুব দিবসে জামালপুরে গবাখালী খাল পরিষ্কার অভিযান শুরু হয়। ১ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ১০টায় খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধনকালে জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম বলেন, জেলার অন্যতম বৃহৎ খালটি আজ আমরা পরিষ্কার শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে জেলার প্রতিটি নদ, নদী, খাল, বিল, পুকুরসহ জলাশয়গুলোকে দখলমুক্ত দূষণমুক্ত রাখা হবে। তিনি বলেন, গবাখালী খালের ময়লা, আবর্জনা পরিষ্কারের মাধ্যমে শহরের জলাবদ্ধতা দূর করার পাশাপাশি মাছের চাষ, কৃষি সেচ ব্যবস্থা উন্নত করা হবে। তিনি খালটি পরিচ্ছন্ন রাখতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন হবার আহ্বান জানান। একই সাথে জেলা প্রশাসক পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে খাল পরিষ্কার রাখতে নিয়মিত তদারকীর অনুরোধ জানান।
১ নভেম্বর দিনব্যাপী খাল পরিষ্কারের আগে সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসন ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ চত্বর (ফৌজদারি মোড়) থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রা শেষে প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা। এতে অংশ নেন জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক (উপসচিব) মৌসুমী খানম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুমী আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইফতেখার ইউনুছ, জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিন্নাত শহিদ পিংকি, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তেরর উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম খান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মো. মাহবুবুর রহমান, জামালপুর সদর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক ও মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম, তরঙ্গ মহিলা কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শামীমা খান, প্রেসক্লাব জামালপুরের সভাপতি মুখলেছুর রহমান লিখন, জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আইনজীবী ইউসুফ আলী প্রমুখ।
জানা যায়, এবারের যুব দিবস উপলক্ষে ৬৪ জেলায় একটি করে খাল পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় জামালপুরের ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ গবাখালী খালটি পরিষ্কার ও দূষণমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। খাল পরিষ্কার অভিযানে বিভিন্ন যুব সংগঠন, বেসরকারি সংস্থা, রেড ক্রিসেন্ট, বিডি ক্লিন, ছাত্র সংগঠন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ এলাকার বাসিন্দা ও বিভিন্ন শ্রেণি, পেশার মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
খাল পরিষ্কারে অংশ নিতে আসা একাধিক বক্তি বলেন, এর আগেও ঢাল, ঢোল পিটিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছিল। ধারাবাহিকতা না থাকায় খালটি ময়লা, আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়। এবারের অভিযান যেন লোক দেখানো না হয়।
শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯৬২ সনে তৎকালিন সরকার খালটি খনন করে। কালক্রমে লোভী মানুষ অনেকাংশে দখল করে নেয়। অবিবেচক ও অসচেন মানুষ খালটিকে ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন ধরনের দেখভাল না থাকায় খালটি দূষণ ও ভরাট হয়ে যায়।