ঢাকা ১২:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামালপুরে দয়াময়ী মন্দিরের ৩২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জামালপুরে দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদের উদ্যোগে দয়াময়ী মন্দিরের ৩২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে দয়াময়ী মন্দিরে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণীর আয়োজন করা হয়।

দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ।

দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কুমার সিংহ চপলের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. সৈয়দ রফিকুল ইসলাম পিপিএম-সেবা, জামালপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোহরাব হোসাইন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জামালপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কৃষিবিদ লক্ষ্মীকান্ত পন্ডিত, জামালপুর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার সোম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, উপমহাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দয়াময়ী মন্দির বাংলা ১১০৪ সালে পরগণা জাফরশাহী ও ময়মনসিংহের জায়গীরদার তৎকালীন বাংলার নবাব মূর্শিদকুলী খানের ঘনিষ্ঠজন শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন। তার পুত্রবধূ নারায়ণী চৌধুরাণী বাংলার গভর্ণর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের সময় মন্দিরের ব্যয় নির্বাহের জন্য ‘শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী দেবোত্তর এস্টেট’ প্রতিষ্ঠা করেন। তাদের পরবর্তী বংশধর রাম গোপালপুরের জমিদার যোগেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী মন্দিরের ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেন। দয়াময়ী মন্দিরে দয়াময়ী মহাদেব্যা মাতার বিগ্রহ ছাড়াও অন্নপূর্ণা মাতার বিগ্রহ ও শিব বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত আছে। স্বাধীনতাপূর্বে দশভুজা মায়ের বিগ্রহও মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত ছিল। প্রতিদিন জাগরণ, ভোগ, বলি, যজ্ঞা ও সন্ধ্যা আরতীর মাধ্যমে পূজার্চনা করা হয়। এছাড়া প্রতি অমাবস্যায় দয়াময়ী মহাদেব্যা মাতার পূর্ণিমায় অনুপূর্ণা তার ও চতুদর্শীতে শ্রী শ্রী শিব বিগ্রহের বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ঋতু ভিত্তিক উৎপাদিত সবজি মায়ের নিকট ভোগ দেওয়া হয়।

মহিলাদের মাঝে বস্ত্র দান করা হয়।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

আলোচনা সভা শেষে ২ শতাধিক সকল ধর্মাবলম্বী মহিলাদের মাঝে বস্ত্রদান করা হয় এবং বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ৩১ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে এককালীন বৃত্তির নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। এছাড়াও কবিতা আবৃত্তি, সাধারণ জ্ঞান, ঢাক বাজানো, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি ও প্রদীপ প্রজ্বলন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষ করা হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদসহ সকল মন্দিরের নেতৃবৃন্দ এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালপুরে দয়াময়ী মন্দিরের ৩২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

আপডেট সময় ০৬:৫৯:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪

দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জামালপুরে দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদের উদ্যোগে দয়াময়ী মন্দিরের ৩২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে দয়াময়ী মন্দিরে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণীর আয়োজন করা হয়।

দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ।

দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কুমার সিংহ চপলের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. সৈয়দ রফিকুল ইসলাম পিপিএম-সেবা, জামালপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোহরাব হোসাইন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জামালপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কৃষিবিদ লক্ষ্মীকান্ত পন্ডিত, জামালপুর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার সোম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, উপমহাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দয়াময়ী মন্দির বাংলা ১১০৪ সালে পরগণা জাফরশাহী ও ময়মনসিংহের জায়গীরদার তৎকালীন বাংলার নবাব মূর্শিদকুলী খানের ঘনিষ্ঠজন শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন। তার পুত্রবধূ নারায়ণী চৌধুরাণী বাংলার গভর্ণর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংসের সময় মন্দিরের ব্যয় নির্বাহের জন্য ‘শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী দেবোত্তর এস্টেট’ প্রতিষ্ঠা করেন। তাদের পরবর্তী বংশধর রাম গোপালপুরের জমিদার যোগেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী মন্দিরের ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেন। দয়াময়ী মন্দিরে দয়াময়ী মহাদেব্যা মাতার বিগ্রহ ছাড়াও অন্নপূর্ণা মাতার বিগ্রহ ও শিব বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত আছে। স্বাধীনতাপূর্বে দশভুজা মায়ের বিগ্রহও মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত ছিল। প্রতিদিন জাগরণ, ভোগ, বলি, যজ্ঞা ও সন্ধ্যা আরতীর মাধ্যমে পূজার্চনা করা হয়। এছাড়া প্রতি অমাবস্যায় দয়াময়ী মহাদেব্যা মাতার পূর্ণিমায় অনুপূর্ণা তার ও চতুদর্শীতে শ্রী শ্রী শিব বিগ্রহের বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ঋতু ভিত্তিক উৎপাদিত সবজি মায়ের নিকট ভোগ দেওয়া হয়।

মহিলাদের মাঝে বস্ত্র দান করা হয়।ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

আলোচনা সভা শেষে ২ শতাধিক সকল ধর্মাবলম্বী মহিলাদের মাঝে বস্ত্রদান করা হয় এবং বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের ৩১ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে এককালীন বৃত্তির নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। এছাড়াও কবিতা আবৃত্তি, সাধারণ জ্ঞান, ঢাক বাজানো, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি ও প্রদীপ প্রজ্বলন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষ করা হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে দয়াময়ী মন্দির পরিচালনা পরিষদসহ সকল মন্দিরের নেতৃবৃন্দ এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উপস্থিত ছিলেন।