স্মরণাতীতকালের ভয়াবহ বন্যায় শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবর্দী উপজেলার শতাধিক গ্রামের অর্ধালক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হবার খবর প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। ইতিমধ্যে তিনজনের প্রাণহানীর খবর পাওয়া গেছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে অসংখ্য বাড়িঘর। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। অসংখ্য মৎস্য খামার ডুবে যাওয়ায় কয়েক কোটি টাকার মাছ বেরিয়ে গেছে বানের পানির সাথে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে গবাদি পশু। এলাকায় পানিবন্দি মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট।
বাংলারচিঠি ডটকমসহ অধিকাংশ মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ উদ্ধার সামগ্রী না থাকায় বন্যায় আটকে পড়া মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছ চরম আতঙ্ক। দিনভর বৃষ্টি থাকায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কাজে তৈরি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এরপরও সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার সদস্যসহ স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারি, বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবকরা প্রাণপনে বিপদাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াবার চেষ্টা করছে।
মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। উজানের পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও ভাটি এলাকায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করছে। তবে বৃষ্টির মাত্রা বেড়ে গেলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
অপরদিকে জামালপুর জেলার ডাংধরা ইউনিয়ের তিনটি গ্রামে প্রবল স্রোতে পাহাড়ি ঢলে ভেঙ্গে গেছে নিম্নআয়ের ১৮ পরিবারের ঘরবাড়ি। উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিদর্শন করে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন।
জানা যায়, ঝিনাইগাতির ৪টি স্থানে ও নালিতাবাড়ির দুটি স্থানে মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
চলতি বছরের আগস্ট মাসে দেশের মধ্য-পূর্বাঞ্চল জেলা কুমিল্লা, ফেনী, লক্ষিপুর, নোয়াখলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ ওই অঞ্চলের জেলাগুলো একই প্রক্রিয়ায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে প্রচারণা ও ব্যাপক সাড়া জেগেছিল শেরপুরে তার তিলমাত্র সাড়া পড়েনি বলে ভুক্তভোগীরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
আমরা আশা করছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেরপুরের বানভাসি মানুষের কষ্ট নিবারনে দ্রুত এগিয়ে আসবে। পাশাপাশি ছাত্র, জনতা, বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো এগিয়ে আসবে বানভাসি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে।