মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে ২ অক্টোবর বুধবার শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
বুধবার ভোর সাড়ে ছয়টা থেকে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ সারা দেশে মণ্ডপে-মণ্ডপে চণ্ডীপাঠ, মঙ্গলঘট স্থাপন, ঢাক-কাঁসা ও শঙ্খ বাজিয়ে দেবীকে আহ্বান জানান ভক্তরা।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ভোর ৬টায় চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মহালয়ার পর্ব। প্রথমে চণ্ডী পাঠ করে দেবীকে আহ্বান জানানো হয়। এ সময় মঙ্গলঘট স্থাপন করে তাতে ফুল, তুলসী ও বেলপাতা দিয়ে করা হয় পূজা।
আগমনী গানের মাধ্যমে শুরু হয় আড়ম্বরপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ‘দেবী দুর্গার মহিষাসুর বধ’ দেখানো হয়। এরপর ভক্তদের মাঝে হয় প্রসাদ বিতরণ।
ঢাকেশ্বরীতে মহালয়ার দ্বিতীয় পর্বের মূল আচার-অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ১০টায় । এই পর্বে ভক্তরা পূর্ব পুরুষের আত্মার শান্তি কামনায় তিল তর্পণ করেন। পরে মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকেশ্বরী ছাড়াও রমনা কালী মন্দির, রাজধানীর স্বামীবাগ, তাঁতীবাজার, শাঁখারী বাজার, রামকৃষ্ণ মিশন ও বনানীসহ বিভিন্ন মণ্ডপে আহ্বান জানানো হয় দেবীকে। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় ষষ্ঠী পূজার অপেক্ষা। আগামী ৯ অক্টোবর দুর্গা পূজা শুরু হবে। শেষ হবে ১৩ অক্টোবর বিজয় দশমীর মধ্যে দিয়ে।
বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার দোলা বা পালকিতে চড়ে স্বর্গলোক থেকে মর্ত্যলোক বা পৃথিবীতে আসবেন। যার ফল হচ্ছে মড়ক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও মহামারির প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাবে। দেবী স্বর্গলোকে বিদায় নেবেন গজ বা হাতিতে চড়ে। যার ফল হিসেবে বসুন্ধরা শস্যপূর্ণা হয়ে উঠবে।
পুরানে বলা আছে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলে অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়।
ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’র রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করেন এবং দেবতাদের ১০টি অস্ত্রে সুসজ্জিত সিংহ বাহিনী দেবী দুর্গা ৯ দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করে।