‘মর্যাদাপূর্ণ বার্ধক্য: বিশ্বব্যাপী প্রবীণ পরিচর্যা ও সহায়তা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ’ এ প্রতিপাদ্যের আলোকে জামালপুরে অনুষ্ঠিত ৩৪তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক হাসিনা বেগম বলেন, প্রবীণ নাগরিকরা আমাদের সম্পদ, তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর অবদানে বাংলাদেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে। অবসর জীবনে এসে প্রবীণদের আনন্দময় জীবন যাপনে রাখতে রাষ্ট্র খুবই আন্তরিক। আমরা তাদের প্রতি যত্নশীল হতে সদা সচেষ্ট।
তিনি বলেন, তারুণ্যের টগবগে সময়ে তাদের শ্রম, ঘামে পরিবারের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে সুবর্ণসময়গুলো নিবেদন করেছেন। তাদের প্রতি কোন ধরনের অবহেলা যাতে না করা হয় এ জন্য রাষ্ট্র যথাযথ আইন প্রণয়ন করেছে। সরকার জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। আমরা আমাদের অভিভাবকদের জন্য সর্বোচ্চটাই করবো ইনশাআল্লাহ।
১ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবসটি উপলক্ষে জামালপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক রোকোনুল ইসলাম।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আনোয়ার, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রেজওয়ানা রশীদ, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবু ইলিয়াস মল্লিক, জেলা প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সভাপতি মোশারফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক হাবীব জাহান, সদস্য ফজলুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, ফজলুর রহমান, বাতিঘর সংস্থার সভাপতি মিজানুর রহমান, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক ও বাংলারচিঠি ডটকমের সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম, তরঙ্গ মহিলা কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শামীমা খান, সাংবাদিক ফজলে এলাহী মাকাম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা ফারুক মিয়া।
সভায় বক্তারা ২০১৩ সালে প্রণীত জাতীয় প্রবীণ নীতিমালার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন, তাদের বৃদ্ধাশ্রমে নয় পরিবারে সম্মান ও মর্যাদার সাথে বসবাসের জন্য রাষ্ট্রীয় তদারকি করা, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু করা, প্রবীণদের জন্য নির্মল বিনোদনের ব্যবস্থা করা, তাদের ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবারে থেকেই আয়মুখী কাজের সাথে সম্পৃক্ত করা, যানবাহন এবং ভ্রমণের ক্ষেত্রে তাদের সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়াসহ তাদের সর্বোত্তম সুরক্ষা ও অধিকার বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
শুরুতেই প্রবীণ হিতৈষী সংঘের মোশারফ হোসেন ও রফিকুল ইসলামের স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। আলোচনা সভা শেষে মমতাময়ী নারী ও মমতাময় পুরুষ সদস্যকে প্রবীণদের জন্য সেবামূলক কার্যক্রম করার স্বীকৃতি হিসেবে ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে সম্মাননা দেওয়া হয়।