শেরপুর জেলা কারাগার থেকে পলাতক কয়েদি জুয়েল র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুরের একটি আভিযানিক দলের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে এ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পতনের পর ৫ আগস্ট বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে কয়েক হাজার দুষ্কৃতিকারী শেরপুর জেলা কারাগারে আক্রমণ করে। এ সময় আক্রমণকারীরা জেলা কারাগারের বিবিধ স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি সাধনসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বিভিন্ন মামলার প্রায় ৫১৮ জন কয়েদিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে।
জেল থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর কোম্পানি, শেরপুর জেলা কারা কর্তৃপক্ষ এবং শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সরবরাহ করা পলাতক কয়েদিদের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে আসছে র্যাব-১৪। ইতিমধ্যে পলাতক আসামিদের কয়েকজন র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন।
র্যাব সূত্র জানায়, ৩০ সেপ্টেম্বর রাতের অভিযানে গ্রেপ্তার শেরপুর জেলা কারাগারের ৭৮৯৯/এ নম্বর কয়েদি জুয়েল (৪০) শেরপুর জেলা সদর উপজেলার চৈতনখিলা গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে। তিনি শেরপুর জেলার শেরপুর দায়রা মামলা নম্বর ১৯৪/২১, সিআর মামলা নম্বর ৩৮৯/১০ এর একজন পলাতক কয়েদি। ৫ আগস্ট শেরপুর জেলা কারাগারে দুষ্কৃতিকারীদের আক্রমণের সময় অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে পালিয়ে এতদিন আত্মগোপনে ছিলেন এই কয়েদি।
র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর কোম্পানির একটি চৌকস আভিযানিক দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জেল পলাতক কয়েদি জুয়েলের অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানের সময় রাত পৌনে ১০টার দিকে কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে এবং স্কোয়াড কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ টি এম আমিনুল ইসলামের উপস্থিতিতে র্যাবের আভিযানিক দলটি শেরপুর সদর উপজেলার চৈতনখিলা এলাকায় নিজ বসতবাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। গ্রেপ্তারের পর তাকে শেরপুর সদর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার কয়েদি জুয়েল ৫ আগস্ট শেরপুর জেলা কারাগারে দুষ্কৃতিকারীদের আক্রমণের ঘটনার দিন অন্যান্য কয়েদিদের সাথে কৌশলে কারাগার থেকে পালিয়ে শেরপুর জেলাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলায় আত্মগোপনে থাকার বিষয়টি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। জেল পলাতক এসব হাজতি ও কয়েদিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাবের জোর অভিযান অব্যাহত থাকবে।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যার মত জঘন্য অপরাধ কর্মকাণ্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সমাজ ও দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।