ঢাকা ০১:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ইসরায়েলকে দুঃসংবাদ দিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট, ক্ষেপলেন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ধেয়ে আসছে ‘মিল্টন’ প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারতের কাছে ৭ উইকেটে পরাজিত বাংলাদেশ আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ব্রাজিলের ‘হেক্সা’ জয় বৃষ্টির পানিতে সরিষাবাড়ী স্টেশনে ব্যাপক জলাবদ্ধতা, ব্যাপক দুর্ভোগ মাদারগঞ্জের নলছিয়া এ কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুর্বৃত্তের হানা, আলমিরার নথিপত্রে আগুন নকলায় ইয়াবা ও গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে একটি মহল ষড়যন্ত্র করার পাঁয়তারা করছে : ওয়ারেছ আলী মামুন বিএফএ জামালপুর নতুন কমিটিতে সভপতি চান মিয়া, সম্পাদক নবাব দেওয়ানগঞ্জে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত

ভাঙা বাঁশের সাঁকোর স্থানে পাকা সেতু চায় হরিপুরের ১৫ গ্রামের মানুষ

হরিপুরে মাদরদহের শাখা নদীতে ভাঙা বাঁশের সাঁকোর স্থানে পাকা সেতু চায় গ্রামবাসী। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার হরিপুর এলাকায় মাদরদহের শাখা নদীর উপর ভাঙা বাঁশের সাঁকোটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই সাঁকো দিয়ে নাংলা, কুলিয়া ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সেখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসী।

স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন সময় সরকারি ও বেসরকারি অর্থায়নে এলাকাবাসীর উদ্যোগে যাতায়াতের জন্য মাদরদহের শাখা নদীর উপর বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। ভাঙা বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হন ওই এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পারাপারের সময় অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাও ঘটে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করে। আবার অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে স্কুলেই যতে চায় না।

এতে তাদের পড়াশোনা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েন অভিভাবকেরা। শুকনো মৌসুমে সাঁকো দিয়ে সহজে পার হওয়া গেলেও বর্ষা মৌসুমে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও চরমে পৌঁছায়। সময় মতো নৌকা না পাওয়া আর নৌকাডুবির মতো দুর্ঘটনাও ঘটে ওই স্থানটিতে। আবার অনেক সময় বাঁশ ভেঙে বা পিছলে পানিতে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এসব এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করতে না পারাসহ ন্যায্য দাম পান না কৃষকেরা।

এদিকে ওই ১৫টি গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেয়ারও কোনো সুযোগ নেই। বাঁশের সাঁকোর কারণে সহজে অ্যাম্বুল্যান্স বা অন্য কোনো যানবাহন যেতে পারে না। রোগীকে কোলে বা কয়েকজন মিলে ভার সাজিয়ে নেয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না। এতে রোগী নিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় রোগীর স্বজনদের।

হরিপুর এলাকার জহুরুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, এখানে বাঁশের সাঁকো থাকায় আমরা ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতে পারি না। অনেক বিয়ের ঘর আসে। কিন্তু রাস্তা দেখে চলে যায়। বাঁশের সাঁকোর জন্য পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলায় যেতে হয়। ওই জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা দরকার। সেতু নির্মাণ করা হলে উপজেলায় যেতে তিন কিলোমিটার রাস্তা কমে যাবে। এতে যাতায়াত খরচ কমে যাওয়ার পাশাপাশি ভোগান্তিও কমবে সাধারণ মানুষদের।

হরিপুর পূর্বপাড়ার কৃষক মো. সুরুজ্জামান এ প্রতিবেদকে বলেন, আমরা এলাকার মানুষ মিলে চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাফেরা করি। এখানে পাকা সেতু না থাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করতে পারি না। আমাদের কৃষিপণ্য অনেক কম দামে বিক্রি করে দিতে হয়।

নাংলা ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. মাজহারুল ইসলাম মিস্টার এ প্রতিবেদককে বলেন, এখানে হাইস্কুল, মাদরাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। বর্ষাকালে এই সাঁকো দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা পার হতে পারে না। এটির কারণে তালতলা বাজারে যাওয়া যায় না। এছাড়া নৌকা দিয়ে পারাপার হওয়ার সময় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। অতি দ্রুত সেখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এলজিইডির মেলান্দহ উপজেলা প্রকৌশলী শুভাশীষ রায় বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, চিনিতোলা থেকে হরিপুরে যাওয়ার জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ৬০ মিটারের একটি পাকা সেতুর প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। সেটির কাজ চলমান আছে। দরপত্র আহ্বানের অনুমোদন পেলেই প্রকল্পটি নিয়ে কাজ শুরু করা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলকে দুঃসংবাদ দিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট, ক্ষেপলেন নেতানিয়াহু

ভাঙা বাঁশের সাঁকোর স্থানে পাকা সেতু চায় হরিপুরের ১৫ গ্রামের মানুষ

আপডেট সময় ০১:১৮:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার হরিপুর এলাকায় মাদরদহের শাখা নদীর উপর ভাঙা বাঁশের সাঁকোটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই সাঁকো দিয়ে নাংলা, কুলিয়া ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সেখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসী।

স্থানীয়রা জানান, বিভিন্ন সময় সরকারি ও বেসরকারি অর্থায়নে এলাকাবাসীর উদ্যোগে যাতায়াতের জন্য মাদরদহের শাখা নদীর উপর বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়। ভাঙা বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হন ওই এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পারাপারের সময় অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাও ঘটে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করে। আবার অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে স্কুলেই যতে চায় না।

এতে তাদের পড়াশোনা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েন অভিভাবকেরা। শুকনো মৌসুমে সাঁকো দিয়ে সহজে পার হওয়া গেলেও বর্ষা মৌসুমে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও চরমে পৌঁছায়। সময় মতো নৌকা না পাওয়া আর নৌকাডুবির মতো দুর্ঘটনাও ঘটে ওই স্থানটিতে। আবার অনেক সময় বাঁশ ভেঙে বা পিছলে পানিতে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এসব এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করতে না পারাসহ ন্যায্য দাম পান না কৃষকেরা।

এদিকে ওই ১৫টি গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেয়ারও কোনো সুযোগ নেই। বাঁশের সাঁকোর কারণে সহজে অ্যাম্বুল্যান্স বা অন্য কোনো যানবাহন যেতে পারে না। রোগীকে কোলে বা কয়েকজন মিলে ভার সাজিয়ে নেয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না। এতে রোগী নিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় রোগীর স্বজনদের।

হরিপুর এলাকার জহুরুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, এখানে বাঁশের সাঁকো থাকায় আমরা ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতে পারি না। অনেক বিয়ের ঘর আসে। কিন্তু রাস্তা দেখে চলে যায়। বাঁশের সাঁকোর জন্য পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলায় যেতে হয়। ওই জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা দরকার। সেতু নির্মাণ করা হলে উপজেলায় যেতে তিন কিলোমিটার রাস্তা কমে যাবে। এতে যাতায়াত খরচ কমে যাওয়ার পাশাপাশি ভোগান্তিও কমবে সাধারণ মানুষদের।

হরিপুর পূর্বপাড়ার কৃষক মো. সুরুজ্জামান এ প্রতিবেদকে বলেন, আমরা এলাকার মানুষ মিলে চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাফেরা করি। এখানে পাকা সেতু না থাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করতে পারি না। আমাদের কৃষিপণ্য অনেক কম দামে বিক্রি করে দিতে হয়।

নাংলা ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. মাজহারুল ইসলাম মিস্টার এ প্রতিবেদককে বলেন, এখানে হাইস্কুল, মাদরাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। বর্ষাকালে এই সাঁকো দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা পার হতে পারে না। এটির কারণে তালতলা বাজারে যাওয়া যায় না। এছাড়া নৌকা দিয়ে পারাপার হওয়ার সময় অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। অতি দ্রুত সেখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এলজিইডির মেলান্দহ উপজেলা প্রকৌশলী শুভাশীষ রায় বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, চিনিতোলা থেকে হরিপুরে যাওয়ার জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ৬০ মিটারের একটি পাকা সেতুর প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। সেটির কাজ চলমান আছে। দরপত্র আহ্বানের অনুমোদন পেলেই প্রকল্পটি নিয়ে কাজ শুরু করা হবে।